ঠাকুরগাঁয়ে জঙ্গী সন্দেহে ৩ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ ৷ গতকাল মঙ্গলবার ভোররাতে সদর উপজেলার গড়েয়া ইউনিয়নের খামার ভোপলা নামক স্থানে পুলিশের বিশেষ অভিযানে উক্ত তিন জন আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয় ৷
এই ঘটনায় মঙ্গলবার ঠাকুরগাঁও সদর থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে চারজনকে সহ করে আরো অজ্ঞাত ১২০ জন কে আসামি করে মামলা হয়েছে৷
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার খামার ভোপলা গ্রামের শফিকুল ইসলাম, নাজমুল ইসলাম সোহেল রানা৷
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, গোয়েন্দা সংস্থার গোপন তথ্যের ভিত্তিতে ঠাকুরগাঁও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সার্কেল আবু তাহের মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ ও ঠাকুরগাঁও সদর থানার ওসি তানভীরুল ইসলাম এর নেতৃত্বে একটি দল ঠাকুরগাঁয়ে জঙ্গী তৎপরতা বৃদ্ধি পেয়েছে এবং কার্যক্রম চলছে মর্মে তদন্ত শুরু করে সম্প্রতি৷
এরই ধারাবাহিকতায় মঙ্গলবার ভোররাতে পুলিশ ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার গড়েয়া ইউনিয়নের খামার ভোপলা নামক স্থানে প্রযুক্তি ব্যবহার করে শফিকুল ইসলাম নামে এক সন্দেহভাজন জঙ্গিকে গ্রেফতার করে৷
পরে তার দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে পুলিশ নাজমুল হোসেন ও রুবেল রানা নামে আরও দুজনকে জঙ্গী কর্মকাণ্ডে সম্পৃক্তার অভিযোগে গ্রেপ্তার করে পুলিশ৷ এ সময় পুলিশ গ্রেফতারকৃতদের কাছে দুটি এন্ড্রয়েড মোবাইল ও কিছু জিহাদি উদ্ধার করে৷
এ ঘটনায় মঙ্গলবার বিকেলে ঠাকুরগাঁও পুলিশ সুপারের সম্মেলনকক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনে আয়োজন করে পুলিশ প্রশাসন৷
উক্ত সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন ঠাকুরগাঁয়ের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোঃ কামাল হোসেন৷
বক্তব্যে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বলেন গ্রেফতারকৃত তিন জন আমি মুসলিম এবং লাল মিয়া নামক দুইটি ফেসবুক আইডি থেকে জঙ্গী তৎপরতা ও কার্যক্রম চালিয়ে আসছে দীর্ঘদিন থেকে। তাছাড়া তারা উক্ত ফেসবুক আইডি গুলো থেকে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীসহ সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা মন্ত্রী-এমপিসহ বিভিন্ন ভিআইপি ব্যক্তিদের ছবি ব্যঙ্গ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দিচ্ছে৷ অন্যদিকে চুয়াডাঙ্গার জনৈক সাংবাদিক ইলিয়াস আলী সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আমাদের দেশের জাতীয় সংগীত কে অবমাননা করে একটি পোস্ট দেয় উক্ত পোস্টটি গ্রেফতারকৃত তিন জন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দিয়েছে৷
তাছাড়া ও গ্রেফতারকৃত তিন জন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভিন্ন জঙ্গি সংগঠনের ফেসবুক পেজে যোগাযোগ রেখেছে৷
তাদের সাম্প্রতিক সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের পোস্টগুলো থেকে এসবের তথ্য-প্রমাণ পাওয়া গেছে৷
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আরও বলেন, উক্ত দুইটি ফেসবুক আইডি থেকে এই গ্রেফতারকৃত ৩ জন এবং জনৈক সাংবাদিক ইলিয়াস হোসেন বিভিন্ন মানহানিকর, সাম্প্রদায়িক শত্রুতা, ঘৃণা বিদ্বেষ সম্পন্ন পোস্ট করে আসছে৷
উক্ত পোস্টগুলো সামাজিক অস্থিরতা, আইন-শৃংখলার অবনতি ও সাম্প্রদায়িক বিষবাষ্প ছড়াচ্ছে৷ এছাড়াও উক্ত পোস্ট গুলোর মাধ্যমে বিভিন্ন ধরনের ধর্মীয় ও সামাজিক গুজব ছড়াচ্ছে৷
এসব জঙ্গী তৎপরতা ও সাইবার অপরাধ রুখতে ঠাকুরগাঁও পুলিশ প্রশাসন তৎপরতা চালাচ্ছে জঙ্গী অপরাধ দমনে এবং সাইবার ক্রাইম প্রতিরোধ করতে ঠাকুরগাঁও পুলিশ প্রশাসনের অভিযান অব্যাহত থাকবে৷
এই ঘটনায় মঙ্গলবার ঠাকুরগাঁও সদর থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে চারজন সহ আরো অজ্ঞাত ১২০ জন কে আসামি করে মামলা হয়েছে৷
সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন সহকারী পুলিশ সুপার সার্কেল আবু তাহের মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ, ঠাকুরগাঁও সদর থানার ওসি তানভীরুল ইসলাম, ঠাকুরগাঁও প্রেসক্লাব সভাপতি মনসুর আলী, জাতীয় সাংবাদিক সংস্থার ঠাকুরগাঁও জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান আসাদ প্রমুখ৷
এ সময় পুলিশ বিভাগের পরিদর্শক dio-1 নাজমুল ইসলামসহ ঠাকুরগাঁও জেলার বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন৷