• ঢাকা
  • শুক্রবার, ১৫ই চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ, ২৯শে মার্চ, ২০২৪ ইং
বাজেটে বিশেষ বরাদ্দ চায় উপকূলবাসী

ছবি প্রতিকী

সজ্ঞিব দাস, গলাচিপা (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি।
বাংলাদেশের ৫০তম প্রস্তাবিত বাজেট (২০২১-২২ অর্থবছর) ঘোষণা করেছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। এই বাজেটের আকার ৬ লাখ ৩ হাজার ৬৮১ কোটি টাকার। এ বিশাল বাজেটে কোনো সুফল দেখছে না উপকূলবাসী। প্রায় প্রতিবছর কোনো না কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলা করতে হয় তাদের। ১৯৭০ ও ১৯৯১ সালের প্রলয়ঙ্করী ঘূর্ণিঝড় এবং এর পরের সিডর, আইলা, আম্পান, মহাসেন, নার্গিস, ফণী ও সম্প্রতি ইয়াসের মতো ঘূর্ণিঝড়ের তা-বে বিপর্যস্ত উপকূলীয় জনজীবন। এ দুর্যোগ থেকে স্থায়ীভাবে পরিত্রাণ চায় উপকূলীয় মানুষ। একটি ঘূর্ণিঝড়ের ধকল কাটতে না কাটতেই আর একটি হানা দিয়ে স্বাভাবিক জীবনযাত্রাকে তছনছ করে দিচ্ছে। প্রতিবছর ঘূর্ণিঝড়ের সঙ্গে লড়াই করা এখন নিয়মে পরিণত হয়েছে।
সূত্র জানায়, দেশ স্বাধীনের পর থেকে এ অঞ্চলে যতগুলো ঘূর্ণিঝড় হয়েছিল তার ক্ষতি পূরণের জন্য বাজেটে কোনো বিশেষ বরাদ্দ রাখেনি সরকার। এবার বাজেটে উপকূলবাসী টেকসই বেড়িবাঁধের জন্য বিশেষ বরাদ্দের দাবি তুলেছে।
১৯৭০ সালের ১২ নভেম্বরের প্রলয়ঙ্করী ঘূর্ণিঝড়ে বাতাসের গতিবেগ ছিল ২২৪ কিলোমিটার। ১০ থেকে ৩৩ ফুট উচ্চতার জলোচ্ছ্বাস হয়েছিল। ওই ঝড়ে পাঁচ লাখের মতো মানুষের প্রাণহানি হয়েছিল। অসংখ্য গবাদিপশু মারা গিয়েছিল। অসংখ্য ঘরবাড়ি ডুবে গিয়েছিল। ১৯৯১ সালের ঘূর্ণিঝড়েও ব্যাপক ক্ষতি হয়। সে ঝড়েও বাতাসের গতিবেগ ছিল ২২৫ কিলোমিটার। জলোচ্ছ্বাস হয়েছিল ১২ থেকে ২২ ফুট উচ্চতার। জানমালের ক্ষতি হয়েছিল ব্যাপক।
২০০৭ সাল থেকে ঘূর্ণিঝড়ের নামকরণ শুরু হয়। ওই বছরই সিডর নাম ধারণ করে ঘূর্ণিঝড় রূপে এসে উপকূলীয় অঞ্চলে ব্যাপক তা-ব চালিয়ে অপূরণীয় ক্ষতি করে যায়। সিডর নাম শুনলে এখনো আঁতকে ওঠে উপকূলের মানুষ। এ ঝড়ে বাতাসের গতিবেগ ছিল ২২৩ কিলোমিটার। স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ১৫ থেকে ২০ ফুট উচ্চতায় পানি প্রবাহিত হয়েছিল। সরকারি হিসাবে ওই সময় ছয় হাজার ও রেড ক্রসের হিসাবে ১০ হাজারের মতো মানুষের প্রাণহানি হয়েছিল।
গলাচিপা উপজেলার চরবিশ্বাস ইউনিয়নের বাংলার চরের আ. জব্বার বলেন, ‘আমার সব কিচু বইন্যার পানিতে তলাইয়া গ্যাছে। আমার থাহার ঘরডাও বইন্যার পানিতে হালাই দেছে, এ্যাহোন আমি হেই ঘর উডাইতে য়্যাছি। আমাগো সরকারের কাছে একটাই দাবি, সরকার যেন এউক্কা ভালো ওয়াবদা কইর‌্যা দ্যায়।’ পটুয়াখালী পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী হাসান সালেহী জানান, জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের আওতায় যেসব বেড়িবাঁধ রয়েছে, সেগুলোর টেকসই রূপ দিতে কমপক্ষে ৫ হাজার কোটি টাকার প্রয়োজন। এদিকে সরকার প্রতিবছর ৫০ থেকে ১০০ কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়ে থাকে। ফলে বেড়িবাঁধ কোনোভাবেই টেকসইভাবে নির্মাণ বা মেরামত করা সম্ভব না।’পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ^বিদ্যালয়ের ‘দুর্যোগ ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা’ বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. আবদুস সাত্তার বলেন, উপকূলীয় অঞ্চলে কী কারণে বেড়িবাঁধগুলো ভেঙে যায় সেটাকে সরকার প্রথমে শনাক্ত করবে অর্থাৎ ডেটলাইন সার্ভে করবে। তার পর সেটাকে হিসাব করে বাজেট বরাদ্দ করে টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণ করাটাই হবে যুক্তিযুক্ত। এটাকে দেখভাল করার জন্য দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটি গঠন করাও জরুরি। ফলে দুর্যোগকালীন এভাবে বেড়িবাঁধ ভাঙবে না বলে আশা করেন তিনি।

ফেসবুকে লাইক দিন

তারিখ অনুযায়ী খবর

মার্চ ২০২৪
শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
« ফেব্রুয়ারি    
 
১০১১১২১৩১৪১৫
১৬১৭১৮১৯২০২১২২
২৩২৪২৫২৬২৭২৮২৯
৩০৩১  
দুঃখিত! কপি/পেস্ট করা থেকে বিরত থাকুন।