প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘করোনাভাইরাসের কারণে সব দেশেরই সমস্যা হচ্ছে। কিন্তু এই সমস্যার মধ্য দিয়েই কীভাবে আমাদের দেশের অর্থনীতি এগিয়ে নিয়ে যাওয়া যায় সেদিকে লক্ষ্য রেখে কাজ করতে হবে। আমাদের বিনিয়োগ পরিবেশটাকে আকর্ষণীয় করতে হবে। ’
গতকাল বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্র্তৃপক্ষের (বিডা) গভর্নিং বডির সভার প্রারম্ভিক ভাষণে তিনি এ কথা বলেন।
গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে তিনি সভায় যুক্ত হয়েছিলেন। প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প এবং বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ড. আহমদ কায়কাউস, পিএমও সচিব তোফাজ্জল হোসেন মিয়া এবং প্রেস সচিব ইহসানুল করিম গণভবনে উপস্থিত ছিলেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, অবকাঠামোর উন্নয়ন না হলে দেশে কখনো বিনিয়োগ আসতে পারে না। রাস্তাঘাট থেকে শুরু করে নৌপথ, রেলপথ, আকাশপথে যোগাযোগ উন্নত করার জন্য তার সরকার যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। উন্নয়নটা যাতে একটা জায়গায় না হয়ে সারা বাংলাদেশে হয় সে ব্যবস্থা তার সরকার নিয়েছে। যেখানে দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ সহজে করা যাবে এবং শ্রমিকও খুব সহজে পাওয়া যাবে।
দেশে বিদ্যুতের উদ্বৃত্ত আছে জানিয়ে তিনি বলেন, গ্যাসের সমস্যা সমাধানে নিজেদের গ্যাস উত্তোলনের ব্যবস্থার পাশাপাশি সরকার এলএনজি আমদানির সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বিনিয়োগের ক্ষেত্রে আমরা কর অবকাশের সুবিধা দিয়েছি, সারা বাংলাদেশে একশ অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ গ্রহণ করেছি। শিল্পায়ন ত্বরান্বিত করতে কর রেয়াত দেওয়া হচ্ছে, মূলধনি সরঞ্জাম আমদানির ক্ষেত্রে বিভিন্ন সুযোগ আমরা দিচ্ছি।
তিনি বলেন, করোনাভাইরাসের একটা ধাক্কা আমাদের এসেছে এটা ঠিক, কিন্তু আবার একটা সুযোগও সৃষ্টি হয়েছে। সেটা কিন্তু মাথায় রাখতে হবে। আমাদের আরও বেশি বৈদেশিক বিনিয়োগ আনতে হবে, এটার সুযোগ আছে। অনেক দেশে এখন ইন্ডাস্ট্রি বন্ধ। আমাদের জনসংখ্যা আছে, জমি তৈরি আছে, অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা আছে। এই সুযোগটায় আমরা কিন্তু ইনভেস্টমেন্ট আরও বেশি আকর্ষণ করতে পারি এবং আনতে পারি।
তিনি আরও বলেন, আমরা জাতিসংঘ নির্ধারিত এমডিজি খুব দক্ষতার সঙ্গে বাস্তবায়ন করেছি। এখন এসডিজি (সাসটেইনেবল ডেভেলপমেন্ট গোল) বাস্তবায়নের প্রচেষ্টা চালাচ্ছি। যে কারণে ইতিমধ্যে আমরা কতকগুলো বিষয়ের ওপর গুরুত্ব দিচ্ছি। যার মধ্যে অবকাঠামো উন্নয়ন অন্যতম।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০০৮ সালে আমরা ঘোষণা দিয়েছিলাম ব্যবসা-বাণিজ্য-শিক্ষাÑ সবকিছু সহজ করার জন্য আমরা ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ব। সেই ডিজিটাল বাংলাদেশ করতে পেরেছি বলেই আজ আমরা এই রকম একটা অস্বাভাবিক পরিস্থিতিতেও এখানে বসে বিডার গভর্নিং বোর্ডের সভা করতে পারছি। তিনি প্রাপ্ত সুযোগকে কাজে লাগিয়ে বাংলাদেশকে জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ হিসেবে গড়ে তোলায় আত্মনিবেদনের জন্যও সবার প্রতি আহ্বান জানান।
অর্থমন্ত্রী, শিল্পমন্ত্রী, বাণিজ্যমন্ত্রী, বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী, পরিকল্পনামন্ত্রী, কৃষিমন্ত্রী, বিদ্যুৎ, জ্বালানি এবং খনিজ সম্পদ বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী, গৃহায়ন ও গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রী, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর, সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব এবং সচিব, বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের চেয়ারম্যান, এফবিসিসিআই সভাপতি, চট্টগ্রাম চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি, বাংলাদেশ ওমেন চেম্বার অ্যান্ড কমার্সের সভাপতি অন্যান্যের মধ্যে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সে সংযুক্ত ছিলেন।