দিন যতই গড়াচ্ছে ততই একের পর এক বেরিয়ে আসছে টেকনাফ থানার বরখাস্ত হওয়া ওসি প্রদীপ কুমার দাশকে নিয়ে চাঞ্চল্যকর তথ্য।
এদিকে তিনি গ্রেপ্তার হওয়ার পর মুখ খুলতে শুরু করেছেন বিভিন্ন সময় অত্যাচার-নির্যাতনের শিকার মানুষের স্বজনরা। তাদের বর্ণনায় প্রকাশ পাচ্ছে গা শিউরে ওঠার মতো ভয়ংকর ঘটনা।
তবে আরও তিন বছর আগেই নিভে যেতো প্রদীপের আলো। কিন্তু বড় দুই কর্মকর্তার ছত্রছায়ায় প্রদীপের তৎপরতা বলবৎ ছিল।
ঘটনার পরিক্রমায় জানা যায়, ২০১৭ সালে প্রদীপ কুমারের বিরুদ্ধে বিচার বহির্ভূত হত্যার অভিযোগ দাখিল করতে চেয়ে রিট হয়েছিল। মহেশখালীর লবণ ব্যবসায়ী আব্দুস সাত্তারকে ঘর থেকে ডেকে নিয়ে হত্যা করেন ওসি প্রদীপ। এরপর সাজানো হয় ‘বন্দুকযুদ্ধ’। গণমাধ্যমের সামনে এমনটাই দাবি করেন আব্দুস সাত্তারের স্ত্রী।
ওইসময় নাকি তাকে এফআইআর দাখিলের আদেশও দেন হাইকোর্ট। কিন্তু ওই দুই কর্মকর্তার অবস্থানের কারণেই বহাল তবিয়তে ছিলেন প্রদীপ।
আইনজীবীরা বলছেন, আদালতের নজরে আনার পরও প্রদীপের তৎপরতা চলমান থাকার দায় পৃষ্ঠপোষকদের।
২০১৭ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি মহেশখালী মাঝেরপাড়ার ব্যবসায়ী আব্দুস সাত্তার পুলিশের গুলিতে নিহত হন। ঘটনার নেপথ্যে পুলিশ জানায়, তাদেরকে লক্ষ্য করে গুলি চালান আব্দুস সাত্তার। আত্মরক্ষার্থে পুলিশ পাল্টা গুলি চালালে তিনি মারা যান।
এদিকে হাইকোর্টে করা রিটে আব্দুস সাত্তারের স্ত্রী বলছেন, ঘটনার দিন গভীর রাতে বাড়ি ঘিরে রাখে পুলিশ। সকাল ৭টায় কালামারছড়া পুলিশ ফাঁড়িতে নেয়া হয় আব্দুস সাত্তারকে। সেখানে নয়াপড়া মসজিদের সামনে তার স্বামীকে মারধর করা হয়। পরে প্রদীপ কুমার দাশই তাকে গুলি করেন। এ ঘটনার মোট সাক্ষী ১০ জন। প্রদীপ কুমারসহ ২৯ জনকে আসামিও করা হয়।
একই বছরের জুনে রিট পিটিশন আদেশে আব্দুস সাত্তারের বিষয়টি এফআইআর হিসেবে নিতে আদেশ দেন হাইকোর্ট। প্রত্যাহার চেয়ে বড় এক কর্মকর্তার পক্ষ থেকে আবেদন করা হয়। যা উত্থাপিত হয়নি মর্মে খারিজ করেন আদালত।
এদিকে ২০১৮ সালের ১৩ মে চেম্বার আদালত স্থগিতাদেশ দিলে সুপ্রিম কোর্ট আবারো শুনানির জন্য হাইকোর্টে পাঠানোর আদেশ দেন।
রিটকারী আইনজীবী অ্যাডভোকেট রাশেদুল হক খোকন বলেন, যথাসময়ে ব্যবস্থা নিলে বিচার-বহির্ভূত হত্যার পুনরাবৃত্তি এড়ানো যেত। বিষয়টি আমরা কর্তৃপক্ষের দৃষ্টিগোচরে নিয়ে এসেছিলাম। তবে বড় দুই কর্মকর্তার সহায়তায় আবার সবকিছু থেমে যায়।