তারিখঃ ৯ এপ্রিল ২০২২
সঞ্জিব দাস, গলাচিপা (পটুয়াখালী) প্রতিনিধিঃ
পটুয়াখালীর গলাচিপায় প্রধানমন্ত্রীর ঘরের আশায় অসহায় পরিবারটি স্বপ্ন বুনছে। উপজেলার গোলখালী ইউনিয়নের মধ্য হরিদেবপুর গ্রামের মালতী রানী (৩৫) এর পরিবার অসহায় জীবনযাপন করছে। অন্যের বাড়িতে আশ্রিত থেকে চলছে তাদের বসবাস। জানা যায়, গোলখালী ইউনিয়নের দুই নম্বর ওয়ার্ডের কেশব চন্দ্র দাসের স্ত্রী মালতী রানী। তার পরিবারের সদস্য সংখ্যা ৪ জন। বিগত পাঁচ বছর পূর্বে মাছ ধরতে রামনাবাদ নদীতে গেলে জালসহ তাদের একমাত্র ছেলে কমল দাস (১৯) পানিতে ডুবে মারা যায়। সেই শোক এখনো কাটিয়ে উঠতে পারেনি পরিবারটি। দুই কন্যা সন্তানকে নিয়েই তারা ভবিষ্যতের স্বপ্ন দেখছে। কিন্তু মালতী রানীর স্বামী কেশব চন্দ্র দাসের একমাত্র আয়ে সংসার চলছে খুব কষ্ট করে। তাদের মেয়েদের লেখাপড়া করানো অসম্ভব হয়ে পড়েছে। কেশব দাস অন্য মানুষের পানের বরে কাজ করে। তাদের ছোট মেয়ে অপু রানী হরিদেবপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী। পড়ালেখা চালাতে না পেরে বড় মেয়েকে বিবাহ দিয়ে দেন। এ বিষয়ে কেশব চন্দ্র দাস জানান, আমার জন্মের পরেই দারিদ্রতা আমাদের নিত্য সঙ্গী। আশা ছিল ছেলেটা আমার সাথে সংসারের হাল ধরবে। কিন্তু সর্বনাশা নদী আমার ছেলেটাকে কেড়ে নিয়েছে। এখন আমি একা অসহায় হয়ে পড়েছি। আমি অসুস্থ থাকলে ঘরের উনুন জ¦লে না। সে দিন না খেয়ে থাকতে হয়। আমার দুই শতাংশ জায়গা থাকলেও টাকার অভাবে তাতে ঘর তোলা হয় নি। তাই বাধ্য হয়ে অন্যের ঘরে আশ্রিত হিসেবে থাকি। কিন্তু নিজের ঘর না থাকলে তো পরাধীন ব্যক্তির মতো মনে হয় নিজেকে। তাই মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার একটি ঘর পেলে বাকি জীবনটা সুখে কাটাতে পারতাম। অন্য মানুষের বাড়িতে আর কতদিন থাকব।এ বিষয়ে কেশব চন্দ্র দাসের স্ত্রী মালতী রানী জানান, আমার স্বামীর রোজগারে আমাদের সংসার চলে। থাকি অন্য মানুষের বাসায়, খুব কষ্টে। অন্য মানুষের বাড়িতে থাকি বলে প্রায় সময়ই তাদের কথা শুনতে হয়। আমারকে যদি সরকারীভাবে একটি ঘর দিত তাহলে আমরা সরকারের কাছে চির ঋণী থাকতাম। এ বিষয়ে গোলখালীর হরিদেবপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষিক বিল্পব রায় বলেন, অপু রানীর ভাই কমল দাসের মৃত্যুর পরে বাবা-মা অনেক কষ্ট করেন। তাদের পরিবার মানবেতর জীবন যাপন করছেন। সরকারীভাবে তাদেরকে একটি ঘর দিলে পরিবারটির অনেক উপকার হবে। গোলখালী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি খালেক মাস্টার বলেন, মালতী রানীর দুই শতক জমি থাকলেও নিজের কোন ঘর নেই। সরকারীভাবে একটি ঘর তারা প্রাপ্য। এ বিষয়ে ইউপি সদস্য মো. রবিউল মৃধা বলেন, আমার ওয়ার্ডে ওদের মত অসহায় খুব কম লোকই আছে। বাপ-দাদার দুই শতক জমি আছে। টাকা না থাকায় সেখানে কোন ঘর তুলতে পারে নাই। তাদের একটি ঘর খুব প্রয়োজন। গোলখালী ইউপি চেয়ারম্যান মো. নাসিরউদ্দিন হাওলাদার বলেন, মালতী রানীর পরিবার আসলেই অসহায়। তার স্বামী অন্য মানুষের সাথে পানের বরে কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করছে। সরকারীভাবে মালতী রানীর পরিবার একটি ঘর পেলে তারা সুন্দরভাবে জীবন যাপন করতে পারবে।