মোঃ মনিরুল ইসলাম নাচোল(চাঁপাইনবাবগঞ্জ):-
চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোলে ৭মে বৃহস্পতিবার রাতে হুজুর সেজে আবারো ধর্ষণ মামলার পলাতক এক আসামিকে গ্রেফতার করেছে নাচোল থানার এসআই সোহেল রানা। গ্রেফতারকৃত ব্যক্তি হচ্ছে চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোল উপজেলার নেজামপুর ইউপির নেজামপুর কাঁঁঠালিয়া পাড়ার মৃত: দবির উদ্দিনের ছেলে সেলিম রেজা(২৬)।
পুলিশ ও সংশ্লিষ্ট সুত্রে জানাগেছে,গত ৮মাস পূর্বে গ্রেফতারকৃত ব্যক্তির সহিত একই উপজেলার এক মেয়ের পরিচয় ঘটে। সেই সুবাদে গ্রেফতারকৃত ব্যক্তি ঐ মেয়েকে ঢাকার আশুলিয়ার কাশিমপুর এলাকার একটি Exsaco Limited কোম্পানিতে চাকুরি পাইয়ে দেয়। আটক ব্যক্তি সেলিম রেজা ঢাকায় সেই মেয়েটি কে বিয়ে করবে বলে দৈহিক সম্পর্ক করার প্রস্তাব দেয়। কিন্তু মেয়েটি সেলিম রেজার কুপ্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় মেয়েটিকে নানা ভাবে হুমকি দিতে থাকে। ফলে ঘটনার এক পর্যায়ে মেয়েটি ঢাকা থেকে চাকুরি ছেড়ে গত নভেম্বর মাসে /১৯ নিজ বাড়ি নাচোল এলাকায় চলে আসে। পরে গত ২৩/০৩/২০ইং বিকালে মেয়েটি কসমেটিক্স বাজার করার সময় নেজামপুর বাজারের আতাউর কসমেটিক্স দোকানে আটক সেলিম রেজার সাথে দেখা হয়। সেখানে মেয়েটি কে সেলিম রেজা বলে, নতুন একটি চাকুরির খবর আছে,যদি তুমি করতে চাও তাহলে আমার বাসায় চাকুরির পত্রিকাটি আছে সেটি নিয়ে যাও। সরল বিশ্বাসে মেয়েটি সেদিন সন্ধ্যায় সেলিম রেজার বাড়িতে যাই এবং সেখানে গিয়ে দেখে তাঁর বাড়িতে কোন লোকজন নাই। মেয়েটি আটক সেলিম রেজা কে জিঙ্গাসা করে যে বাড়িতে তোমার মা বাবা ভাইবোন কেউ নাই! সেলিম রেজা মেয়েটিকে বলে সবাই একটু পরে বাসায় চলে আসবে। কিছুক্ষণ পরে সেলিম রেজা মেয়েটি কে তাঁর বেডরুমে নিয়ে গিয়ে ছাপের খাটে বসতে দেয়। তখন ঘড়ির কাটা বেজে সাতটা। ঘটনার এক পর্যায়ে মেয়েটি পত্রিকা পড়তে থাকলে আটক সেলিম রেজা বাইরের দরজা বন্ধ করে মেয়েটি কে চাপটে ধরে ধর্ষণের চেষ্টা করলে মেয়েটি চিৎকার শুরু করে এবং বাঁধা দেওয়ার চেষ্টা করলে সেলিম রেজা মেয়েটির মুখ চেপে ধরে বলে আমি তোমাকে বিয়ে করব বলে মেয়েটিকে ধর্ষণ করে। ধর্ষণের পর ধর্ষক সেলিম রেজা রাত আনুমানিক ৮টার দিকে মেয়েটি কে নেজামপুর বাজারে পৌঁছে দিয়ে পালিয়ে যাই। পরের দিন সকালে মেয়েটি সেলিম রেজা কে ফোন দিয়ে বিয়ে করার কথা বললে দিনের পর দিন কালক্ষেপন করতে থাকে। পরে মেয়েটি বুঝতে পারে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে সেলিম তাঁকে ধর্ষণ করেছে। এ বিষয় নিয়ে মেয়েটি এপ্রিল মাসে নাচোল থানায় সেলিমের বিরুদ্ধে একটি লিখিত এজাহার দাখিল করেন। থানায় এজাহার দাখিলের পর ধর্ষক সেলিম গা ডাঁকা দেয়। পরে মেয়ের অভিযোগের ভিত্তিত্বে নাচোল থানার এসআই সোহেল রানা ধর্ষক সেলিম রেজা কে ধরার জন্য পুলিশি অভিযান অব্যাহত রাখে। বৃহস্পতিবার নাচোল থানার এসআই সোহেল রানা গোপন সংবাদের ভিত্তিত্বে জানতে পারে যে নেজামপুর বাজারে ধর্ষক সেলিম রেজা এক মসজিদে তারাবির নামায আদায় করছে। পরে নাচোল থানার এসআই সোহেল রানা হুজুর সেজে সেই মসজিদে নামায আদায় করে গেটে অবস্থান করে। মসজিদ থেকে বের হওয়ার পর ধর্ষক সেলিম রেজা কে হাতেনাতে আটক করে থানায় নিয়ে আসে।
এ বিষয়ে নাচোল থানার উপ -পরিদর্শক সোহেল রানা জানান,৭মে বৃহস্পতিবার রাতে গোপন সংবাদের মাধ্যমে জানতে পারি যে,নেজামপুর বাজারে ধর্ষক সেলিম রেজা এক মসজিদে তারাবির নামায আদায় করছে। পরে আমি সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে হুজুর সেজে সেই মসজিদে নামায আদায় করে গেটে অবস্থান করি। মসজিদ থেকে বের হওয়ার পর ধর্ষক সেলিম রেজা কে হাতেনাতে আটক কে থানায় নিয়ে আসি।
এ বিষয়ে নাচোল থানার ওসি সেলিম রেজার সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি চাঁপাই প্রতিদন কে বলেন,কিছু দিন আগে নাচোল থানায় নেজামপুর এলাকার এক মেয়ে ধর্ষণের এজাহার দাখিল করেন। এর পর থেকে ধর্ষক সেলিম পলাতক ছিলো। তাকে গ্রেফতার করতে থানার এসআই সোহেল রানা আবারো অভিনব কৌশল অবলম্বন করেন। তিনি হুজুরের ছদ্মবেশে নেজামপুুর এলাকা থেকে বৃহস্পতিবার রাতে ধর্ষক সেলিম কে আটক করে। শুক্রবার সকালে নাচোল থানার ধর্ষণ মামলায় আটক সেলিম কে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে প্রেরণ করা হবে।
নাচোল উপজেলার সচেতন মহল মনে করছে নাচোল থানার উপ -পরিদর্শক সোহেল রানা করোনা ভাইরাস উপেক্ষা করে এক সপ্তাহে ২টি ধর্ষণ মামলার ২জন পলাতক আসামি ধরা চাঁপাইনবাবগঞ্জ পুলিশের জন্য গর্বের বিষয়। তিনি কৃতিত্ব পাওয়ার দাবিদার।
উল্লেখ্য যে গত সোমবার বিকালে নাচোল থানার আরেক ধর্ষণ মামলার আসামি মানিক কে নওগাঁ জেলার মহাদেবপুর এলাকা থেকে নাচোল থানার এসআই সোহেল রানা গ্রেফতার করে।