রাজশাহী সিটি কর্পোরেশন পরিষদের ৬ষ্ঠ সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। মঙ্গলবার দুপুর সাড়ে ১২টা থেকে বিকেল পৌনে ৪টা পর্যন্ত নগর ভবনের সিটি হল সভাকক্ষে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন সিটি মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন।
সভাপতির বক্তব্যে মেয়র খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, রাজশাহী মহানগরীর সমন্বিত নগর অবকাঠামো উন্নয়ন শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় নগরীর প্রতিটি ওয়ার্ডের রাস্তা, গলিপথ, ড্রেন নির্মাণ করা হবে। টেকসই উন্নয়ন কাজ বাস্তবায়নের লক্ষ্যে বিভিন্ন ওয়ার্ডের গলিপথসমূহ ঢালাইকাজে স্টোন চিপস, প্রাইমারী, টারশিয়ারি ও সেকেন্ডারী ড্রেন নির্মাণে উন্নতমানের উপকরণ দিয়ে কাজ সম্পন্নে সংশ্লিষ্ট সকলকে দায়িত্বশীল হবার নির্দেশনা প্রদান করেন মেয়র। উন্নয়ন কাজ তদারকি ও মানের বিষয়ে সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ড কাউন্সিলরদের সম্পৃক্ত থাকার অনুরোধ জানান মেয়র।
মেয়র আরো বলেন, আয় বৃদ্ধির লক্ষ্যে দেশের অন্যান্য সিটি কর্পোরেশনের ন্যায় নতুন খাত সৃষ্টিতে রাজশাহী সিটি কর্পোরেশন সিটি কর্পোরেশন কর্তৃক জায়গা ও জমি ক্রয়-বিক্রয় ও সংরক্ষণের উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে। সিটি সেন্টার, স্বপ্নচূড়াসহ নির্মাণাধীন মার্কেটসমূহের কাজ এগিয়ে চলেছে। মার্কেটসমূহ চালু হলে সিটি কর্পোরেশনের স্থায়ী আমানত গঠন করে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতনভাতা পরিশোধ করে আর্থিক দিক দিয়ে আর্থিক বুনিয়াদ শক্ত অবস্থানে পৌছাতে সক্ষম হবে।’
তিনি আরো বলেন, শালবাগান বাজার, নওদাপাড়া বাজারসহ চারটি বাজার নির্মাণে প্রকল্প দাখিল করা হয়েছে। যানজট নিরসনে নগরীর উন্নয়নে বর্ণালী মোড় থেকে বিলসিমলা পর্যন্ত ফ্লাইওভার নির্মাণের পরিকল্পনা করা হচ্ছে। করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সরকারের পাশাপাশি সিটি কর্পোরেশন নানা উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। ত্রাণ ও আর্থিক সহায়তা প্রদান অব্যাহত রেখেছেন। করোনায় আক্রান্তদের সেবায় নমুনা সংগ্রহ, তাদের খাদ্য সহায়তা প্রদান অব্যাহত রেখেছে। এছাড়াও করোনায় সংক্রামন নিয়ে মৃতদের দাফন কাজ সম্পন্নে সহযোগিতা অব্যাহত রেখেছে রাজশাহী সিটি কর্পোরেশন। রাজশাহী সিটি কর্পোরেশন গৃহীত কর্মসূচি বাস্তবায়নে মাঠপর্যায়ে কর্মরত স্বাস্থ্যকর্মীদের আরও দায়িত্বশীল হবার নির্দেশ প্রদান করেন তিনি।
সভায় ২০১৯-২০২০ অর্থ বছরে উন্নয়ন প্রকল্পের ধারাবাহিকতা এবং ২০২০-২০২১ অর্থ বছরে বাস্তবায়নযোগ্য উন্নয়ন প্রকল্প বিষয়ে আলোচনা ও সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। শিশু একাডেমী রাজশাহীর মুক্তমঞ্চ সংস্কারকরণ এবং শেখ রাসেল মুক্তমঞ্চ নামকরণের প্রস্তাব অনুমোদিত হয়। সভায় ২০১৯-২০২০ অর্থ বছরের চতুর্থ কিস্তিতে বকেয়া পৌরকরের উপর ১৫% সারচার্জ মওকুফ প্রসঙ্গে আলোচনা ও সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের বিভিন্ন হাট-বাজার, ফেরীঘাট, গণশৌচাগার এবং ভাগাড়ের সার সংগ্রহের অধিকার ১৪২৭ মেয়াদে ইজারার বিষয়ে আলোচনা ও সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। সভায় ৫ম সাধারণ সভার সিদ্ধান্তসমূহ পাঠ ও দৃঢ়ীকরণ, চারটি বিশেষ সাধারণ সভার সিদ্ধান্তসমূহ পাঠ ও দৃঢ়ীকরণ, বিভিন্ন স্থায়ী কমিটির সভার প্রস্তাব পাঠ ও অনুমোদন করা হয়।
সভার শুরুতে ৫ম সাধারণ সভা হতে ৬ষ্ঠ সাধারণ সভা পর্যন্ত, সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম এমপি, ধর্মপ্রতিমন্ত্রী এ্যাড. শেখ মো. আব্দুল্লাহ, সিলেট সিটি কর্পোরেশনের সাবেক মেয়র বদর উদ্দিন আহমদ কামরান, বগুড়া-১ আসনের সাংসদ কৃষিবিদ আব্দুল মান্নান, সাবেক জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ইসমাত আরা সাবেক, সাবেক ভূমি মন্ত্রী শামসুর রহমান শরীফ, বরেণ্য সংগীতশিল্পী এন্ড্রু কিশোর, রাসিকের সাবেক মেয়র ও এমপি বীর মুক্তিযোদ্ধা দুরুল হুদাসহ সিটি কর্পোরশন এলাকায় বসবাসকারী বীর মুক্তিযোদ্ধা, রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব, বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গের মৃত্যুতে শোকপ্রস্তাব পাঠ ও তাঁদের আত্নার মাগফিরাত কামনায় দোয়া করা হয়। দোয়া পরিচালনা করেন সোনাদিঘি মসজিদের পেশ ইমাম ক্বারী মোঃ মামুনুর রশীদ।
সভা মঞ্চে উপবিস্ট ছিলেন রাসিকের প্যানেল মেয়র-১ ও ১২নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর সরিফুল ইসলাম বাবু, প্যানেল মেয়র-২ ও ১নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর রজব আলী, প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ড. এবিএম শরীফ উদ্দিন, সচিব আবু হায়াত মোঃ রহমতুল্লাহ। সভায় রাসিকের সকল ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও সকল বিভাগীয় ও শাখা প্রধানগণ উপস্থিত ছিলেন।