• ঢাকা
  • সোমবার, ১৮ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২রা ডিসেম্বর, ২০২৪ ইং
রাজশাহীতে আমের রাজধানী বানেশ্বর হাট,সুস্বাদু আমের সমারোহ

রাজশাহী মহানগরীর প্রবেশ মুখ বানেশ্বর হাট। এই অঞ্চলে সর্ব বৃহৎ আমের বাজার। তাই অনেকে বানেশ্বর হাট কে আমের রাজধানী হিসেবে অভিহিত করে থাকেন।

করোনা ভাইরাস মহামারীর কারণে বদলে গেছে সাধারণ মানুষের জীবন-যাপনের ধরন। এখন বেশিরভাগসময় বাড়িতেই থাকতে হচ্ছে। কিন্তু প্রকৃতি চলছে তার নিজের নিয়মে। এসেছে মধুমাস। রঙিন সব ফলের মৌসুম। ফলের সুগন্ধে চারপাশ মৌ মৌ করার সময় এখন। বাজারে পাওয়া যাচ্ছে গুটি, রাণীপছন্দ, হিমসাগর, ল্যংড়া আর গোপালভোগসহ বিভিন্ন সুস্বাদু ও রসময় নানান জাতের আম। এটি হলো সেই ফল, যার জন্য অধিকাংশ মানুষ সারা বছর অপেক্ষা করে থাকেন। ঝড়ের দিনে পাকা আম কুড়ানো অনেকেরই শৈশবের স্মৃতি। সুগন্ধে ভরা এ স্বাদের ফলটি প্রচুর পুষ্টিগুণে ভরপুর।
রাজশাহীর পুঠিয়া উপজেলার বানেশ্বরে গত শুক্রবার থেকে বসছে এ হাট। এটিই রাজশাহীর সবচেয়ে বড় ও ঐতিহাসিক আমের হাট। শনিবার বানেশ্বর হাটে গিয়ে দেখা যায়, হাটের কাচারি মাঠ, বণিক সমিতি অফিসের সামনের মাঠ থেকে হাইওয়ে রোড পর্যন্ত শত শত ভ্যানে আম সাজিয়ে ক্রেতা বিক্রেতারা দামদর করছেন। ভ্যানের ওপর ঝুড়ি আর ক্যারেটে সাজিয়ে রাখা হয়েছে গুটি, রাণীপছন্দ, হিমসাগর, ল্যাংড়া আর গোপালভোগ জাতের আম। তবে করোনার কারণে পরিবহন সংকটে বাইরের বেপারিরা কম আসায় বেচাকেনা কম বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।

বাগান মালিক ও পাইকাররা বলছেন, এবার আমের আশানুরূপ দাম পাচ্ছেন না তারা। বানেশ্বর হাটের আম বিক্রি করতে আসা আমচাষি আমরুল জানায়, প্রথমে দুশ্চিন্তা ছিলাম তবে দাম বাড়ায় এখন আর চিন্তা নেই। ঝড়ে আম ঝরে যাওয়ায় কিছুটা ক্ষতি হলেও দাম বাড়ায় তা পুষিয়ে নিতে পারবো। রাব্বেল নামের এক আম ক্রেতা জানান, চার থেকে পাঁচ জাতের আম এখন এই বানেশ্বর হাটে।
তিনি আরো জানান, গোপালভোগ ১৮’শ থেকে ২২’শ টাকা হাজার, হিমসাগর (খেশরাপাত) ১৫’শ থেকে ২ হাজার, ল্যাংড়া ১৪’শ থেকে ১৬’শ টাকা হাজার, লখনা ৭’শ থেকে ৮’শ ও গুটি জাতের সকল আম বিক্রি হচ্ছে, ৬’শ থেকে ৯’শ টাকায়। এদিকে এখনো বাজারে আসতে বাকি আরও বেশ কিছু জাতের আম।
পাইকাররা বলছেন, আগামী কয়েক দিনের মধ্যে অন্যান্য জাতের আম উঠলে বেচাকেনা বাড়বে। এবার একদিকে করোনার ভাইরাসের কারণে পরিবহন সমস্যা, অন্যদিকে গাছে গাছে ঝুলে থাকা আম দেখে চাষির স্বপ্ন যখন দুলছিল তখন গত ২২ মে ঘূর্ণিঝড় আম্ফানের প্রভাবে রাজশাহীতে ঝড়-বৃষ্টিতে প্রচুর আম ঝরে যায়।
কৃষি বিভাগের হিসাব অনুযায়ী, সেদিন গাছের ১৫ শতাংশ আম ঝরে পড়েছে। এতে চাষিদের প্রায় ১২০ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। আম্ফান যেতে না যেতেই ২৬ মে দিবাগত রাতে কালবৈশাখীতে ঝরে আরও বেশি ক্ষতি হয়েছে। তাই গতবছরের তুলনায় এবার আম ব্যবসায় কিছুটা ক্ষতির মুখে পড়েছেন বলে জানিয়েছেন বাগান মালিক ও ব্যবসায়ীরা। রাজশাহী জেলায় আম বাগান রয়েছে ১৭ হাজার ৬৮৬ হেক্টর জমিতে। এবার আম উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ২ লাখ ১০ হাজার মেট্রিক টন। অপরিপক্ক আম নামানো ঠেকাতে গেল চার বছরের মতো এবারও আম নামানোর সময় নির্ধারণ করে দিয়েছে জেলা প্রশাসন। সে অনুযায়ী গাছে পাকলেই গত ১৫ মে থেকে সব ধরনের গুটি আম নামানোর সময় শুরু হয়েছে।
গত ২০ মে থেকে গোপালভোগ এবং ২৫ মে থেকে রানীপছন্দ ও লক্ষণভোগ বা লখনা এবং ২৮ মে থেকে হিমসাগর বা খিরসাপাত নামানোর সময় শুরু হয়েছে। এছাড়া ল্যাংড়া ৬ জুন, আমরুপালি ১৫ জুন এবং ফজলি ১৫ জুন থেকে নামানো যাবে। সবার শেষে ১০জুলাই থেকে নামবে আশ্বিনা এবং বারী আম-৪ জাতের আম। আগের বছরের চেয়ে অন্তত ১৫ দিন দেরিতে এ বছর রাজশাহীতে আমের হাট বসেছে।

ফেসবুকে লাইক দিন

তারিখ অনুযায়ী খবর

ডিসেম্বর ২০২৪
শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
« নভেম্বর    
 
১০১১১২১৩
১৪১৫১৬১৭১৮১৯২০
২১২২২৩২৪২৫২৬২৭
২৮২৯৩০৩১  
দুঃখিত! কপি/পেস্ট করা থেকে বিরত থাকুন।