চিরচেনা রাজশাহী এখন অচেনা, রাস্তা-ঘাট জনমানব শূন্য, সর্বত্র ফাঁকা
নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী :করোনা ভাইরাস থেকে বাঁচতে রাজশাহীকে অঘোষিত লকডাউন করে রেখেছে প্রশাসন। অঘোষিত এই লকডাউন শুরু হবার পর থেকেই চিরচেনা এই শহরের জনজীবনে বড় ধরনের পরির্বতন দেখা দিয়েছে। নগরীর সবখানেই বিরাজ করছে থমথমে ভাব।মেইন রাস্তায় কোন লোকজন নেই,রাস্তার বেশ কয়টি জায়গায় দাড়িয়ে আছে ২/১ টা ট্রাফিক পুলিশ মাঝে মাঝেই সেনাবাহিনী ও পুলিশের টহল চলছে,কোথাও আবার দেখা যাচ্ছে ভ্রাম্যমান আদালতের গাড়ী।রাজশাহী মহানগরীতে বাইরে থেকে কেউ যেন প্রবেশ করতে না পারে তার জন্য নগরীর প্রবেশমুখগুলোতে পুলিশের পক্ষ থেকে দেওয়া হয়েছে ব্যারিকেড। তবুও ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জ সহ বিভিন্ন জেলার মানুষ গ্রামে ফিরে আসছে বলে জানা যায়।প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে এরা ঢুকছে।এদিকে প্রধান রাস্তাঘাটসহ নগরীর সবখানই দেখা যাচ্ছে ফাঁকা।কিন্তু পাড়া মহল্লায় এখানে ওখানে লোকজনের জটলা চোখে পড়ার মত।এই সব স্থানে আইন প্রয়োগকারী সংস্থা দেখা মাত্র সব পালাচ্ছে।তারপর তারা চলে যাওয়ার পর আবার যে করা সেই। লোকজন প্রয়োজন ছাড়া বাইরে মূল রাস্তায় উঠছে না কারণ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাছে দিতে হচ্ছে নানা প্রশ্নের উত্তর। ছোট-বড় সব বয়সী মানুষই মাস্ক ব্যবহার করেই প্রয়োজনীয় কাজ সারতে বাইরের বের হচ্ছেন।এবং দুপুর দুইটা মধ্যে সব কাজ সেরে নিচ্ছেন।
তবে হাইওয়ে রাস্তায় বের হওয়া লোকের সংখ্যা খুব কম। নগরীর সব গুরুত্বপূর্ণ স্থানই দেখা যাচ্ছে জনমানবমশূণ্য ।এমনকি অটো রিকশা ২/১ টা দেখা যাচ্ছে তাও খুবই কম। রাজশাহীকে বলা হয় শিক্ষানগরী। শিক্ষার্থীদের পদচারণায় মুখর হয়ে থাকে এই নগরী। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, বরেন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী কলেজসহ সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে অনেক আগেই। তাই এই শিক্ষানগরী এখন হয়ে পরেছে শিক্ষার্থীশূণ্য। প্রতিষ্ঠানের প্রাঙ্গনে কিংবা রাস্তায় নেই শিক্ষার্থীদের ভিড়।
রাজশাহী শহরের প্রতিটি মোড়ে মোড়ে বিভিন্ন রকমের দোকান। মোড়ে মোড়ে দেখা যায় চায়ের দোকান। এই দোকানগুলোতে সবসময় ভিড় লেগেই থাকে। তরুণ থেকে বৃদ্ধরা পর্যন্ত এই চায়ের দোকানগুলোতে ভিড় জমান। অথচ এই দোকানগুলো এখন বন্ধ। তাই লোকজনের ভিড় দেখা যাচ্ছে না।বিকেল হলেই নগরীর টি-বাঁধ, আইবাঁধ, শহীদ কামরুজ্জামান কেন্দ্রীয় উদ্যান কিংবা পদ্মার পাড়ে ভিড় জমা ত তরুণ-তরুণীরা। বিকেল বেলায় লোকজনের ভিড় থাকে চোখে পাড়ার মতো। কেউ বসে বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা দেন। কেউবা তার ছোট সন্তান নিয়ে বেড়াতে আসেন এই জায়গাগুলোতে। লকডাউনের জন্য এই এই জায়গাগুলোতে নেই কোন ভিড়,জনমানবশূণ্য হয়ে পড়েছে নগরীর এই গুরুত্বপুর্ণ স্থানগুলো।
এমনকি ভিড়শূণ্য হয়ে পরেছে নগরীর কাঁচা বাজারগুলো। এই কাঁচা বাজারগুলোতে সবসময় ভিড় লেগে থাকলেও এখন দেখা যাচ্ছে ভিন্ন চিত্র। দোকানীরা সামান্য কিছু পণ্য নিয়ে বসে আছেন। কিন্তু ক্রেতার সংখ্যা খুব কম।তবে দুপুর দুইটা পর কোন দোকান খোলা দেখা যায়নি। ভিড়হীন হয়ে পড়ছে চিরচেনা রাজশাহী। গতকাল সন্ধ্যার পর অত্র প্রতিবেদন প্রস্তুতকালে বেশীর ভাগ এলাকায় পায়ে হেঁটে পর্যবেক্ষণ করার পর সাহেব বাজারে এসে দেখি নেই কোন রিকশা বা অটো রিক্সা।উপায় না পেয়ে পায়ে হেঁটে বাড়ীর পথ ধরি।