• ঢাকা
  • শুক্রবার, ৬ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৯শে এপ্রিল, ২০২৪ ইং
কেন ডিভোর্স – মোনালিসা মুন্নী

সেই পুরুষটি ই কিন্তু নারীর ভালবাসার মানুষ হয়ে ওঠে,যে অনেক ভিড়ের মাঝেও নারীটির হাতটি ধরে নিরাপদ স্হানে পৌছে দেয়…

সেই পুরুষটিই কিন্তু নারীর প্রিয় হয়ে ওঠে,যে বাচালমুক্ত সততার অধিকারী…

ঐ পুরুষটিই কিন্তু সর্ব নারীর কাঙ্খিত পুরুষ। যার মাঝে থাকে চরম দায়িত্ববোধ ও কর্মক্ষমতায়নের সদইচ্ছা…

সসন্মানে আগলে রাখতে চাওয়া ঐ পুরুষটিই কিন্তু হয় নারীর স্বপ্নময় পুরুষ। চোখ বন্ধ করে নিশ্চিন্ত মননে যার কাধে মাথা রেখে পৌছে যাওয়া যায় জীবনের শেষ অচিন্তপুরে।

# তদরুপ নারীর প্রেম, ভালবাসা,আদর, যত্নই ধরে রাখতে পারে একটা পুরুষের, পুরুষত্বতা ও কর্মক্ষমতার দ্রুতগতিতা।

মননশীল, সংসারকামী নারীই হয় সব পুরুষের কাঙ্খিত রমনী। নারীর লাবন্যময়তার পাশাপাশি পুরুষ চায় স্ত্রীটির সহনশীলতা,ধর্য্য,সততা,রুচি ও ম্যানেজ ক্ষমতার গুনাগুন।

মহান আল্লাহ্পাক বলেছেন, যদিও আমার তরফ থেকে জায়েজ ও বৈধ করা একটা জিনিসকে আমি ঘৃনা করি আর তা হচ্ছে…

নারী-পুরুষের বিবাহ বিচ্ছেদ…মানে তালাক।

জন্ম পরবর্তী সময় থেকে মানুষের চাহিদা থাকে সীমাহীন।

যতবড় স্টাটাস…যুগ ও ভোগ বিলাসিতায় ততই যেন তারতম্যের

বিশালতা। আর এই চাহিদার মাঝে যে নিষ্ঠুর মানষিক প্রবনতা রয়েছে তা হচ্ছে স্বার্থপরতা। এই স্বার্থপরতা যে মানুষকে কতটা নিষ্ঠুর,লোভী ও আত্মকেন্দ্রিক করতে পারে তা বর্তমান সমাজের কিছু দূর্ঘটনাগুলোর দিকে তাকালেই অনুমিত হওয়া যায়।

কিন্তু নিজ স্বার্থকেন্দ্রিক পরবর্তী সুখ…কে কতটা পেয়ে থাকে তা আমার জানা নেই।

পুরুষকে বলছি,যৌতুক লোভীতায় নয় কিংবা শিক্ষিত চাকুরীজীবি পাত্রীর টাকার লোভেও নয়। একজন নারীকে তুমি বিয়ে করে তার সম্পূর্ণ দায়িত্বটুকুন কাধে নাও ভালবাসার সাথে সন্মান প্রদর্শনের মাধ্যমে। দেখ,সমাজ ও পরিবারের কাছে তোমার মর্যাদা ব্যাক্তিত্ববান পুরুষের পরিচয়েই হবে তখন পরিচিত। আর ঐ নারীটি তোমার ব্যাক্তিত্বকে অনুভব করে,ভালোবেসে সন্মানের সাথে তোমার সংসারটি আকড়ে তোমায় বানাবে পবিত্র কিছু ফুটফুটে সন্তানের জনক। এর থেকে একটা সুস্হ মানুষের জীবনে বড় কিছু আকাঙ্খা থাকতে পারে বলে আমার মনে হয় না।

