আজকে কাফনের কাপড় পড়েই পবিত্র ঈদ-উল-আযহার নামাজ আদায় করেছে অনশনরত শিক্ষানবিশ আইনজীবীরা। ঈদের আনন্দ যেন ম্লান হয়ে গেছে ভূক্তভোগীদের দাবীর কাছে। করোনার ভয়াল থাবা,রোদ-বৃষ্টি উপেক্ষা করেই চলছে অনশন। সবাই যখন নিজ নিজ বাড়িতে পরিবার-পরিজন নিয়ে অানন্দে ঈদ উদযাপন করছেন। ঠিক সেই সময়েই অবহেলিত শিক্ষানবিশ আইনজীবীরা ঈদের আনন্দ ত্যাগ করে ন্যায্য দাবী আদায়ে কাফনের কাপড় পড়ে জীবন্ত লাশ হয়ে রাজপথে অনশন করছে। আজ (১ আগষ্ট) শনিবার ঢাকার জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে অনশনের ২৬ তম দিন অতিবাহিত করছে ভূক্তভোগীরা।
মানবতার মমতা আজ কোথায় হারিয়ে গেল? সন্তানদের রাস্তায় রেখে কি করে বাসায় আনন্দে ঈদ উদযাপন করে অবিভাকরা? এ কেমন অবিভাবক? একটুও কি মায়া জন্মায় না?এসব প্রশ্ন অনেকের।
আহ্বায়কদের সফল নেতৃত্বে,আপ্রাণ চেষ্টায় ও অক্লান্ত পরিশ্রমে এগিয়ে চলছে ১৩ হাজার শিক্ষানবিশ আইনজীবীর ন্যায্য দাবী আদায়ের জন্য পালিত হচ্ছে চলমান কর্মসূচী। কর্মসূচীর অংশ হিসেবে তারা গত ৭ জুলাই ঢাকার বার কাউন্সিলের সামনে অবস্থান কর্মসূচী শুরু করে। একই দিন বিকেলে আমরণ অনশণ শুরু করে সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গনে। সুপ্রিম কোর্টে আমরণ অনশনের পর আবার বার কাউন্সিলের সামনে চলে অনশন কর্মসুচী। বর্তমানে ঢাকার জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে প্রতিদিন অনশন কর্মসূচী চলছে।
জানা যায়, শিক্ষানবিশ আইনজীবীদের আইন পেশায় তালিকাভূক্তির দীর্ঘ পরীক্ষা জট ও বর্তমান উদ্ভুত করোনা ভাইরাস জনিত কারনে তাঁদের পরীক্ষা অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। বার কাউন্সিলের নিয়ম অনুসারে বছরে দুইটি আইনজীবী তালিকাভূক্তির কথা থাকলেও তা সঠিকভাবে পালন হচ্ছে না। এমনকি মহামান্য হাইকোর্টের নির্দেশনা অনুসারে প্রতি ক্যালেন্ডার ইয়ারে একটা পরীক্ষা সমাপ্তের কথা থাকলেও সেটাও সঠিকভাবে প্রতিপালন করা হচ্ছে না। ফলে এ শিক্ষানবিশ আইনজীবীদের নেমে এসেছে দূর্ভোগ। ফলে প্রিলি পাশকৃত শিক্ষানবিশ আইনজীবীদের রিটেন ভাইভা মওকুফ করে গেজেটের মাধ্যমে আইনজীবী অন্তর্ভূক্তির জন্য চলছে এ কর্মসূচী। ভূক্তভোগীদের দাবী আদায় না হওয়া পর্যন্ত কর্মসূচী পালন সহ আগামীতে ছাত্র-অভিভাবক মহাসমাবেশের ডাক দিবেন বলে জানা যায়।
শিক্ষানবিশ আইনজীবীদের দাবী- যেহেতু বর্তমান করোনা পরিস্থিতে ২০১৭ ও ২০২০ সালের এমসিকিউ উত্তীর্নদের রিটেন ভাইভা পরিক্ষা নেয়া সম্ভব হচ্ছে না। কবে করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে সেটা কেউ জানে না। তাই প্রিলি পাশকৃত ২০১৭ এবং ২০২০ সালের শিক্ষানবিশ আইনজীবীদের গেজেটের মাধ্যমে সনদ দেওয়া হোক।
পরিষদের আহ্বায়ক ফজলে রাব্বি স্মরন বলেন, মানবিক আন্দোলনের অংশ হিসেবে প্রতীকি অনশনের মাধ্যমে মহামান্য রাষ্ট্রপতি, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী,
বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের কার্যনির্বাহী কমিটির দৃষ্টি আর্কষনের সম্মিলিত চেষ্টা করে যাচ্ছি। প্রায় ৯০,০০০জন ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্য থেকে মাত্র ১২,৮৭৮ জন প্রিলিমিনারী উত্তীর্ণ শিক্ষানবিশ আইনজীবিদের অবশিষ্ট পরীক্ষা মওকুফ করে সরাসরি তালিকাভুক্তির দাবীতে বিগত ২৬দিন ধরে একটানা কর্মসূচী পালন করে আসছি।
উল্লেখ্য,এই শিক্ষানবিশ আইনজীবীরা সারা দেশে গেজেটের মাধ্যমে সনদের দাবীতে একযোগে গত ৯জুনে দেশের প্রতিটি জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করে ছিলেন। এছাড়া একই দাবীতে গত ৩০ জুন ঢাকা প্রেসক্লাবে প্রেস কনফারেন্স করেন ও সারাদেশে জেলা ভিত্তিক মানববন্ধন কর্মসূচী পালন করেছিলেন।