• ঢাকা
  • শুক্রবার, ১৫ই চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ, ২৯শে মার্চ, ২০২৪ ইং
ভাঙ্গায় কোচিং বানিজ্যতেই কোটিপতি আমানত মাষ্টার

ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলার ১নং সরকারি মডেল প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক আমানত মাষ্টার কোচিং বানিজ্যতেই কোটিপতি বনেছেন। ক্ষুদে শিক্ষার্থীদেরকে পুঁজি করে মাত্র ৬ বছর একই প্রতিষ্ঠানে সরকারি চাকুরির পাশাপাশি সততা কোচিং সেন্টারের মালিক হয়েছেন। পৌরসদরের কোর্টপাড় স্কুল টাইপের রুম ভাড়া নিয়ে প্রশাসনের নাকের ডগায় কোচিং বানিজ্য করছেন তিনি। ভোর হলেই ক্ষুদে শিক্ষার্থীদের   কলকাকলিতে মুখরতি হয়ে উঠে তার কোচিং সেন্টারটি। রুমের ভেতরে হাই বেঞ্চ পেতে ব্লাকবোর্ড দিয়ে স্কুলের মতই শত শত শিক্ষার্থীদের প্রতিদিন সকালে কোচিং করান আমানত মাষ্টার। প্রতি শিক্ষার্থীর  কাছ হতে ৭’শ টাকা থেকে শুরু করে ১ হাজার টাকা পর্যন্ত নিয়ে থাকেন তিনি।

মাস শেষ হলেই গড়ে কয়েক লক্ষ টাকা বাড়তি ইনকাম করে থাকেন সরকারি চাকুরির পাশাপাশি। মাত্র সাড়ে বার হাজার টাকা স্কেলে চাকুরি করেই তিনি পৌর সদরের মুনসেফকোর্ট সংলগ্ন এলাকায় বহুতল ভবন নিমার্ন করেছেন। ভবনের নাম দিয়েছেন টিচার্স কোয়াটার এবং তার ফ্লাট অন্যান্য শিক্ষকদের কাছে বিক্রিও করেন তিনি।

সরকারিভাবে কোচিং করা নিষেধ থাকলেও আমানত মাষ্টার এসব তোয়াক্কা না করেই কোচিং বানিজ্য করে যাচ্ছেন এবং ক্ষুদে শিক্ষার্থীদের পুঁজি করে অনৈতিক ভাবে হাতিয়ে নিচ্ছেন  প্রতি মাসে লাখ লাখ টাকা। অভিযোগ রয়েছে আমানত মাষ্টার জনৈক প্রভাবশালী সরকারি দলের নেতার সন্তানকে ফ্রি কোচিং করিয়ে এবং পরীক্ষার সময়ে তাকে  সরাসরি সাহায্য করে তার প্রিয় পাত্র হয়ে উঠেন। একই সাথে উপজেলা শিক্ষা অফিসের সাথে ইতিপুর্বে অনৈতিক সুবিধা দিয়ে ১নং মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দীর্ঘদিন চাকুরি করার সুবাদে বীরদর্পে কোচিং বানিজ্য করে যাচ্ছেন তিনি।

ভোর হতে সকাল ৯টা পর্যন্ত একটানা কোচিং করে এরপর স্কুলে গিয়ে শিক্ষার্থীদের ভাল মানের পাঠদান করা সম্ভব কিনা আমানত মাষ্টারের নিকট জানতে চাইলে তিনি বলেন, সারাদেশেই কোচিং বানিজ্য হচ্ছে। তাছাড়া ক্ষুদে শিক্ষার্থীদের  যদি অতিরিক্ত কোচিং না করানো হয় তবে তারা ভাল ফলাফল করতে পারবেনা। আমার কোচিং সেন্টারের সকল শিক্ষার্থীই ভাল ফলাফলের অধিকারি। এছাড়াও আমিতো কোন শিক্ষার্থীকে বাসা থেকে এনে জোর  করে কোচিং করাচ্ছি না, অভিভাবকেরাই তাদের সন্তানকে ভাল ফলাফলের আশায় আমার সততা কোচিং সেন্টারে তাদের সন্তানদের কোচিং করাচ্ছেন।

এ বিষয়ে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মুন্সি রুহুল আসলাম বলেন, কোচিং বানিজ্য সরকারি ভাবেই নিষিদ্ধ তারপরেও যদি কোন সরকারি চাকুরিজীবী শিক্ষক কোচিং বানিজ্যে লিপ্ত থাকেন তবে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্হা গ্রহন করা হবে। আমানত মাষ্টার দীর্ঘদিন একই প্রতিষ্ঠানে চাকুরির সুবাধে কোচিং ব্যবসায় সাফল্য পেয়েছে। তবে বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্হা  গ্রহন করা হবে।

অভিভাবকদের দাবি তাদের সন্তানদের কোচিং করতে না দিলে পরীক্ষার সময় সহ সারা বছরই শিক্ষার্থীদের  সাথে খারাপ আচরন করেন তিনি। অনেকটা নিরুপায় হয়েই সন্তানদের কোচিং করাতে বাধ্য হয় তারা, সরকার ও দুর্নীতি  দমন কমিশন যদি সঠিক সময়ে সঠিক পদক্ষেপ নিয়ে কোচিং বানিজ্যে লিপ্ত শিক্ষকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্হা  গ্রহন করত তবে  হয়তোবা  কোচিং বানিজ্য কিছুটা হলেও নিয়ন্ত্রনে আসত।

উল্লেখ্য, ভাঙ্গা কোর্টপাড়ে সততা কোচিং সেন্টারের মালিক আমানত মাষ্টার ও জিএম কোচিং সেন্টারের মালিক সরকারি শিক্ষক সঞ্জয় কুমার দে অনেকটা দুঃসাহসিকতার সহিতই ভাঙ্গায় কোচিং বানিজ্য করে যাচ্ছেন। ইতিপুর্বে সঞ্জয় কুমার দের জিএম কোচিং সেন্টার নিয়ে বেশ কয়েকটি পত্রিকায় রিপোর্ট প্রকাশ হলে হাতে গোনা কয়েকদিনের জন্য তা বন্ধ থাকলেও পুনরায় তার অদৃশ্য হাতের ইশারায় বীরদর্পে চালু হয়ে কোচিং বানিজ্য করে যাচ্ছেন তিনি।

এলাকাবাসির দাবি, দ্রুত সময়ের মধ্যে এসব কোচিং বানিজ্যর  সাথে লিপ্ত শিক্ষকদের বিরুদ্ধে প্রশাসন ব্যবস্হা গ্রহন করে শিক্ষার পরিবেশ ফিরিয়ে আনবেন এমনটাই প্রত্যাশা।

ফেসবুকে লাইক দিন

তারিখ অনুযায়ী খবর

মার্চ ২০২৪
শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
« ফেব্রুয়ারি    
 
১০১১১২১৩১৪১৫
১৬১৭১৮১৯২০২১২২
২৩২৪২৫২৬২৭২৮২৯
৩০৩১  
দুঃখিত! কপি/পেস্ট করা থেকে বিরত থাকুন।