ক’দিন আগের কথা। পবিত্র মাহে রমজানের প্রথম রোজায় করোনা ভাইরাসের সংকটে থাকা হতদরিদ্র, গরীব, দুস্থ ও অসহায় মানুষের মাঝে খাদ্যসামগ্রী বিতরণ করেন আসাদুল ইসলাম আসাদ। এলাকার অসহায় মানুষের কথা ভেবে ঢাকা থেকে ছুটে আসেন গ্রামের বাড়িতে। ব্যক্তিগত উদ্যোগে খাদ্য সংকটে থাকা লোকজনের মাঝে চাল, ডাল, তেল, মিষ্টি কুমড়াসহ বিভিন্ন সামগ্রী বিতরণ করেন।
আসাদুল ইসলাম আসাদ রাজশাহীর বাগমারা উপজেলার ঝিকরা ইউনিয়নে ঝিকরা গ্রামের মজিবর রহমানের ছেলে। দুই ভাইয়ের মধ্যে ছোট তিনি। আসাদুল ইসলাম প্রায় ৭-৮ বছর ধরে ঢাকা সুপ্রিম কোর্টের লাইব্রেরীয়ান শাখার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে কর্মরত ছিলেন। তিনি এক ছেলে সন্তান নিয়ে সপরিবারে ঢাকার রায়েরবাগে থাকতেন। এলাকায় খাদ্যসামগ্রী বিতরণ শেষে কয়েক দিনের মধ্যে ঢাকায় ফিরেন আসাদুল ইসলাম।
পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, গত ঈদের আগে থেকে শরীরে জ্বর জ্বর ভাব ছিল তার। ওষুধ সেবনের ফলে সুস্থ হয়ে উঠেন তিনি। গত ৩-৪দিন আগে আবারও তার শরীরে জ্বরের মাত্রা বৃদ্ধি পায়। করোনার কারণে হাসপাতালে সেভাবে যাননি তিনি। সুস্থ হওয়ার আশায় বাসাতেই প্রাথমিক চিকিৎসা নিতেন। শরীরে জ্বর থাকার পরেও হঠাৎ করেই ৭-৮ টা কলা খেয়ে ফেলেন তিনি। এর ফলে তার শারীরিক অবস্থার আরো অবনতি দেখা দেয়। শ্বাস কষ্ট শুরু হয় আসাদুলের। এক পর্যায়ে কথা বলার শক্তি হারিয়ে ফেলেন। অফিসের গাড়িতে করে আজ সোমবার (১ জুন) সকালে আসাদুলকে নিয়ে যাওয়া হয় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে।
চিকিৎসা শুরুর আগেই মেডিকেলের বারান্দায় শেষনিঃশ্বাস ত্যাগ করেন আসাদুল ইসলাম। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল প্রায় ৪০ বছর। করোনাভাইরাসের উপসর্গ থাকতে পারে বলে তার লাশ ঢাকাতেই দাফনের অনুমতি দেয় পরিবারের লোকজন। আসাদুল ইসলামের পিতা ঝিকরা ইউনিয়নের ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি।