• ঢাকা
  • মঙ্গলবার, ২৯শে মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১১ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ ইং
কেউ উন্নয়নের কথা বলে নদী দখল করতে পারবে না – নৌ প্রতিমন্ত্রী

নদীর জমিতে বা অবৈধ দখল নিয়ে কোন উন্নয়ন কর্মকাণ্ডকে সরকার কখনো প্রশ্রয় দেয় না বলে জানিয়েছেন নৌ পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী। নদীর জায়গা দখল করে বা অবৈধ জায়গায় আমরা কোন উন্নয়ন কর্মকাণ্ড পরিচালনা করতে চাইনা।

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনা দেশে সুশাসন প্রতিষ্ঠা করার লড়াইয়ের মধ্যে আছেন। আমাদের কথা স্পষ্ট, উন্নয়নের কথা বলে কেউ নদীর জায়গা দখল করে পার পাবে না।

মঙ্গলবার রাজধানীর শ্যামপুরে বিআইডব্লিউটিএ’র ভাসমান ডক পরিদর্শনকালে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন নৌ প্রতিমন্ত্রী। এ সময় অন্যান্যের মধ্যে বিআইডব্লিউটিএ’র চেয়ারম্যান কমডোর গোলাম সাদেক উপস্থিত ছিলেন।

ঢাকার এক সংসদ সদস্যের ৫৪ একর জায়গা দখলের বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নে নৌ প্রতিমন্ত্রী বলেন, গত
মার্চ মাসে আমরা নদীর জায়গার সীমানা চিহ্নিত করেছি। সরকার যখন চিহ্নিত করে দেয়, তখন কিন্তু সরকারের
নিয়ন্ত্রণে চলে আসে। বিদ্যুত বিভাগ বা পাওয়ার প্ল্যান্টের সঙ্গে আমাদের কোন বিরোধ নেই। নদীর যে জায়গা আছে, আমরা সেটা নদীকে দিয়ে দিতে চাই।

নদীর জায়গায় পাওয়ার প্ল্যান্ট তৈরি করা হয় নাই। পাওয়ার প্ল্যান্টের সামনের জায়গাটা ভরাট করে ব্যবহারের চিন্তা ভাবনা ছিল। তার আগেই আমরা সে কাজ (নদীর জায়গা চিহ্নিত) করে ফেলেছি।

এ বিষয়ে প্রতিমন্ত্রী আরো বলেন, ৫৪ একরের যে কথাটা বলা হচ্ছে, ৫৪ একরের সঙ্গে বিআইডব্লিউটিএ বা নৌ মন্ত্রণালয়ের কোন সম্পর্ক নেই। আমাদের ৮ একরের বাইরের যে জায়গাটা- ৪৬ একর- রাজউকের। রাজউক বলছে এ
জায়গাটা জলাশয় ছিল, জলাশয়ের মধ্যে পাওয়ার প্ল্যান্ট করা হয়েছে। বিরোধটা আসলে আমাদের সঙ্গে না, রাজউকের
সঙ্গে।

আমাদের সঙ্গে যেটা বিরোধ ছিল, আমরা মার্চ মাসে সীমানা দিয়ে দিয়েছি। সরকার যখন চিহ্নিত করে ফেলে, আর পরিবর্তন করার সুযোগ নেই। পরিবর্তন করতে পারে আদালত। ৮ একর জায়গা নদী ফেরত পাবেই। এখানে কোন ঝগড়া-ঝাটি, বিবাদের কোন বিষয় নাই।

মহামান্য আদালত বিআইডাব্লিউটিএ’র কার্যক্রমে অসন্তুষ্ট না, আমার ধারণা দেশবাসীও আমাদের কার্যক্রমে সন্তুষ্ট। তিনি
বলেন, সার্ভেতে ৮ একরের কথা বলা হয়েছে। বিষয়টি আদালত পর্যন্ত গড়িয়েছে। আদালতকে টপকিয়ে আমরা কিছু করতে পারিনা। ৮ একরের বাইরে আদালত বললে আমরা উচ্ছেদ করব। তিনি বলেন, কে কোথায় অন্ধকারে ঢিল
ছুড়ছে সরকার সেদিকে দৌঁড়ায় না; সরকার দৌঁড়ায় একটি সঠিক পথ ধরে।

ভাসমান ডকইয়ার্ডের বিষয়ে তিনি বলেন, বাংলাদেশে যে আমাদের এ ধরনের একটি ডকইয়ার্ড আছে, যারা ইমার্জেন্সি এ ধরনের জাহাজ মেরামতের কাজ করে এবং অনেক সময় অনেক জাহাজ মাঝ নদীতে নষ্ট হয়ে যায়, সেখানে মুভ করা যায় না। আমাদের ডকইয়ার্ড সেখানে মুভ করে সেটা মেরামত করে। এমন একটি জাহাজ আজকে তারা মেরামত করে নদীতে ভাসিয়ে দিল।

শ্যামপুরে গতকাল ভাসমান ডকে বিআইডব্লিউটিএ’র জাহাজ ‘ধ্রুবতারা’ এর আনডকিং করা হয়। ধ্রুবতারা জাহাজ দিয়ে অভ্যন্তরীণ এবং উপকূলীয় নৌপথের বিভিন্ন রুটে নির্বিঘ্নে জাহাজ চলাচলের জন্য বয়া-বিকন স্থাপন ও প্রতিস্থাপনের কাজ করা হয়ে থাকে।

বিআইডব্লিউটিএ’র ভাসমান ডকটি ১৯৬৭ সালে জার্মানীতে নির্মাণ করা হয় এবং ১৯৬৮ সালে বাংলাদেশে নিয়ে আসা হয়। ভাসমান ডকটিতে একটি ৫ টন ক্ষমতা সম্পন্ন ক্রেন, দু’টি ১৫০ কেভিএ জেনারেটর, ০৪টি ক্যাপষ্টান রয়েছে। জলযান ডকিং এর পর মেরামত কাজ করার জন্য ১৩টি ওয়েল্ডিং রেগুলেটর রয়েছে। ডকটিতে যে কোন জলযানের আন্ডার ও ওয়াটার অংশ এবং প্রপালশন ইউনিটসহ যেকোন অংশের মেরামত কাজ করা খুবই সুবিধাজনক। ৮০০ টন পর্যন্ত ওজনের যে কোন ফ্লোটিং স্ট্রাকচার যার দৈর্ঘ্য ও প্রস্থ ভাসমান ডকের রানওয়ের বেশি নয় সে সকল জাহাজ, ড্রেজার, বার্জ পন্টুন ইত্যাদি ভাসমান ডকে ডকিং এবং আন-ডকিং করা যায়।

ভাসমান ডকটি ২০০২ সালে বরিশাল থেকে নিয়ে এসে ঢাকার শ্যামপুরে স্থাপন করা হয়। ২০১০ সাল থেকে ২০২০
সাল পর্যন্ত এ ডকটিতে ৭৫টি জলযান ডকিং এবং আন- ডকিং করা হয়েছে। ভাসমান ডকটি বিআইডব্লিউটিএ’র তথা বাংলাদেশের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা।

ফেসবুকে লাইক দিন

তারিখ অনুযায়ী খবর

ফেব্রুয়ারি ২০২৫
শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
« জানুয়ারি    
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
দুঃখিত! কপি/পেস্ট করা থেকে বিরত থাকুন।