করোনা মহামারী আসার পর এমন কিছু ব্যাতিক্রম ঘটনা ঘটছে যা মানবতাকে হার মানাচ্ছে। পিতা পুত্রকে ফেলে পালাচ্ছে,পুত্র পিতাকে ফেলে পালাচ্ছে। ভাই ভাইকে ফেলে পালাচ্ছে। এই রকম একটি ঘটনা ঘটেছে,রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে করোনায় মারা যাওয়া এক এক ব্যক্তির লাশ ফেলে পালিয়েছেন তার ভাই এবং ভাবি। আজাদ আলী (৩০) নামের ওই ব্যক্তি রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) চিকিৎসাধীন অবস্থায়
গত শনিবার দিবাগত রাত দেড়টার দিকে মারা গেছেন। আজাদ আলীর বাড়ি নওগাঁর পত্নীতলা উপজেলার জামগ্রামে। তার করোনা পজিটিভ ছিল। শারীরিক অবস্থা সংকটাপন্ন থাকায় তাকে আইসিইউতে রাখা হয়েছিল। হাসপাতালে ছিলেন তার বড় ভাই এবং ভাবি। তবে মৃত্যুর পর তারা দুজনেরই মোবাইল ফোন বন্ধ করে পালিয়ে গেছেন। তারা লাশ নিতে চাননি। কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশন গণমাধ্যমকে জানিয়েছে, আজাদ আলীর মৃত্যুর পরই তার লাশ স্বাস্থ্যবিধি মেনে দাফনের জন্য কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশনকে অবহিত করা হয়। এরপর কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশনের স্বেচ্ছাসেবকরা আজাদ আলীর ভাই এবং ভাবির সঙ্গে কথা বলেন। তারা স্বেচ্ছাসেবকদের জানান, গ্রামে এই লাশ দাফন করতে দেয়া হবে না। কোয়ান্টাম যেন রাজশাহীতেই লাশটি দাফনের ব্যবস্থা করে। সে অনুযায়ী, কোয়ান্টামের স্বেচ্ছাসেবকরা ভোর ৫টায় রাজশাহীতে কবর খনন শুরু করেন। এরপর ভোর ৬টায় আইসিইউ’র সামনে গিয়ে দেখেন মৃত ব্যক্তির ভাই এবং ভাবি সেখানে নেই। অন্য রোগীর স্বজনরা জানান, ফজরের আযানের পর তারা হাসপাতালে থেকে বেরিয়ে গেছেন। এরপর থেকে তাদের ফোন বন্ধ। কোয়ান্টাম আরও জানায়, সকাল ১০টা পর্যন্ত তাদের মোবাইল নম্বর দুটি বন্ধই পাওয়া যায়। এরপর একটি নাম্বারে কল ঢোকে। তখন তাদের জানানো হয়, তারা লাশ নিবেন না। রাজশাহীতেই যেন দাফন করে দেয়া হয়। এর পর থেকে নাম্বার দুটি আবারও বন্ধ পাওয়া যাচ্ছে। এখন যথাযথ কর্তৃপক্ষ লিখিতভাবে তাদের লাশ বুঝিয়ে দিলে দাফন করে দেয়া হবে।
রামেক হাসপাতালের উপপরিচালক ডা. সাইফুল ফেরদৌস গণমাধ্যমকে জানান, স্বজনরা লাশ নিবেন না। আমরা বেওয়ারিশ হিসেবে পুলিশকে লাশ বুঝিয়ে দেব। পুলিশ কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশনকে বুঝিয়ে দেবে। এরপর লাশ দাফন হবে।