• ঢাকা
  • বুধবার, ১১ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২৪শে এপ্রিল, ২০২৪ ইং
চীন ছাড়তে আগ্রহী বিদেশী বিনিয়োগ টানতে সাড়ে চার লক্ষ হেক্টর জমি চিহ্নিত ভারতের

চিন থেকে পাততাড়ি গোটাতে চলা সংস্থাগুলিকে কাছে টানতে এ বার ভারতের তরফে প্রস্তুতি শুরু হল। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র-সহ একাধিক দেশের তাবড় সংস্থা যাতে ভারতকে উৎপাদন কেন্দ্র হিসাবে বেছে নিতে পারে, তার জন্য বিশাল মাপের জমি চিহ্নিতকরণ প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। ওয়াকিবহাল মহল সূত্রে জানা গিয়েছে, সারা দেশে এখনও পর্যন্ত ৪ লক্ষ ৬১ হাজার ৫৮৯ হেক্টর জমি, আয়তনে যা কি না যা কিনা ইউরোপের লাক্সেমবার্গের দ্বিগুণ, তা ইতিমধ্যে চিহ্নিত করাও হয়ে গিয়েছে।

একটি সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, যে ৪ লক্ষ ৬১ হাজার ৫৮৯ হেক্টর জমি এখনও পর্যন্ত চিহ্নিত করা হয়েছে, তার মধ্যে গুজরাত, মহারাষ্ট্র, তামিলনাড়ু, অন্ধ্রপ্রদেশের মতো রাজ্যগুলিতে অবস্থিত ১ লক্ষ ১৫ হাজার ১৩১ হেক্টর শিল্পাঞ্চলও শামিল। এ ছাড়াও, বিভিন্ন শিল্পাঞ্চলে যে সমস্ত অব্যবহৃত জমি পড়ে রয়েছে, সেগুলিকেও কাজে লাগানো যায় কি না পর্যালোচনা করে দেখা হচ্ছে। তা হয়ে গেলে বিদেশি বিনিয়োগকারীদের কী ভাবে এ দেশে আনা যায়, চলতি মাসের শেষ দিকে সেই পরিকল্পনাও চূড়ান্ত হয়ে যেত পারে।

সৌদি আরবের তেল উত্তোলনকারী সংস্থা আরামকো হোক বা দক্ষিণ কোরিয়ার স্টিল উৎপাদক সংস্থা পসকো, ভারতে তাদের বিনিয়োগের পথে জমির সমস্যাই বরাবর অন্তরায় হয়ে দাঁড়িয়েছে। দীর্ঘ দিন অপেক্ষা করতে করতে ফিরে গিয়েছে তারা। কিন্তু এই মুহূর্তে করোনার প্রকোপে ব্যবসায় বিপুল ক্ষয়ক্ষতির পর চিনের উপর নির্ভরশীলতা কমিয়ে, ভারতকে উৎপাদন কেন্দ্র বানাতে চাইছে বেশ কিছু সংস্থা। তাই তাদের যাতে ফিরে যেতে না হয়, তার জন্য রাজ্যগুলির সঙ্গে এ নিয়ে শলা পরামর্শ শুরু করে দিয়েছে মোদী সরকার।

যত দ্রুত ওই সংস্থাগুলির জন্য জমি বন্দোবস্ত  করা যাবে, ততই ভারতের লাভ বলে মত বারক্লেজ ব্যাঙ্কের সিনিয়র অর্থনীতিবিদ রাহুল বাজোরিয়া। তিনি বলেন, ‘‘জমি অধিগ্রহণ প্রক্রিয়া যত স্বচ্ছ এবং দ্রুত হবে, ততই বিদেশি বিনিয়োগ বাড়বে। তার জন্য আরও সুসঙ্গত প্রচেষ্টা প্রয়োজন।’’ তবে এ নিয়ে বাণিজ্য ও শিল্প মন্ত্রকের তরফে এখনও পর্যন্ত কোনও মন্তব্য করা হয়নি।

নোভেল করোনা হানা দেওয়ার ঢের আগে থেকেই অর্থনৈতিক মন্দার ছায়া গাঢ় হয়ে আসছিল ভারতে। ২৫ মার্চ থেকে একটানা লকডাউনের জেরে পরিস্থিতিত আরও সঙ্কটজনক অবস্থায় এসে ঠেকেছে। এমন পরিস্থিতিতে জল, বিদ্যুৎ এবং পরিবহণের সুবিধা রয়েছে এমন জায়গায় জমির বন্দোবস্ত করা যেতে পারলে বিদেশি বিনিয়োগ আসবেই বলে আশাবাদী সরকার। মূলত বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতি, বৈদ্যুতিন সরঞ্জাম, চিকিৎসা সরঞ্জাম, ওষুধ, সৌর সরঞ্জাম, ভারী যন্ত্রপাতি, রাসায়নিক, বস্ত্র এবং খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ সংস্থাগুলিকেই প্রাধান্য দেওয়া হচ্ছে।

এই ধরনের যে সমস্ত সংস্থা ভারতে বিনিয়োগ করতে আগ্রহী, ভারতীয় দূতাবাসগুলিকে তাদের চিহ্নিত করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ভারতে বিদেশি বিনিয়োগ টানা ও দেখভালের দায়িত্বে রয়েছে যে ইনভেস্ট ইন্ডিয়া সংস্থা, ইতিমধ্যেই জাপান, আমেরিকা, দক্ষিণ কোরিয়া এবং চিন থেকে একাধিক সংস্থা তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে। এই মুহূর্তে যে দেশগুলির সঙ্গে ভারতের বাণিজ্যিক সুসম্পর্ক রয়েছে, তার মধ্যে এই চার দেশ অন্যতম।  এদের সঙ্গে বছরে প্রায় ১৭ হাজার ৯২৭ কোটি ডলারের লেনদেন হয়। ২০১৯-এর ডিসেম্বর থেকে এ বছর এপ্রিল পর্যন্ত এই চার দেশ থেকে ভারতে সরাসরি ৬৮০ কোটি ডলারের বিনিয়োগ এসেছে।

বিদেশি বিনিয়োগ টানতে রাজ্যগুলিরকেও আলাদা পরিকল্পনা করার নির্দেশ দিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। এ নিয়ে বিভিন্ন রাজ্যের প্রতিনিধিদের সঙ্গে গত ৩০ এপ্রিল বৈঠকও করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। এই মুহূর্তে জাপান, আমেরিকা এবং দক্ষিণ কোরিয়ার একাধিক সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগ রেখে চলেছে অন্ধ্র্রপ্রদেশ। বিভিন্ন বিদেশি সংস্থার সঙ্গে কথা চালানোর পাশাপাশি অনলাইনে জমি বণ্টনের পরিকল্পনা করছে উত্তরপ্রদেশও।
সংবাদ সুত্র ঃ আনন্দবাজার পত্রিকা

ফেসবুকে লাইক দিন

তারিখ অনুযায়ী খবর

এপ্রিল ২০২৪
শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
« মার্চ    
 
১০১১১২
১৩১৪১৫১৬১৭১৮১৯
২০২১২২২৩২৪২৫২৬
২৭২৮২৯৩০  
দুঃখিত! কপি/পেস্ট করা থেকে বিরত থাকুন।