দুটি মানুষের জীবন সংসারে হাজার ঝড়ের পরেও জীবনের অনেক পাওয়া-না পাওয়ার বিসর্জনের মাঝেও সংসারের খুটিটাকে দু’জনে মিলে সজোরে আটকে সন্তানদের সুখ ও সমাজে তাদের সন্মানের সাথে প্রতিষ্ঠিত করতে পারা ঐসব নারী-পুরুষের মুখগুলোই কিন্তু আমার কাছে সব থেকে সন্মানিত মুখ বলে মনে হয়।

একটা জীবনে সব জৌলুসতা,ভোগ,সেক্স পাওয়ার নাম কিন্তু সর্থক জীবন নয়! বরং আমি নিজের জীবন ও ভাগ্যের সাথে কতটুকুন এডজাস্ট ও সেকরিফাইজ করে সন্মানের সাথে মাথা উঁচু করে সমাজ ও পরিবারের কাছে থাকতে পেরেছি সেটার নামই জীবন নামের স্বার্থকতা বলে আমার মনে হয়।

নারী তোমায় বলছি, সময় ভেদে ভেদে প্রেমিক ও সংসার-স্বামী পালটে কতটুকুন সন্মানের সাথে তুমি সুখী হতে পেরেছো..?

অপারগ,গরীব বা মধ্যবিত্ত স্বামী ছেড়ে দামী শপিংমলে মাসে মাসে ব্যাগ ভরা শপিং করতে পারা ও বিউটি পার্লারগুলোতে রং মেখে নিজের বডি ও মুখের ডিফেক্টগুলোকে মেকাপের আড়ালে ঢেকে ধনী পুরুষদের কাছে নিজেকে পেজেন্ট করাই যদি সর্ব সুখ বলে মনে করো তবে তুমি কেন ডিপ্রেশনে থাকো..? কেন আত্মহননের পথ বেছে নাও..?

সব পুরুষই কিন্তু তোমায় ছুয়ে পোষাক খুলবে। কিন্তু মানুষিক শান্তির তীপ্ততা ঐ পুরুষটিই কিন্তু তোমায় প্রথম দিয়েছিলো…

যে তোমায় বিশ্বাসের সাথে ধর্মীয় রীতিতে একটা সংসার দিয়েছিলো। সমাজ স্বীকৃত একটা,দুটো সন্তান দিয়েছিলো। হয়তো তার কাছ থেকে তোমার জীবনের পাওয়াগুলো অনেকটা কম ছিলো কিন্তু যে স্বীকৃতি ও সন্মান সে তোমায় প্রথম দিয়েছিলো,তেমনটা তুমি আর কোন পুরুষের কাছ থেকে পাবে কি..?

যে সময়টাতে তুমি বিউটিপার্লারে রং মেখে বাহিরের পুরুষ মাতাচ্ছো…ঠিক সেই সেইম সময়টাতে তোমার মত একই বয়সী অন্য নারীটি হয়তো তার স্বামীর সংসারটি সামলে তার আদরের সন্তানটিকে প্রাইভেট টিউটরের বদলে নিজে পড়াচ্ছে। ভেবে দেখ, দুটি নারীর মাঝে আমাদের এই পরিবারকেদ্রিক সভ্য সমাজের কাছে সন্মানটি কার বেশী..?

পাল্লায় ওজনের পরিমানটিও বা বেশী কার..?

ঐ রং মাখা আর্টিফিশিয়াল তোমার রুপের,না সংসার ধর্ম আকড়ে জীবনের কাছে সেকরিফাইজ করা ঐ সাধারন নারীটির..?

ভেবে দেখ,মানুষিক শান্তিটি কোন আত্নাটির বেশী..?

বাহিরের পুরুষের মনোরঞ্জন করা ঐ নারী আত্মাটির, নাকি সন্তানের মুখটি কাপড়ের আচলে পরিস্কার করে স্বামী ফিরে আসা অপেক্ষমান নারীটির..?

