• ঢাকা
  • বুধবার, ১১ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২৪শে এপ্রিল, ২০২৪ ইং
শকুন সংরক্ষণকারী ব্যক্তি ও সংস্থাকে সরকারি স্বীকৃতি ও আর্থিক সহায়তা দেয়া হবে -পরিবেশ  ও বনমন্ত্রী

ঢাকা, ২০ ভাদ্র (৪ সেপ্টেম্বর) :৭

পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন বলেছেন, পরিবেশ সংরক্ষণে প্রকৃতির পরিচ্ছন্নতাকর্মী শকুনের বিকল্প নেই। শকুন সংরক্ষণে সরকার নিরলসভাবে কাজ করছে। কিন্তু, শকুনসহ অন্যান্য বন্যপ্রাণি সংরক্ষণ সরকারের একার পক্ষে কষ্টসাধ্য। তাই প্রকৃতি ও বন্যপ্রাণি সংরক্ষণে নিবেদিত ব্যক্তিবর্গ ও বিজ্ঞানীদের শকুন রক্ষায় নিজ নিজ অবস্থান থেকে একনিষ্ঠভাবে দায়িত্ব পালন করতে হবে। তিনি বলেন, সরকার শকুন সংরক্ষণকারী ব্যক্তি ও সংস্থাকে সরকারি স্বীকৃতি ও প্রয়োজনীয় আর্থিক সহায়তা দেয়া হবে।

মন্ত্রী আজ ‘আন্তর্জাতিক শকুন সচেতনতা দিবস’ উপলক্ষ্যে বন অধিদপ্তর আয়োজিত ওয়েবিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে  এসব কথা বলেন।

শকুন সংরক্ষণে সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগ উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, এ বছর জানুয়ারি মাসে সরকার শকুনের জন্য ক্ষতিকর ঔষধ কিটোপ্রোফেন নিষিদ্ধ করেছে, যা শকুন রক্ষায় বিশ্বব্যাপী একটি উদাহরণ সৃষ্টি করেছে। অন্যান্য ক্ষতিকর ঔষধ যেমন ফ্লুনিক্সিন, এসিক্লোফেনাক যেন আমাদের দেশের বাজারে না আসে সে ব্যাপারেও মন্ত্রিপরিষদ নির্দেশনা দিয়েছে। শকুনের জন্য নিরাপদ ঔষধ মেলোক্সিক্যাম রোগাক্রান্ত পশুদের জন্য ব্যবহারের পরামর্শ দেয়া হয়েছে। ২০১০ সালে দেশব্যাপী শকুনের জন্য ক্ষতিকারক ঔষধ ডাইক্লোফেনাক নিষিদ্ধ করার মাধ্যমে আমরা যে মাইলফলক অর্জন করেছি তা বিশ্ব সংরক্ষণ সম্প্রদায়ের কাছেও একটি মডেল হিসেবে বিবেচিত হয়েছে। তিনি বলেন, শকুন সংরক্ষণে ‘বাংলাদেশ জাতীয় শকুন সংরক্ষণ কমিটি’ গঠন করা হয়েছে। ২০১৪ সালে দেশের দু’টি অঞ্চলকে শকুনের জন্য নিরাপদ এলাকা হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। ২০১৫ সালে শকুনের প্রজননকালীন সময়ে বাড়তি খাবারের চাহিদা মেটানোর জন্য হবিগঞ্জের রেমা-কালেঙ্গা বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্যে ও সুন্দরবনে দু’টি ফিডিং স্টেশন স্থাপন করা হয়েছে।

মন্ত্রী বলেন, ২০১৬ সালে প্রণীত ১০ বছর মেয়াদি বাংলাদেশ শকুন সংরক্ষণ কর্মপরিকল্পনাকে অগ্রাধিকার দিয়েই শকুন সংরক্ষণে সকল কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। ২০১৬ সালে অসুস্থ ও আহত শকুনকে উদ্ধার ও পুনর্বাসন কার্যক্রম পরিচালনার জন্য দিনাজপুরের সিংড়ায় একটি শকুন উদ্ধার ও পরিচর্যা কেন্দ্র স্থাপন করা হয়েছে। উল্লেখ্য, এ পর্যন্ত ১১৫টি হিমালয়ান গ্রিফন প্রজাতির শকুন উদ্ধার এবং পরিচর্যার পর প্রকৃতিতে অবমুক্ত করা হয়েছে। শকুনের আবাসস্থলের দীর্ঘমেয়াদি পর্যবেক্ষণ ও নিরাপদ এলাকার ব্যবস্থাপনার জন্য স্থানীয় জনসাধারণকে সম্পৃক্ত করে শকুন সংরক্ষণ দল গঠন করা হয়েছে। সরকারের বহুমুখী পদক্ষেপের ফলে হবিগঞ্জের রেমা-কালেঙ্গায় শকুনের প্রজনন সফলতা ৪৪ শতাংশ থেকে বৃদ্ধি পেয়ে ২০২০ সালে ৫৭ শতাংশে উন্নীত হয়েছে। ২০২০ সালে ‘বাংলাদেশ জাতীয় শকুন সংরক্ষণ কমিটি’ এর ১০ম সভায় শকুনের দু’টি হটস্পট যথা- হবিগঞ্জের রেমা-কালেঙ্গা ও সুন্দরবনে বিদ্যমান শকুনের নিরাপদ খাদ্য সরবরাহ নিশ্চিত করার লক্ষ্যে রাজস্ব খাতের আওতায় বাজেট বরাদ্দ এবং প্রতি দুই বছর অন্তর শকুনের অবস্থা মনিটরিং করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে। টিকে থাকা শকুনগুলো রক্ষায় সমন্বিতভাবে কাজ করার আহ্বান জানান মন্ত্রী।

প্রধান বন সংরক্ষক মোঃ আমীর হোসাইন চৌধুরীর সভাপতিত্বে ওয়েবিনারে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন উপ-মন্ত্রী বেগম হাবিবুন নাহার, সচিব মোঃ মোস্তফা কামাল এবং অতিরিক্ত সচিব ইকবাল আব্দুল্লাহ হারুন। এছাড়া, বাংলাদেশ বার্ড ক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা এনাম উল হক, প্রকৃতি ও জীবন ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান মুকিদ মজুমদার বাবু, বাংলাদেশ জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ ফেডারেশনের সভাপতি ড এস এম ইকবাল, ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়ন ফর কনজারভেশন অভ্ নেচার এর কান্ট্রি রিপ্রেজেন্টেটিভ রকিবুল আমিন এবং বন সংরক্ষক মোল্লা রেজাউল করিম অনুষ্ঠানে প্যানেলিস্ট হিসেবে বক্তব্য রাখেন। ওয়েবিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন আইইউসিএন এর প্রোগ্রাম ম্যানেজার এবিএম সরোয়ার আলম।

ফেসবুকে লাইক দিন

তারিখ অনুযায়ী খবর

এপ্রিল ২০২৪
শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
« মার্চ    
 
১০১১১২
১৩১৪১৫১৬১৭১৮১৯
২০২১২২২৩২৪২৫২৬
২৭২৮২৯৩০  
দুঃখিত! কপি/পেস্ট করা থেকে বিরত থাকুন।