• ঢাকা
  • শনিবার, ৭ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২০শে এপ্রিল, ২০২৪ ইং
মধুখালীর রাজু হত্যাকান্ডে মূল আসামী আটক

ফরিদপুরের মধুখালী উপজেলার জাহাপুর ইউনিয়নের মাঝকান্দির দাসপাড়া গ্রামের রাজু সাহা (২২) হত্যা মামলায় জসিম মোল্যা (২১) নামে এক আসামীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। জসিমের বাড়ি রাজবাড়ির বামুন্দি বালিয়াকান্দি গ্রামে। পিতার নাম মৃত মজিদ মোল্যা। আজ মঙ্গলবার ভোররাতে তাকে বোয়ালমারী উপজেলার কাদিরদি চরপাড়া হতে পুলিশের একটি দল আটক করে। এসময় তার দেখানো তথ্য অনুযায়ী হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত একটি রড সহ নিহতের দুটি সোনার আংটি, একটি বেসলেট ও মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়।

ফরিদপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অপরাধ বিভাগ) জামাল পাশা আজ মঙ্গলবার দুপুরে পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে আয়োজিত এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান। তিনি জানান, জসিম নিহত রাজুর বড় ভাই সুমন সাহার নির্মিতব্য দ্বীতল ভবনের রাজমিস্ত্রীর কাজ করছিল। সেই সুবাদে সে রাতের বেলায় নির্মিতব্য ওই ভবনেই থাকতো। আর রাজুর মা ও বোন কিছু দুরে একটি বাসায় থাকতো। তার বড় ভাই সুমনের বড় একটি মিষ্টির দোকান রয়েছে ঢাকায় ‘বিক্রমপুর মিষ্টান্ন’ নামে।

এদিকে নিহত রাজুকে স্বামী দাবি করে তাকে মুসলিম রীতিতে দাফনের জন্য পুলিশের নিকট আবেদন করেছে ৬ মাসের শিশু সন্তানের মা নাসরিন বেগম (২০)। তার দাবি, ঢাকার সিএমএম কোর্টে নোটারী পাবলিকের মাধ্যমে ২০১৮ সালের ৫ জুন রাজু ধর্মান্তরীত হয়ে মুসলমান হয়। রাজু সাহা হতে নিজের নাম পরিবর্তন করে মাহমুদ আহমেদ রাখে। ওই বছরের ৭ জুন নোটারী পাবলিকের মাধ্যমে তাদের বিয়ে হয়। ৬ মাসের শিশু সন্তানটিও তাদের। উদ্ভুত পরিস্থিতিতে নাসরিনের দেয়া তথ্যের সত্যতা যাচাই করার জন্যে মধুখালী থানার একজন এসআই সাইফুদ্দিনকে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।

নাসরিনের দাবির প্রেক্ষিতে পরিবারের কাছে রাজুর লাশ হস্তান্তরের বিষয়টি ঝুলে আছে। নাসরিনের দেয়া তথ্য যাচাইয়ের পর সিদ্ধান্ত হবে লাশ কার কাছে হস্তান্তর করা হবে।

নাসরিনের বাড়ি মধুখালরি আড়পাড়া গ্রামে। পিতার নাম জাকির খান।

সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অপরাধ বিভাগ) জামাল পাশা বলেন, দুটি কারণে রাজু হত্যাকান্ড সংঘটিত হয়েছে বলে প্রতিয়মান হচ্ছে। প্রথমত, জসিম ওই বাড়ির রাজমিস্ত্রির কাজ করলেও বেতন মুজুরী পাচ্ছিলো না। এজন্য সে অর্থকষ্টে রাজুকে খুন করে আংটি, বেসলেট ও মোবাইল হাতিয়ে টাকা জোগাড়ের চিন্তা করেছিল। এছাড়া ওই গ্রামেরই একটি মেয়ের প্রতি তারা দুজনের আকৃষ্ট হয়ে একে অপরের প্রতিদ্বন্দ্বী হয়ে উঠেছিল। রাজু ও জসিম দুজনেই নেশায় আসক্ত ছিল। তারা ইয়াবা ও গাজা সেবন করতো।

তিনি জানান, জসিমকে জিজ্ঞাসাবাদে পুলিশের নিকট সে স্বীকার করেছে যে গত ২ জানুয়ারী নির্মিতব্য ওই ভবনের আরেক মিস্ত্রি সোহেল না থাকায় রাতে রাজুকে ওই বাড়িতে থাকার অনুরোধ জানায় জসিম। এরপর গভীর রাত পর্যন্ত তারা মাদক সেবনের পর রাত সাড়ে তিনটার দিকে রাজু পেশাব করতে বাইরে যায়। এসময় বসে থাকা রাজুর মাথায় পিছন দিকে হতে রড দিয়ে সজোরে আঘাত করে তাকে হত্যার পর পায়খানার সরিয়ে ট্যাংকির মধ্যে গোপন করে। আর সকালে কাউকে কিছু না জানিয়ে বিছানাপত্র সহ জসিম কাদিরদি গ্রামে চলে যায়। আর পরেরদিন সকালে পরিবারের লোকেরা খোঁজাখুজির এক পর্যায়ে লাশ পাওয়া যায়। এ ঘটনায় রাজুর মা অরুনা রানী সাহা বাদি হয়ে মধুখালী থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।

সংবাদ সম্মেলনে ফরিদপুরের ডিআইওয়ান নুরুল আলম, ওসি (ডিবি) সুনীল কর্মকার. তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই ফরহাদ হোসেন উপস্থিত ছিলেন।

এদিকে সবশেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত রাজুর ধর্মান্তরিত হওয়ার খবরের সত্যতা মিলেছে বলে জানা গেছে। এখন চলছে নাসরিনের সাথে কাবিনের তথ্য যাচাই। বর্তমানে হিমঘরে রাখা হয়েছে রাজুর লাশ। সুত্র ঃ  ফরিদপুর টাইমস

ফেসবুকে লাইক দিন

তারিখ অনুযায়ী খবর

এপ্রিল ২০২৪
শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
« মার্চ    
 
১০১১১২
১৩১৪১৫১৬১৭১৮১৯
২০২১২২২৩২৪২৫২৬
২৭২৮২৯৩০  
দুঃখিত! কপি/পেস্ট করা থেকে বিরত থাকুন।