দিবস ভেদে ভেদে হাটু গেড়ে গোলাপের সাথে হীরের আংটি পাওয়া বা নারীটির রুপের মোহতে বিলিনতাই কিন্তু জীবনের চুড়ান্ত সুখ নয়।  চুড়ান্ত সুখ আসে তখনই,যখন একটা সময়ে কিছু না থাকা দুটি মানুষ পাওয়া না পাওয়ার হিসেবহীনতায় কাটিয়ে দেয় একই ছাদের নিচটাতে তাদের সম্পূর্ণ জীবন। আসলে কোনকিছুর বিনিময়েই সুখ কিনতে পাওয়া যায়না। সুখ তখনই ঐ জীবনগুলিতে এসে ধরা দেয়,যে জীবনগুলিতে থাকে স্বল্প চাহিদার সেকরিফাইজিং মনোভাব। আর মানুষের মনের স্বার্থহীনতাই পারে মানুষিক ঐ সুখটাকে একটু সুবুদ্ধি দ্বারা অতি সহজে কিনে নিতে।

এর ফলাফলে সমাজ,সংসারে প্রতিষ্ঠা হবে আপনার আত্মসম্মান। সাথে হাসি,আনন্দ ও গর্ববোধ বজায় থাকবে আপনার সন্তানগুলোর মুখখানিতে।

বাবা-মায়ের সেপারেশনে সন্তানগুলোর মনে খারাপ প্রভাব যে কি পরিমান বিস্তার থেকে বিস্তার লাভ করতে পারে তা ঐ’সব হতভাগা সন্তানরাই অমন কষ্টের অনুভব করতে পারে।

ওরা যে কি পরিমান অসহায় হয়ে পড়ে তা ঐসব দূর্ভাগা সন্তান গুলোর মুখপানে তাকালেই অনুভব করা যায়।

আপনার একটু সেকরিফাইজের মাধ্যমে অন্তত আপনার সন্তানকে কেউ আঙ্গুল তুলে বলতে পারবে না,তুই ব্রোকেন ফেমিলির সন্তান..!

প্লিজ জীবনের কাছে,সমাজের কাছে,পরিবারের কাছে জেদের বশে অন্তত হেরে যাবেন না। আপনার প্রিয় সন্তানদের ভাবনা আপনারই কাছে। জীবন একটাই..। এ সংসারে না পেলেন আপনার পাওনা অনেক কিছুই কিন্তু নতুন কিছু পাওয়ার স্বপ্নে না মেতে,যা পেয়েছেন তা-ই শক্ত হাতে আঁকড়ে বাঁচুন বাকি জীবনখানিতে। জীবনের একটা সময়ে এসে দেখবেন ছোট ছোট পাওনা সুখগুলি বিশাল আকৃতি ধারন করে বসে আছে,আপনার জীবনে সন্মানের সাথে মেলে …..

দুটি হৃদয় এক থাকিতে না-ই পারো যদি একা…

তবে কেন জন্ম দাও অন্য হৃদয়ের বাসা…

হৃদয় বড় অনুভূতির ক্রন্দনে থাকে ঠাসা…

অনুভূতির হৃদয় তোমার নেই কো শুধু একা…

 

ভালবাসা দিবস বলে কিছু নেই। যুগ ও যুগের বন্ধনের কেয়ারিং,

দায়িত্ববোধ আর সেকরিফাইজের তীব্র মায়াই হচ্ছে আমাদের

প্রতিদিনের ভরসা ও ভালোবাসা….

 

  –   লেখক (মোনালিসা মুন্নী)

ফেসবুকে লাইক দিন

তারিখ অনুযায়ী খবর

এপ্রিল ২০২৪
শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
« মার্চ    
 
১০১১১২
১৩১৪১৫১৬১৭১৮১৯
২০২১২২২৩২৪২৫২৬
২৭২৮২৯৩০  
দুঃখিত! কপি/পেস্ট করা থেকে বিরত থাকুন।