আগামীকাল শুক্রবার
আগামীকাল শুক্রবার (০৫ জুন) থেকে চাঁপাইনবাবগঞ্জ-রাজশাহী-ঢাকা রুটে চালু হচ্ছে একটি ‘ম্যাংগো স্পেশাল ট্রেন’। চাঁপাইনবাবগঞ্জ ও রাজশাহী থেকে আমসহ অন্যান্য পার্সেল পরিবহনের জন্য ট্রেনটি চালু করা হচ্ছে। বৃহস্পতিবার (০৪ জুন) পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের বিভাগীয় বাণিজ্যিক কর্মকর্তা (পাকসী) ফুয়াদ হোসেন আনন্দ রাজশাহী রেলওয়ে স্টেশনে সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানিয়েছেন।
তিনি জানান, চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে যখন ঢাকা যাবে তখন ট্রেনটির নাম হবে ‘ম্যাংগো স্পেশাল ট্রেন-২’। আর ঢাকা থেকে চাঁপাইনবাবগঞ্জ ফেরার পথে নাম হবে ‘ম্যাংগো স্পেশাল ট্রেন-১’। ট্রেনটি সপ্তাহে প্রতিদিন চলাচল করবে। প্রতিদিন চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে বিকেল ৪টায় ছেড়ে আসবা। রাজশাহী পৌঁছাবে ৫টা ২০ মিনিটে। এখানে ৩০ মিনিট থেমে ৫টা ৫০ মিনিট মিনিটে ট্রেনটি যাত্রা শুরু করবে।
এরপর ট্রেনটি ঢাকায় পৌঁছাবে রাত ১টায়। ঢাকা থেকে ট্রেনটি রাত ২টা ১৫ মিনিটে ছেড়ে আসবে। রাজশাহী পৌঁছাবে সকাল ৮টা ৩৫ মিনিটে। এখানে ২০ মিনিট থেমে ট্রেনটি চাঁপাইনবাবগঞ্জের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যাবে। পৌঁছাবে সকাল ১০টা ১৫ মিনিটে। ট্রেনটিতে মোট ছয়টি ওয়াগন থাকবে। প্রতিটি ওয়াগনে ৪৫ হাজার কেজি আম নেয়া যাবে। তবে শুধু আম নয়, সকল প্রকার শাকসবজি, ফলমূল, ডিমসহ কৃষি পণ্য, বাড়ির ফর্ণিচার এবং রেলওয়ের আইনে পার্সেল হিসেবে বহনযোগ্য সকল সামগ্রী বহন করা হবে।চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে ছেড়ে এসে ট্রেনটি আমনূরা বাইপাস, কাঁকনহাট, রাজশাহী, সরদহ, আড়ানি ও আব্দুলপুর বাইপাস স্টেশনে থামবে।
এসব স্থানে আমসহ পার্সেল পণ্য ট্রেনে তোলা হবে। টাঙ্গাইল, মির্জাপুর, কালিয়াকৈর, জয়দেবপুর, টঙ্গি, বিমানবন্দর, ক্যান্টনমেন্ট, তেজগাঁও এবং কমলাপুর স্টেশনে ট্রেনটি থামবে। ফেরার পথে ট্রেনটি তেজগাঁও, টঙ্গি, টাঙ্গাইল, সিরাজগঞ্জ, চাটমোহর এবং রাজশাহী স্টেশনে থামবে। তবে যাত্রাপথে কোথাও সাধারণ যাত্রী এ ট্রেনে তোলা হবে না।
ট্রেনটিতে রাজশাহী স্টেশন থেকে এক কেজি আম ঢাকার বিমানবন্দর, তেজগাঁও বা কমলাপুরে নিতে খরচ পড়বে ১ টাকা ১৮ পয়সা। আর চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে এক কেজি আমের ভাড়া লাগবে ১ টাকা ৩০ পয়সা। রেলওয়ের নিয়ম অনুযায়ী ট্রেন ছাড়ার আগে যে কেউ তাদের মালামাল বুকিং দিতে পারবেন।
সংবাদ সম্মেলনে পশ্চিম রেলের কর্মকর্তা ফুয়াদ হোসেন আনন্দ বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা করোনাভাইরাসের এই দুর্যোগকালে চাষিদের পাশে থাকার নির্দেশনা দিয়েছেন। তাই চাঁপাইনবাবগঞ্জ-রাজশাহী থেকে এবারই প্রথম এ ধরনের ট্রেন চালু করা হচ্ছে। লকডাউনে বেশিরভাগ ট্রেন বন্ধ থাকায় ট্র্যাক যেমন ফাঁকা থাকছে তেমনি অনেক ইঞ্জিনও পড়ে আছে। তাই এটা সম্ভব। কিন্তু সব ট্রেন যখন চালু হবে কিংবা আমের মৌসুম শেষ হলে এটি চালানো সম্ভব হবে না।
সংবাদ সম্মেলনে পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের প্রধান বাণিজ্যিক কর্মকর্তা আহছান উল্ল্যা ভুঁইয়া, রাজশাহী রেলওয়ে স্টেশনের ব্যবস্থাপক আবদুল করিম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। তারা জানিয়েছেন, ট্রেনটি চালু করতে বৃহস্পতিবারই সব প্রস্তুতি শেষ হয়েছে। ট্রেনটিতে রাজশাহী-চাঁপাইয়ের আম চাষিরা উপকৃত হবেন বলে তারা মনে করছেন।প্রসঙ্গত, আম সংগ্রহ, পরিবহন ও বাজারজাতকরণ নিয়ে গত ২০ মে রাজশাহী জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে একটি সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় সিদ্ধান্ত হয়, আম পরিবহনে চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে ট্রেন চলবে। এর আগে করোনাভাইরাসের উদ্ভূত পরিস্থিতিতে আম, লিচু ও অন্যান্য মৌসুমী ফল বিপণন এবং কৃষিপণ্য বাজারজাতকরণ বিষয়ে গত ১৬ মে ভিডিও কনফারেন্সে চাষি ও ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলেন কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক। সেদিনই ট্রেনে আম পরিবহনের কথা ওঠে। এরপর রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম এ বিষয়ে পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য পশ্চিম রেল কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেন। সে অনুযায়ী ট্রেনে আম পরিবহনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়। এর আগে কখনও ট্রেনে এভাবে আম ঢাকায় নিয়ে যাওয়া হয়নি।