দেশের সকল এমপিওভুক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বেতন, ভর্তি ফি, সেশন ফি এবং বোর্ড পরীক্ষার ফরমপূরণ ফিসহ যাবতীয় আয়-ব্যয়ের স্বচ্ছতা নিশ্চিতে নীতিমালা প্রণয়ন করতে যাচ্ছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
বৃহস্পতিবার (১০ ডিসেম্বর) শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনির সভাপতিত্বে ‘এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের আয় ও ব্যয় সংক্রান্ত নীতিমালা ২০২০’ নামের একটি খসড়া নীতিমালা চূড়ান্ত করতে এক ভার্চুয়াল সভায় এ তথ্য জানানো হয়।
এ সময় জানা গেছে, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশেই এই নীতিমালা প্রণয়ন করা হচ্ছে। এ নীতিমালা বাস্তবায়ন হলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোকে নির্ধারিত ব্যাংক হিসাবের মাধ্যমে সব ধরনের ফি ও বেতনের অর্থ আদায় করতে হবে। ফলে কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান শিক্ষার্থীর কাছ থেকে নগদ অর্থ আদায় করতে পারবে না। এমপিওভুক্ত সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এ নীতিমালা কার্যকর হবে।
এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের আয় ও ব্যয় সংক্রান্ত নীতিমালা বলা হয়েছে, সকল এমপিওভুক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের শিক্ষার্থীর মাসিক টিউশন ফি ও বেতন নির্ধারিত ব্যাংক হিসাবের মাধ্যমে গ্রহণ করবে। কর্তৃপক্ষ কোন ভাবেই নগদ অর্থ আদায় করতে পারবে না। ফলে সকল প্রতিষ্ঠানকে ব্যাংক হিসাব চালু করতে হবে। স্কুলের ম্যানেজিং কমিটি এবং কলেজ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের গভর্নিং বডির সভাপতির নেতৃত্বে তিনজন জ্যেষ্ঠ শিক্ষকের সমন্বয়ে একটি অর্থ কমিটি গঠন করতে হবে। কলেজের সেই সকল জ্যেষ্ঠ শিক্ষকরা সব ধরনের ফি ও বেতন আদায় সম্পর্কিত মাসিক প্রতিবেদন কমিটি বরাবর দাখিল করবে।
নীতিমালায় আরও বলা হয়েছে, প্রতিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ অথবা প্রধান শিক্ষক প্রতি মাসের শুরুতে দৈনন্দিন কার্যক্রম পরিচালনায় প্রয়োজনীয় অর্থের জন্য রিকুইজিশন (আবেদন) দেবেন, রিকুইজিশনের সঙ্গে পূর্ববর্তী মাসের বিল ভাউচারসহ হিসাব বিবরণীও দাখিল করতে হবে। পরে অর্থ কমিটি যাচাই-বাছাই করে সে অর্থ প্রদান করবে। গভর্নিং বডির কাছে উপস্থাপনের জন্য সকল বিল ভাউচার সংরক্ষণ করে রাখতে হবে।
এমপিওভুক্ত স্কুল-কলেজের তিনজন শিক্ষকের সমন্বয়ে একটি অভ্যন্তরীণ অডিট কমিটি গঠন করতে হবে। অডিট কমিটি পরের বছরের ৩১ জানুয়ারির মধ্যে নিরীক্ষা প্রতিবেদন প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজিং কমিটি এবং মাউশিতে জমা দেবে। নীতিমালায় আরও উল্লেখ করা আছে যে, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের অর্থ কমিটির সভাপতি ও অপর একজন সদস্যের যৌথ স্বাক্ষরে কলেজের হিসাব পরিচালিত হবে।
সভায় শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব মো. মাহবুব হোসেন, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতরের (মাউশি) মহাপরিচালক অধ্যাপক গোলাম ফারুকসহ সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।