• ঢাকা
  • মঙ্গলবার, ২১শে কার্তিক, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ৫ই নভেম্বর, ২০২৪ ইং
বকশীগঞ্জে শিক্ষক নেতাদের খপ্পরে উপজেলা শিক্ষা অফিস, অসহায় শিক্ষা কর্মকর্তা

জামালপুরের বকশীগঞ্জ উপজেলা শিক্ষা অফিস এখন দুর্নীতির আখড়াতে পরিণত হয়েছে। এই অফিসে দুর্নীতির ওপেন সিক্রেট । উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তাকে জিম্মি করে কিছু শিক্ষক নেতা প্রকাশ্যে দুুর্নীতি করে যাচ্ছেন।

ওই সব শিক্ষক নেতাদের দৌরাত্মে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছেন সাধারণ শিক্ষকরা। তাদের বিরুদ্ধে মুখ খুললেই সাধারণ শিক্ষকদের রোষানলে পড়তে হয়। ওই শিক্ষকদের কাছে অসহায় হয়ে পড়েছেন উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা ও অফিসের অন্যান্য কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা। বলা যায় ওই শিক্ষক নেতারা উপজেলা শিক্ষা অফিসকে গিলে খাচ্ছেন। তাদের নিকট অসহায় হয়ে পড়েছেন উপজেলা শিক্ষা অফিসার রশিদা বেগম।

জানা গেছে, গত বছরের ডিসেম্বরে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা অরুনা রায় অবসর জনিত বিদায়ের পর বর্তমান উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা রশিদা বেগম দায়িত্ব গ্রহণ করেন। বরাবরের মত তাকেও জিম্মি করে সুবিধা নেওয়ার জন্য উপজেলার চিহ্নিত ৫ জন শিক্ষক নেতা ওঠেপড়ে লাগে। ওই ৫ জন শিক্ষক নেতা প্রতিনিয়ত কৌশলে সাধারণ শিক্ষকদের ভয় দেখিয়ে হয়রানি করে থাকেন।

ওই ৫ জন বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তাদের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ শিক্ষা অধিদপ্তর, জেলা শিক্ষা অফিসে দায়ের রয়েছে। কিন্তু অদৃশ্য শক্তির বলে তারা বার বারই পার পেয়ে গেছেন। তারা একদিন বিদ্যালয়ে উপস্হিত হয়ে পুরো সপ্তাহের হাজিরা দিয়ে থাকেন। তারা সারাদিন উপজেলা কর্মকর্তার কাযার্লয়ে , চায়ের দোকানে অবস্হান করে থাকেন।

উপজেলা শিক্ষা অফিস তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্হা নেওয়ার সাহস দেখাতে পারেন না বলে অভিযোগ রয়েছে। ওই শিক্ষক নেতাদের দৌরাত্ম্যে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছেন সাধারণ শিক্ষকরা। তারা শিক্ষা অফিসকে জিম্মি করে দিনের পর দিন ক্লাস না করেও পার পেয়ে যাচ্ছেন। কোন সাধারণ শিক্ষক তাদের কথা না শুনলে তাকে হয়রানি করতে শিক্ষা অফিসকে ব্যবহার করছেন বলেও অভিযোগ রয়েছে। অভ্যন্তরীন বদলিতেও রয়েছেও তাদের হাত। এ নিয়ে শিক্ষকদের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনাও ঘটেছে।

চতুর্থ প্রাথমিক শিক্ষা উন্নয়ন কর্মসূচি (পিইডিপি) আওতায় গত ২০১৯-২০২০ অর্থ বছরে উপজেলার ১১০ টি বিদ্যালয়ের স্লিপ প্রকল্প ও ক্ষুদ্র মেরামত কাজের জন্য সরকার বরাদ্দ দেয়। ৮ টি বিদ্যালয়ে দেড় লাখ টাকা করে মোট ১২ লাখ এবং ৩ টি বিদ্যালয়ে ২ লাখ টাকা করে ৬ লাখ টাকা উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা রশিদা বেগম তার ব্যাংক একাউন্টে রেখে দেন। গত ৩০ জুনের মধ্যে সকল বিদ্যালয়ের কাজ শেষ করার কথা থাকলেও কাজ না করেই ভূয়া ভাউচার দাখিল করে সরকারি সেই টাকা উত্তোলন করেন উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা।

উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা রশিদা বেগম শিক্ষকদের বাঁচাতে ব্যাকডেট দিয়ে সেই টাকা গুলো উত্তোলন করেন।

এখানেও দুর্নীতির আশ্রয় নিয়েছেন ওই শিক্ষকরা। চিহ্নিত ওই শিক্ষকরা বিভিন্ন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকদের কাছ থেকে ৬ থেকে ৮ হাজার টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন । তা না হলে বিল পাবে না বলেও হুমকি দেওয়া হয়।

এ বিষয়ে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা রশিদা বেগম জানান, ৩০ জুনের আগে প্রকল্প গুলোর কাজ সম্পন্ন করা সম্ভব হয় নি। তাই তিনি টাকা গুলো উত্তোলন করে শিক্ষা কর্মকর্তার একাউন্টে টাকা গুলো জমা রেখেছেন। তা না হলে সরকারি টাকা গুলো ফেরত যেত বলেও তিনি জানিয়েছেন।

তবে কিছু শিক্ষকরা প্রয়োজনে-অপ্রয়োজনে তার অফিসে আনাগোনা করেন বলেও স্বীকার করেন তিনি।

ফেসবুকে লাইক দিন

তারিখ অনুযায়ী খবর

নভেম্বর ২০২৪
শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
« অক্টোবর    
 
১০১১১২১৩১৪১৫
১৬১৭১৮১৯২০২১২২
২৩২৪২৫২৬২৭২৮২৯
৩০  
দুঃখিত! কপি/পেস্ট করা থেকে বিরত থাকুন।