• ঢাকা
  • মঙ্গলবার, ২৩শে জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ, ৬ই জুন, ২০২৩ ইং
Mujib Borsho
Mujib Borsho
চরভদ্রাসনে মধ্যবিত্ত পরিবারে নিরব হাহাকার

চরভদ্রাসনে মধ্যবিত্ত পরিবারে নিরব হাহাকার

মো.মনির হোসেন পিন্টু,চরভদ্রাসন(ফরিদপুর)প্রতিনিধি:     কষ্টগুলো প্রকাশ করতে মানা আর জীবনের কোন ক্রান্তিলগ্নে খুব কান্না এলে তাতেও যেন মানা। কাঁদলেও কাঁদতে হবে নিরবে নিভৃতে। এককথায় মধ্যবিত্ত পরিবারগুলোতে জন্মগ্রহন করা মানুষের জীবনের গল্প ঠিক এমনই।

বর্তমানে সারাবিশ্বে ছড়িয়ে পরা করোনা ভাইরাসের সংক্রমন রোধে গত কয়েকদিন ধরে চরভদ্রাসনে ঔষধ ও নিত্যপন্য ছাড়া সব ধরনের দোকানপাট অনিদির্ষ্ট কালের জন্য বন্ধ ঘোষনা করা হয়েছে। সেই সাথে বন্ধ হয়ে গেছে মধ্যবিত্ত পরিবারের আয় রোজগার।

প্রশাসনের নির্দেশ মেনে বাজারে ভাড়া নেয়া দোকানটি বন্ধ রয়েছে। খুব বেশি প্রয়োজন ছাড়া ঘর থেকে বের হতে মানা। তারপর পরিবারের খাবার সংগ্রহের জন্য বাজারে আসতে বাধ্য হন অনেকেই।

এদিকে, উপজেলার অনেক ছোট-বড় ব্যবসায়ীই পরিবার নিয়ে বেচেঁ থাকার জন্য নিজের কাছে জমানো সামান্যে পুজিঁ ও লোন করে ঘর মালিককে অগ্রিম টাকা দিয়ে দোকান ভাড়া নিয়ে ব্যবসা করে আসছিলেন। এতে তাদের মাথার উপর প্রতিদিন ভর করছে বাড়তি ঋণের বোঝার চাপ।  আর সেই সাথে পরিবারের রোজগারের চিন্তা, বোবা কান্না ছাড়া কোন উপায় থাকে না মধ্যবিত্তদের। এমতাবস্থায় কোনমতে চালাতে হচ্ছে তাদের সংসার।

তারপর রয়েছে সন্তানদের বিভিন্ন ধরনের বায়না। প্রতিদিনই কোনমতে এগুলো ম্যানেজ করতে হয়। কিন্তু এভাবে চলতে থাকলে সামনে চলে আসে মধ্যবিত্তদের বিপদের আংশঙ্খা ও হাহাকার। দুর্বিসহ হয়ে ওঠে জীবন-যাপন। অনেকে হয়তো কারো কারো বন্ধু-আত্নীয় ও পরিচিতদের কাজ থেকে ধার করে পরিবারের জন্য খাবার জোগার করে থাকে। আবার কেও কেও হয়তো না পরিবার নিয়ে না খেয়েই লোকলজ্জার ভয়ে ভালো থাকার অভিনয় করে দিরপার করে চলেছে। এসময় খুব বেশি কাছের ও পরিচিত না হলে টাকাও ধার দিতে চায়না অনেকেই।

চরভদ্রাসন সদর বাজারের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ফটোকপি ও ফেক্সিলোড ব্যবসায়ী জানান,  গত পনেরো দিন ধরে আমার ব্যবসা-প্রতিষ্ঠানটি বন্ধ রয়েছে। ছোট হলেও দোকানের আয়ের টাকা দিয়েই সংসার চলতো আমার। ভাই-বোন, স্ত্রী, সন্তান ও বোনকে নিয়ে পরিবার তার। কোনো সঞ্চয়-ব্যাংক হিসাব নেই তার। তিনি জানান, বর্তমান করোনা পরিস্থিতিতে সংসার চালানোটা খুব কষ্ট হয়ে যাচ্ছে। হাতে যা কিছু টাকা ছিল তা দিয়েই বর্তমানে চলছি। দেশের অবস্থা এমন চলতে থাকলে আগামী দিনগুলো যে পরিবার নিয়ে কিভাবে চলবো ভেবে পাচ্ছিনা।

করোনা পরিস্থিতির কারণে কিভাবে দোকান ঘর ভাড়া দেবেন, কীভাবে সংসার চালাবেন ভাবতেই সে হিমিসিম খেয়ে উঠছেন। কিন্তু কাউকে এমন কষ্টের কথা কাউকে বলতেও পারছেন না। আবার ত্রান ও খাদ্যসামগ্রীর জন্য লাইনে দাড়াঁতেও পারছিনা।  তিনি আক্ষেপ করে বলেন, ‘বড় লোকের টাকার অভাব নেই। গরীবরা ত্রাণ পায়। আর মধ্যবিত্তরা না খেয়ে চোখের পানি লুকায়’।

সদর বাজারের আরেক ঔষধ দোকান ব্যবসায়ী জানান, করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে সারাদেশে সবকিছু বন্ধ হয়ে যাওয়ায় এই মুহূর্তে গৃহবন্দি সাধারণ মানুষ। নিম্ন আয়ের মানুষের হাতে ত্রান-খাদ্যসামগ্রী এবং প্রয়াজনীয় দ্রব্য তুলে দিচ্ছেন অনেকেই। বড়লোকদের ব্যাংকে জমানো টাকা দিয়ে ভালো ভাবেই পরিবার নিয়ে সংসার চলছে তাদের। তবে মধ্যবিত্তের পাশে নেই কেউ। ঘরে খাবার না থাকলেও মধ্যবিত্তরা লজ্জায় কিছু বলতে পারছে না। মধ্যবিত্তরা পারছেনা মাঠে শ্রমিকের কাজ করতে, রিক্সা চালাতে, না পাচ্ছে সরকারি-বেসরকারি ও কোনো স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের ত্রাণ ও খাদ্যসামগ্রী সহায়তা। একমাত্র আমরা মধ্যবিত্ত পরিবারের লোকজনেরাই শুধুমাত্র বর্তমান সময়ে অতি কষ্টে মানবেতর দিনযাপন করে চলেছি বলে তিনি জানান।

ফেসবুকে লাইক দিন

তারিখ অনুযায়ী খবর

জুন ২০২৩
শনিরবিসোমমঙ্গলবুধবৃহশুক্র
« মে  
 
১০১১১২১৩১৪১৫১৬
১৭১৮১৯২০২১২২২৩
২৪২৫২৬২৭২৮২৯৩০
দুঃখিত! কপি/পেস্ট করা থেকে বিরত থাকুন।