কী কাণ্ড বলুন দেখি! এক দিকে প্রায় প্রতিদিন এই জার্নাল, সেই রিসার্চ পেপারে ছেপে বেরোচ্ছে মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ার খারাপ খারাপ দিকগুলোর কথা! আবার অন্য দিকে কি না পুরো ১৮০ ডিগ্রি ঘুরে গিয়ে নয়া সমীক্ষা দাবি করছে যে এ হেন সোশ্যাল মিডিয়ারই আছে মানসিক অবসাদ দূর করার ক্ষমতা!
এক গবেষক যা বলেন, অন্যে তার প্রতিবাদে সরব হয়ে থাকেন- এ তো আর নতুন কিছু নয়। পৃথিবীর বুকে এই পরস্পরের মতামতের ঠোকাঠুকি বহু দিন ধরেই চলছে, ভবিষ্যতেও চলবে। কথা হল, নয়া সমীক্ষা কিন্তু সোশ্যাল মিডিয়ার খারাপ দিকগুলোকে উড়িয়ে দেয়নি। জোর দিয়েছে শুধু তার বিশেষ এক শাখার উপরে।
ইউকে-র লিডস বিশ্ববিদ্যালয় আর পশ্চিম অস্ট্রেলিয়া পর্যটন বিভাগ যৌথ ভাবে এই যে নয়া সমীক্ষা চালিয়েছে, তার মোদ্দা কথা একটাই- জীবজন্তুর ভিডিও দেখলে মন ভালো থাকে, মানসিক অবসাদের পারদ এক ধাক্কায় নেমে আসে নিচে। আর মন ফুরফুরে হওয়ার পাশাপাশিই উদ্বেগ যায় কমে। পরিণামে উচ্চ রক্তচাপ, অস্বাভাবিক দ্রুত হৃদস্পন্দনের হার সব প্রশমিত হয়ে আসে, বসে যায় একেবারে খাপে খাপে, যেমনটি তাদের থাকার কথা আর কী!
খবর বলছে, ১৫ জন ছাত্রছাত্রী এবং ৪ জন বিশ্ববিদ্যালয়ের সদস্য- মোট এই ১৯ জন স্বেচ্ছাসেবী নিয়ে গবেষণাটি শুরু হয়েছিল ২০১৯ সালের ডিসেম্বর মাসে। ওই সময়ে স্কুল-কলেজগুলোয় শীতের ছুটি থাকে, তাই সহজেই ছাত্রছাত্রীদের কাছ থেকে চেয়ে নেওয়া গিয়েছিল অনেকটা সময়। তার পর তাদের বসিয়ে দেওয়া হয়েছিল ইউটিউব-এ জীবজন্তুর নানা মজার ভিডিও দেখার কাজে। ভিডিও দেখার আগে মেপে নেওয়া হয়েছিল মনখারাপ, রক্তচাপ, হৃদস্পন্দনের হার।
অবাক হয়ে লক্ষ্য করেন গবেষকরা- ভিডিও দেখার তিরিশ মিনিটের মাথায় সব সমস্যার অনেকটা সমাধান হয়েছে। উদ্বেগ কমেছে ৩৫% আর হৃদস্পন্দনের অস্বাভাবিক দ্রুত হার কমেছে ৬.৫%! রক্তচাপও নেমে এসেছে তার আদর্শ স্তরে!
তা হলে আপনি কী ঠিক করলেন? সোশ্যাল মিডিয়ায় থাকলে ফেসবুক, ট্যুইটার, ইনস্টাগ্রাম এড়িয়ে সোজা দ্বারস্থ হবেন ইউটিউব-এর? আর রাতে খানকয়েক জীবজন্তুর মজাদার ভিডিও দেখে কমিয়ে ফেলবেন সারা দিনে জড়ো হওয়া সব অবসাদ? চেষ্টা করতে তো আর ক্ষতি নেই, তাই না?