কবীর হোসেন,আলফাডাঙ্গা (ফরিদপুর) প্রতিনিধি
আলোচিত শামসু হত্যা মামলায় ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গার দু’ আ’লীগ নেতা আনোয়ার হোসেন ও অনিল কুমার বিশ্বাসকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
রোববার (৬ অক্টোবর) দুপুরে তাদের আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।
গত ৫ আগস্ট সরকার পতনের দিন ফরিদপুরে বাসচালক শামসু মোল্যা (৬২) হত্যা মামলায় আলফাডাঙ্গা উপজেলার দু’ আওয়ামী লীগ নেতাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। এই গ্রেফতারের ঘটনায় জনমনে কৌতুহল দেখা দিয়েছে।
আটককৃতরা হলেন, উপজেলার গোপালপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি আনোয়ার হোসেন ও বুড়াইচ ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অনিল কুমার বিশ্বাস। এরআগে শনিবার গভীররাতে অভিযান চালিয়ে তাদেরকে নিজ বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
জানা গেছে, গত ৫ আগস্ট সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগের পর বিকেল ৫টার দিকে একদল মানুষ ফরিদপুর কোতয়ালী থানা ঘেরাও করতে যায়। এ সময় পুলিশের সঙ্গে ব্যাপক সংঘর্ষ হয় থানা ঘেরাও করতে যাওয়া ব্যক্তিদের। পুলিশ কাঁদানে গ্যাস ও মুহুর্মুহু গুলি ছুড়ে। প্রায় ঘণ্টাব্যাপী এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এ সময় গুলিতে নিহত হন পথচারী শামসু। গুলিটি তার নাক ও ঠোঁটের মাঝ দিয়ে ঢুকে মাথার পেছন দিয়ে বের হয়ে যায়।শামসু শহরের পূর্ব খাবাসপুর মহল্লা এলাকার বাসিন্দা মরহুম মোবারক মোল্লার ছেলে। প্রথম স্ত্রীর সঙ্গে তালাক হয়ে যাওয়ার পর তিনি ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলার মেঘলা বেগমকে বিয়ে করেন।
শামসু-মেঘলা দম্পতির একমাত্র মেয়ে ছয় বছরের সাম্মি। সাম্মি স্থানীয় বায়তুল আমান সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রথম শ্রেণির ছাত্রী। নিহত শামসু মোল্লা ফরিদপুরের করিম গ্রুপের মালিকানাধীন গোল্ডেন লাইন পরিবহনের একটি বাসের চালক ছিলেন।
এ ঘটনার জেরে ২১ আগস্ট নিহত শামসু মোল্লার স্ত্রী মেঘলা বেগম বাদী হয়ে ফরিদপুর কোতোয়ালি থানায় একটি মামলাটি করেন। এ মামলার এজাহারে আসামি হিসেবে শুধুমাত্র বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের নাম উল্লেখ করা হয়। এছাড়া জেলা আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ ও শ্রমিক লীগের অজ্ঞাতনামা ৩০০ থেকে ৪০০ জনকে আসামি করা হয়ে। এই মামলায় কোতোয়ালি থানা পুলিশ জেলার আলফাডাঙ্গা থানা পুলিশের সহায়তায় অভিযান চালিয়ে আনোয়ার হোসেন ও অনিল কুমার বিশ্বাসকে গ্রেপ্তার করেন।
গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করে ফরিদপুর কোতোয়ালি থানা পুলিশের উপ-পরিদর্শক ও মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা হিরামন বিশ্বাস জানান, মামলার এজাহারে তাদের নাম উল্লেখ না থাকলেও তদন্তকালে ঘটনার সাথে সংশ্লিষ্টতা পাওয়ায় গ্রেপ্তার করে আদালতে পাঠানো হয়।
আলফাডাঙ্গা থানা অফিসার ইনচার্জ (ওসি) হারুন-অর রশীদ বলেন, কোতোয়ালি থানা পুলিশ আলফাডাঙ্গা থানা এলাকায় অভিযান পরিচালনা করার জন্য আসেন। পরে আলফাডাঙ্গা থানা পুলিশের সহায়তায় অভিযান চালিয়ে দুইজনকে গ্রেপ্তার করে কোতোয়ালি থানায় নিয়ে যায়।
কবির হোসেন
০১৭১৬৪৫৫৮৩৬
তাং ৭ অক্টোবর ২০২৪