চরভদ্রাসন (ফরিদপুর) প্রতিনিধিঃ-
ফরিদপুরের চরভদ্রাসন উপজেলা পদ্মা নদীর অপর পাড় সংলগ্ন চর হরিরামপুর ইউনিয়নের বিভিন্ন চরে এ শুস্ক মৌসুমে ড্রেজার মেশিন দিয়ে বালু উত্তোলন ও তা বিক্রির ধুম লেগেছে বলে অভিযোগ এলাকাবাসীর।
এতে ভাঙন কবলিত পদ্মা পারের বিভিন্ন গ্রামের ফসলী মাঠ, বসতবাড়ী ও বৃক্ষ বাগান হুমকীর মুখে রয়েছে। পদ্মা নদী সংলগ্ন উক্ত ইউনিয়নের দুর্গম চরাঞ্চলের বিভিন্ন নালা, পুকুর ও ফসলী মাঠের নিচু জমিতে ড্রেজার মেশিন বসিয়ে রমরমা বালু বাণিজ্য করে চলেছেন স্থানীয় ভুমি দস্যুরা। এতে আসন্ন বর্ষা মৌসুমে পদ্মার ভাঙনের শঙ্কা প্রকাশ করে চলেছেন চরাঞ্চলের কৃষকরা।
রোববার উক্ত ইউনিয়নের আঃ হাই খান হাটের পাশের এক বসতি তোতা মিয়া বলেন, “ অত্র হাটে যাতায়াতের জন্য একমাত্র ব্রীজের পাশের খালে গত ক’মাস ধরে ড্রেজার মেশিন দিয়ে বালু উত্তোলন করে বসতভিটে ভরাট বাণিজ্য করে চলেছে স্থানীয় প্রভাবশালী শেখ হায়াত আলীর ছেলে শেখ মোস্তফা (৩৫)।
উক্ত বালু ব্যবসায়ী হাটের পাশে গভীর গর্ত করে যেভাবে বালু উত্তোলন করছেন তাতে আসন্ন বর্ষা মৌসুমে পদ্মার কড়াল স্রোতের কোপে এলাকার রাস্তা ঘাট, ব্রীজ ও আঃ হাই খান হাট চরম হুমকীর মধ্যে পড়বে বলে তিনি শঙ্কা প্রকাশ করেন”।
এ ব্যপারে উক্ত ড্রেজার মালিক ও বালু উত্তোলনকারী শেখ মোস্তফাকে জিজ্ঞেস করলে সে জানায়, “ যারা আমার কাছ থেকে বালু কিনে নিচ্ছে তারা নিজেরাই ড্রেজার মেশিন চালনার যাবতীয় সমস্যা সমাধান করবে বলে আমাকে আশ্বস্ত করার পর আমি বালু সরবরাহ করে থাকি”।
রোবার পদ্মাচর ঘুরে ও খোজ নিয়ে জানা যায়, সম্প্রতী উক্ত ইউনিয়নে অবৈধভাবে অন্ততঃ ৮টি ড্রেজার মেশিন চালু রয়েছে। এসব ড্রেজার মেশিনে দিন রাত বালু উত্তোলন করা হচ্ছে এবং পাইপ লাইন দিয়ে ভরাট কাজে বালুগুলো সরবরাহ করা হচ্ছে। এসব ড্রেজার মেশিনগুলো হলো-উক্ত ইউনিয়নের ভাটি শালেপুর মৌজার সরকারি সামাজিক বনায়নের পাশে ফেরদৌস খান (৪৫) এর ড্রেজার মেশিন, পার্শ্ববতী আলীমদ্দিনের ডাঙ্গী গ্রামে মাসুদ খান (৫২) এর ড্রেজার মেশিন ও শেখ হাবিব (৪০) এর ড্রেজার মেশিন, ভাটি শালেপুর পদ্মার ঘাটে শেখ আঞ্জু (৫৫) এর ড্রেজার মেশিন, আঃ হাই খান হাট সংলগ্ন এলাকায় শেখ মোস্তফার (৪০) এর দুইটি ড্রেজার মেশিন, শেখ ছগির (৪৪) এর ড্রেজার মেশিন ও আলমাস চৌকদার (৩৮) এর ড্রেজার মেশিন।
এছাড়া উক্ত ইউনিয়নের চর বৈদ্য ডাঙ্গী গ্রাম ও মুন্সির বাজার এলাকায় চলমান রয়েছে আরও দু’টি ড্রেজার মেশিন। এসব বালু উত্তোলনকারী ব্যবসায়ী অনেকেই জানান, “ পদ্মা নদীর দুর্গম চরে প্রশাসনিক লোকজন যাতায়াত কষ্টকর হওয়ায় ড্রেজার মেশিন দিয়ে বালু উত্তোলনকারীরা নিরাপদ মনে করে তারা চরাঞ্চলে রমরমা বালু বাণিজ্য করে চলেছে”।
এ ব্যপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার জেসমিন সুলতানাকে অবগত করলে তিনি জানান, “কর্ম ব্যস্ততার ফাঁকে খুব শীগ্রই ওইসব চরাঞ্চলে ড্রেজার বিরোধী অভিযান পরিচালনা করা হবে”।