চরভদ্রাসন (ফরিদপুর) প্রতিনিধি ঃ-
ফরিদপুরের চরভদ্রাসন উপজেলায় ধর্ষণ, গর্ভপাত ও নগ্নছবি ভাইরাল ঘটনার শিকার কলেজ ছাত্রীর অসুস্থ্য পিতার চাকুরী চ্যুতির জন্য সম্প্রতী ধর্ষকগোষ্ঠী চত্রান্তে মেতে ওঠেছে বলে অভিযোগ ভুক্তভোগী পরিবারের। উক্ত কলেজ ছাত্রীর পিতা উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসের ৪র্থ শ্রেনীর একজন অসুস্থ্য কর্মচারী। তিনি মাঝে মধ্যে ছুটি নিয়ে চিকিৎসাধীন থাকেন। আর এই সুবাদে ধর্ষণ মামলার ৪ নং আসামী বিমল চন্দ্র বিশ্বাস (৩৮)প্রতিহিংসাবশত কলেজ ছাত্রীর অসুস্থ্য পিতার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার, জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার ও জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন। একই সাথে আসামী বিমল চন্দ্র বিশ্বাস স্থানীয় ধর্ষক সমর্থক গোষ্ঠীর দু’একজন নামধারী সাংবাদিক ম্যানেজ করে তাদের দিয়ে অসুস্থ্য কর্মচারীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য সরকারি কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের খুঁচিয়ে বেড়াচ্ছে বলে অভিযোগ ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারের।
শুক্রবার উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার দেওয়ান জাহাঙ্গীর মুঠোফোনে জানান, “আমার অফিসের একজন অসুস্থ্য কর্মচারীর মেয়ে নির্যাতনের শিকার হয়ে মামলা করেছে। সেই ধর্ষণ মামলার ৪নং আসামী বিমল চন্দ্র বিশ্বাস অফিসে নিয়মিত ডিউটি না করার দায় দিয়ে কর্মচারীর বিরুদ্ধে একটি অভিযোগ পত্র দিয়ে গেছে। আমি তা উর্দ্ধতন দপ্তরে ফরওয়ার্ড করেছি। এছাড়া তিনি আরও জানান, স্থানীয় এক সাংবাদিক নির্যাতিত কলেজ ছাত্রীর অসুস্থ্য পিতার বিরুদ্ধে ‘দৈনিক ভোরের সময়’ নামক একটি পত্রিকায় সংবাদও প্রকাশ করেছেন”।
একই দিন উপজেলা চেয়ারম্যান আলহাজ্ব মোঃ কাউছার বলেন, “মাত্র কয়েক দিন আগে, ওই কলেজ ছাত্রীর নির্যাতনের সংবাদ বিভিন্ন পত্রিকা ও অনলাইন পোর্টালে প্রকাশ হওয়ার পর জেলা প্রশাসক মহোদয় ছাত্রীকে তার অফিসে ডেকে নিয়ে তাকে আইনী সহায়তা দেওয়ার পূর্ণ আশ্বাস দিয়েছেন এবং তার লেখাপড়া শেষে চাকুরীর ব্যবস্থা করা হবে বলেও প্রতিশ্রæতি দিয়েছেন”।
উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান মোতালেব হোসেন মোল্যা বলেন, “কলেজ ছাত্রীর পিতা একজন অসুস্থ্য সরকারি কর্মচারী, তার বিষয়টি দেখার দায়িত্ব সংশ্লিষ্ট ডিপার্টমেন্টের। সে ব্যপারে একজন ধর্ষণ মামলার আসামী নাক গলানো এখতেয়ার রাখেন না”।
নির্যাতিত কলেজ ছাত্রীর অভিযোগ, উপজেলা পরিষদের পার্শ্ববতী এলাকায় অর্থবিত্তে প্রভাবশালী ধর্ষকগোষ্ঠীর বসবাস। ২০২২ সালে ১৭ ডিসেম্বর প্রতিবেশী গৌরাঙ্গ বিশ্বাসের ছেলে হৃদয় বিশ্বাস বাড়ীর পাশে নির্জন বাগানে নিয়ে কলেজ ছাত্রীকে ধর্ষণ করে নগ্ন ছবি তুলে রাখে। পরবর্তিতে কলেজ ছাত্রীকে বøাক মেইল করে একাধিকবার ধর্ষন করার ফলে সে গর্ভবতি হয়ে পড়লে ধর্ষকের পরিবার তাকে বৌ করার প্রলোভন দিয়ে গর্ভপাত ঘটায় এবং ছাত্রীর নগ্ন ছবি হৃদয় বিশ্বাস ভাইরাল করে দেয় বলে অভিযোগ। এ ঘটনায় নির্যাতিত কলেজ ছাত্রী বাদী হয়ে ধর্ষক পরিবারের চারজনকে আসামী করে চরভদ্রাসন থানায় একটি মামলা করেন। মামলা নং-০৫, তাং-১১/৪/২০২৩খ্রি.। এ মামলায় সব ক’জন আসামী বর্তমানে জামিনে রয়েছেন বলে জানা যায়।
কলেজ ছাত্রীর পারিবারিক সূত্র জানায়, ইদানিং ধর্ষণ মামলার আসামীরা জামিনে থেকে এলাকায় দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। তারা স্থানীয় কিছু লোকজন নিজেদের দলে ভিড়িয়ে কলেজ ছাত্রীর অসুস্থ্য পিতাকে চাকুরী চ্যুতি করার হীন ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছে। কলেজ ছাত্রীর পিতা অফিসে ডিউটি করে না বলে দায় দিয়ে তারা বিভিন্ন অফিসে অভিযোগ পত্র দিয়েছে। এছাড়া স্থানীয় দু’একজন নামধারী সাংবাদিকও ধর্ষকরা তাদের কাছে নিয়ে দল ভারী করে চলেছে বলে শুক্রবার কলেজ ছাত্রী হতাশা ব্যাক্ত করেছেন।
মোঃ মেজবাহ উদ্দিন
চরভদ্রাসন, ফরিদপুর
তাং-০১/০৯/২০২৩