জলবায়ু পরিবর্তনজনিত অভিযোজনের সঙ্গে সঙ্গে দরিদ্র ও বিপন্ন জনগোষ্ঠীর প্রতিরোধক্ষমতা বাড়ানোর লক্ষ্যে ওয়াশ (পানি, স্যানিটেশন ও স্বাস্থ্যবিধি) কার্যক্রম ত্বরান্বিত করতে ওয়াটারএইড এবং ইন্টারন্যাশনাল সেন্টার ফর ক্লাইমেট চেঞ্জ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (আইসিসিসিএডি) সমন্বিত উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। পানি ও জলবায়ু নিয়ে ওয়াটারএইডের বৈশ্বিক প্রচারণার অংশ হিসেবে বাংলাদেশে জলবায়ু ও পানি সংকট দূরীকরণে কৌশলগত বিষয়গুলো জোরদার করতে সম্প্রতি অনলাইনে সংস্থা দুটির মধ্যে একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়েছে।
চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে ওয়াটারএইডের কান্ট্রি ডিরেক্টর হাসিন জাহান বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ অন্যতম। বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকায় সাইক্লোন আম্পানের তাণ্ডব দরিদ্র ও বিপন্ন জনগোষ্ঠীর ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির সাম্প্রতিক উদাহরণ, যার ভয়াবহতা আজও আমাদের স্মৃতিতে ভেসে ওঠে। জলবায়ু পরিবর্তন দরিদ্র মানুষের জীবনকে আরো কঠিন করে তুলছে। বিশেষ করে এ পরিস্থিতিতে এরই মধ্যেই নারীদের জীবনকে আরো কঠিন অবস্থার সম্মুখীন করেছে।
তিনি আরো বলেন, আইসিসিসিএডির সঙ্গে এ অংশীদারিত্বের ফলে বাংলাদেশে পানি ও জলবায়ু অভিযোজনকে অগ্রাধিকার দেয়ার ক্ষেত্রে স্থানীয় ও জাতীয় পর্যায়ের সব খাতের সমর্থনকে বেগবান করবে।
আইসিসিসিএডির পরিচালক ড. সালিমুল হক বলেন, জলবায়ু পরিবর্তন প্রতিটি খাতকেই ক্ষতিগ্রস্ত করছে। বিশেষ করে, পানি খাত সামনে আরো বেশি ঝুঁকিতে থাকবে। সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশে এ ক্ষতির প্রভাব হ্রাসে অনেক প্রচেষ্টা পরিলক্ষিত হয়েছে। সরকার থেকে শুরু করে সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা ও গবেষক, আমরা সবাই জলবাযু পরিবর্তনের ক্ষতিকর প্রভাব মোকাবেলায় বিভিন্ন ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করছি।
ক্লাইমেট চেঞ্জ, ডিআরআর অ্যান্ড জেন্ডারের জ্যেষ্ঠ উপদেষ্টা শায়লা শহীদ বলেন, ওয়াশ ও জলবায়ু পরিবর্তনের প্রতিটি স্তরে নারীর ক্ষমতায়নের ওপর আমাদের গুরুত্ব দিতে হবে। কেননা পানি সংকটজনিত সমস্যায় নারীরাই সবচেয়ে বেশি ভুক্তভোগী হয়। নীতি সংক্রান্ত প্রক্রিয়ায় পানি সংকটে ক্ষতিগ্রস্তদের এসব সমস্যার কথা তুলে ধরাই আমাদের মূল লক্ষ্য হওয়া উচিত।
অনুষ্ঠানে বাংলাদেশে পানি ও জলবায়ু পরিবর্তনজনিত সমস্যা মোকাবেলায় সক্ষমতা বাড়ানো এবং এ খাতগুলোয় তরুণদের সম্পৃক্ত করার প্রয়োজনীয়তার কথা আলোচনা করেন হেড অব পলিসি অ্যান্ড অ্যাডভোকেসি ড. আব্দুল্লাহ আল-মূয়ীদ।
ওয়াটারএইড যুক্তরাজ্যের গ্লোবাল ক্যাম্পেইনস ডিরেক্টর ক্লেয়ার সিউড বলেন, বৈশ্বিকভাবে ১০ জন মানুষের ভেতর একজনের তাদের বাড়ির কাছে সাধারণ পানির পাম্প কিংবা ঢাকনাযুক্ত কূপ সুবিধা নেই, যা জলবায়ু পরিবর্তনের ক্রমবর্ধমান প্রভাবের সঙ্গে খাপ খাইয়ে নেয়ার বিষয়টিকে আরো কঠিন করে তুলছে। বেঁচে থাকার জন্য প্রত্যেকেরই পানির প্রয়োজন। আর এ কারণেই আমরা জলবায়ু পরিবর্তনজনিত প্রভাব মোকাবেলার ক্ষেত্রে বিশ্বের সব সরকার ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে তাদের কর্মপরিকল্পনায় সুপেয় পানি ও স্যানিটেশনের বিষয়গুলোকে অন্তর্ভুক্ত করার আহ্বান জানাই।