চরাঞ্চলে ড্রেজারে বালু উত্তোলনের হিড়িক
চরভদ্রাসন (ফরিদপুর) প্রতিনিধি ঃ
ফরিদপুরের চরভদ্রাসন উপজেলা পদ্মা নদীর অপর পারের চর হরিরামপুর ইউনিয়নের চরশালেপুর গ্রামের আমিনখার হাট এলাকা ও ভাটি শালেপুর চরের বিভিন্ন পয়েন্টে দীর্ঘদিন ধরে ফসলী মাঠে ড্রেজার মেশিন লাগিয়ে বালু উত্তোলন করে জমজমাট ব্যবসা করে চলেছেন স্থানীয় প্রভাবশালীরা। উপজেলা পদ্মা নদীর অপর পারে ওইসব চরাঞ্চলে প্রশাসনের আনাগোনা নেই বললেই চলে। এছাড়া চলমান লকডাউন ও প্রশাসনিক কর্মকর্তা শূন্য থাকায় অত্র উপজেলা চরাঞ্চলের ভুমি দস্যুরা নিজ ইচ্ছামত অবৈধ ড্রেজার মেশিন দিয়ে বালু উত্তোলন করে বিস্তৃর্ণ ফসলী মাঠ ধ্বংস করছে বলে বৃহস্পতিবার স্থানীয় সূত্রগুলো অভিযোগ করেছেন।
স্থানীয় সূত্রগুলো জানান, উক্ত পদ্মা চরের প্রভাবশালী মৃত আঃ বারী খানের ছেলে ফেরদৌস খান (৪৫) কাউকে তোয়াক্কা না করে দীর্ঘদিন ধরে চরাঞ্চলের বিভিন্ন পয়েন্টে অবৈধ ড্রেজার মেশিন লাগিয়ে বালু উত্তোলন করে চলেছেন। সম্প্রতি তিনি উপজেলা চরহরিরামপুর ইউনিয়নের আমিন খানের হাটের পাশে দানেচ মোল্যার বাড়ীর পিছনের ড্রেজার মেশিন লাগিয়ে বিস্তৃর্ণ ফসলী মাঠ ধ্বংস করে চলেছেন। তার দেখাদেখি আশপাশের ফসলী মাঠগুলোতে বসানো হয়েছে আরও কয়েকটি ড্রেজার মেশিন। এসব ড্রেজার মেশিনগুলো হলো-উপজেলার ভাটি শালেপুর চরের জাহাঙ্গীর মোল্যার ড্রেজার মেশিন, অঞ্জু রহমানের ড্রেজার ও চরকল্যানপুর ইটভাটার পাশে চলমান ড্রেজার।
সরেজমিন ঘুরে অভিযোগ পাওয়া যায়, কিছু দিন আগে উক্ত গ্রামের আমিন খান হাট উচ্চ বিদ্যালয়ের সামনের দৃষ্টি নন্দন রাস্তা ঘেষে সরকারি খালের একাংশ ফেরদৌস খানের ড্রেজার মেশিন লাগিয়ে ভরাট করে স্থানীয় আরেক মাতুব্বর মোসলেম মোল্যার যোগসাজসে সরকারি জায়গায় পজেশন বিক্রি করে রমরমা বাণিজ্যও করেছেন তারা। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় এক কৃষক জানান, “উক্ত সরকারি খালের পূর্বাংশ ভরাট করে একই গ্রামের রাজ্জাক মুন্সি (৪৫), সেক খলিলুর রহমান (৫০) ও জসীম মোল্যা (৪০) এদের কাছে তিনটি পজেশন বিক্রি করে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন ভুমি দস্যুরা”। এ ব্যপারে উক্ত ড্রেজার মালিক ফেরদৌস খানকে বার বার ফোন দিয়েও তার মুঠোফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
তবে চরহরিরামপুর ইউনিয়ন সহকারী ভুমি কর্মকর্তা (তহশিলদার) আবুল বাসার চৌকদার জানান, “ আমি বহুবার উক্ত চরে গিয়ে ফেরদৌস খানকে ড্রেজার মেশিনে বালু উত্তোলন করতে নিষেধ করেছি। কিন্ত সে কারো কথায় তোয়াক্কা না করে বহাল তবিয়তে ড্রেজারে বালু উত্তোলন করে ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। উক্ত চরাঞ্চলের প্রায় এলাকা খান পরিবারের দখলে থাকায় তারা সরকারি খাল বা খাস জমি নিজেদের মতো ব্যবহার করে চরেছেন। তিনি আরও জানান, সম্প্রতী উক্ত চরে ড্রেজার ব্যবসা বেপড়োয়া দেখে আমি উর্দ্ধতন কর্মকর্তাদের লিখিত প্রতিবেদনও দিয়েছি”। এ ব্যপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (অ.দা) মোঃ মাসুম রেজা বলেন, “ চরাঞ্চলের ড্রেজারগুলোর বিরুদ্ধে আমি ব্যবস্থা নেবো”।