নানা জল্পনা, কল্পনার অবসান ঘটিয়ে পুলিশের জালে ধরা পড়েছে আন্ডার ওয়াল্ডের ফরিদপুরের ক্যাডার গোলাম আজাদ। বৃহস্পতিবার দুপুরে শহরের কোর্টপাড় এলাকা থেকে তাকে আটক করে পুলিশ প্রশাসন। দুপুরেই তাকে জেলা হাজতে প্রেরণ করা হয় আইনগত প্রক্রিয়ায়। আজাদ গ্রেফতারের খবরে ফরিদপুরের ডজনখানেক পেশাদার অপরাধী শহর থেকে গা ঢাকা দেয় বলে খবর পাওয়া যায়। ফরিদপুর জেলা আ.লীগের সভাপতি এ্যাডঃ সুবল চন্দ্র সাহা’র বাড়ীতে হামলা ও অগ্নি সংযোগের অন্যতম নেতৃত্ব দানকারী সে। অন্যদিকে আজাদ গ্রুপের কাছে ক্ষতিগ্রস্থ ব্যক্তি ও পরিবার সংশ্লিষ্ট দপ্তরের কর্তা ব্যক্তিদের কাছে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছে।
বিএনপি-জামায়াতের ক্লিন মিশনের নেতা ছিল আজাদ: গোলাম আজাদ ফরিদপুরের বহুল আলোচিত একটি নাম! ফ্রিডম পাটির রাজনীতি দিয়েই যাত্রা শুরু তার। পরবর্তীতে বাসস্ট্যান্ড দখলে নিয়ন্ত্রণে রাখতে জড়িয়ে পড়েন জাতীয় পার্টির রাজনীতিতে। পরে সাবেক মন্ত্রী, কেন্দ্রীয় বিএনপি’র ভাইস চেয়ারম্যান চৌধুরী কামাল ইবনে ইউসুফের হাত ধরে প্রবেশ করেন বিএনপির রাজনীতিতে। সেখানে তিনি বিএনপি’র চিকেন গ্রুপ (ক্লিন মিশন) সদস্য হিসেবে সক্রিয় ছিলেন। বিভিন্ন নির্বাচন ও সংগঠন কুক্ষিগত করার কাজে আজাদ গ্রুপ সর্বদা নিয়োজিত ছিল।
কিছুদিন তিনি ফাঁসির দন্ডপ্রাপ্ত রাজাকার আলী আহসান মুজাহিদেরও ক্যাডার ছিলেন। ওই সময়ে গোলাম আজাদ শহরের আব্দুল আলী সড়ক সংলগ্ন ফরিদপুর-বরিশাল মহাসড়কে ফরিদপুর মেডিকেলের সামনে আওয়ামীলীগ নির্মিত ‘শেখ হাসিনা তোরণ’ ভেঙে ও আগুনে পুড়িয়ে দিয়েছিলেন।
ফরিদপুর বাস স্ট্যান্ড রাজনীতিতে নিজেকে প্রতিষ্ঠা করতে তিনি আওয়ামীলীগের এক নেতার ঘনিষ্ঠ হন। আওয়ামীলীগ নেতা মোকাররম মিয়া বাবু ও ছাত্রলীগ নেতা সত্যজিত মুখার্জিকে খোন্দকার মোশাররফের কাছ থেকে সরিয়ে দেওয়ার পর বরকত-রুবেল চক্র তাকে আওয়ামীলীগে প্রবেশের সুযোগ করে দেয় শর্ত সাপেক্ষে। শর্ত থাকে রাজনীতিতে তাদের নীতির বাইরে যেতে পারবে না। শর্ত মেনে কাজ করতে থাকে সে। আন্তর্জাতিক আইএস কেন্দ্রিক রাজনীতিতে রুবেল-বরকতের বড় ভাইয়েরা আজাদের কাজে সন্তুষ্ট হয়ে আজাদের এক পুত্রকে কুষ্টিয়া ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্কলারশীপ পাইয়ে জার্মানী পাঠায়। অন্য দিকে রুবেল-বরকতের বিশ্বস্তজন হওয়ায় আফসানা মঞ্জিলে তার বিশ্বস্ততা বাড়ে। মুরিদ হয়ে পড়েন হুজুরের। সর্বশেষ ফরিদপুর জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি এডভোকেট সুবল চন্দ্র সাহার বাড়িতে হামলার ঘটনায় অন্যতম নেতৃত্বের ভূমিকায় ছিলেন তিনি।
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ফরিদপুর জেলা শাখার সভাপতি এ্যাডঃ সুবল চন্দ্র সাহা বলেন, আমার বাড়ীতে নির্মম যে হামলার ঘটনা ঘটিয়েছিল আজাদ তার অন্যতম একজন। দেওয়াল টপকিয়ে ওর নেতৃত্বেই হামলা করেছিল সন্ত্রাসীরা। ও ভয়ঙ্কর প্রকৃতির লোক। বিএনপি-জামায়াতের এজেন্ডা বাস্তবায়নই ছিল তার কাজ। আমি দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করি।
অন্যদিকে আজাদের পরিবার বলেন, ফরিদপুরে শ্রমিক রাজনীতিতে সে ২০ বছর জড়িত। আমাদের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র হচ্ছে। আমরা আইনগত প্রক্রিযায় লড়ে যাবো।