• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ১২ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২৫শে এপ্রিল, ২০২৪ ইং
ওষুধ খাওয়ার নিয়ম কানুন

ছবি প্রতিকী

প্রত্যহ জীবনে আমরা সবাই কম বেশি রোগ-ব্যাধির চিকিৎসার সাথে পরিচিত।  আসুন আমরা জেনে নেই ওষুধ খাওয়ার সঠিক নিয়ম।  কারণ সঠিক নিয়মে ওষুধ খেলে দ্রুত আরোগ্য লাভ করা যায়।

শুরুতে ওষুধ খাওয়ার আগে ভাল করে সাবান দিয়ে হাত ধুয়ে নেওয়া উচিত, জীবাণুমুক্ত করার জন্য।  রোগী হাতে ওষুধ খাওয়ার অক্ষম হলে, সেক্ষেত্রে সহযোগীকে ভাল করে হাত ধৌত করে নিতে হবে।  কারণ আমাদের শরীরের প্রায় সকল রোগই ব্যাক্টেরিয়া, ভাইরাস, ছত্রাক, প্যারাসাইট ইত্যাদির জন্য হয়ে থাকে।  আর হাত পরিস্কার করে না, ওষুধ খেলে ওই জীবানু আরো বেশি করে শরীরে প্রবেশ করতে পারে।

এবার দেখুন আপনার চিকিৎসক প্রেসক্রিপশনে আপনাকে যে ওষুধ লিখেছেন সেটার সাথে দোকানদারের দেওয়া ঔষুধের সাথে মিল আছে কিনা? মিল না থাকলে সে ওষুধ খাওয়া থেকে বিরত থাকুন।  মনে রাখা ভাল ভুল ওষুধ মৃত্যু ঢেকে আনতে পারে।

এখন দেখুন ওষুধের মেয়াদ আছে কিনা? ঔষুধের গায়ের মোড়কে মেয়াদোত্তীর্ণ হওয়ার তারিখ দেওয়া থাকে।  মেয়াদবিহীন ওষুধ বিষক্রিয়া তৈরি করতে পারে।

যে ওষুধগুলো খাবার আগে খেতে হয়

এবার দেখুন ডাক্তার ওষুধটা খাবার আগে নাকি পরে খেতে বলেছেন।  সাধারণত নিচের এসকল ওষুধ খাবার আগে খেলে বেশি ইফেক্ট পাওয়া যায়।

সকল ধরনের গ্যাস্ট্রিকের ওষুধ (শুধু মাত্র গ্যাস্ট্রিকের সিরাপ ব্যাতীত) যেমন-

H2 Blocker- Ranitidine,Famotidine, Cimetidine etc.

PPI- Pantoprazole,Lansoprazole,Omeprazole,Rabeprazole,Esomeprazole,Dexolansoprazole.

বমিরও ইন্টিস্টাইন মোটালিটির ওষুধ গুলো

কিছু এন্টিবায়োটিক ওষুধ : Azithromycin, Erythromycin etc.

ডায়াবেটিসের কিছু ওষুধ- মেটফরমিন

আরো অন্যান্য ওষুধ খাবার আগে খেতে হয়।  উপরের ওষুধগুলো অবশ্যই খাবার আধা ঘন্টা আগে খাওয়া উচিত।

যে ওষুধগুলো খাবার পর খেতে হয়

নিচের ওষুধগুলো খাবার পরে ভরা পেটে খেতে হয়।  তাছাড়া হাইপার এসিডিটি হতে পারে।  যেমন-

সকল ধরনের ব্যাথার ওষুধ যেমন  Naproxen,Sulindac,ketorolac,Ibuprofen etc.

অন্যান্য এন্টিবায়েটিক: Ciprofloxacin,Levoflaxacin,Cefuroxime,Cefixime etc.

গ্যাস্টিকের সিরাপ জাতীয় ওষুধ : Entracyd Plus (Aluminium Hydroxide +Magnesium Hydroxide+Simethicone),Marlax plus(Magaldrote+Simethicone)

এছাড়া অন্যান্য প্রায় সকল ওষুধ খাবার পর খেতে হয়।

যে ওষুধগুলো খাবার মাঝে খেতে হয়

কিছু ওষুধ খাবারের মাঝে খেতে হয়। যেমন-

তীব্র ব্যাথার ওষুধ যাদের গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা বেশি

যে ওষুধ চুষে  খাবেন

কিছু ওষুধ চুষে খেতে হয়। যেমন-

কৃমিনাশক: Albendazole

ভিটামিন সি: Ascorbic Acid:Ceevet (Vitamin c)

গ্যাস্ট্রিকের: Aluminium Hydroxide+Magnesium Hydroxide ইত্যাদি।

যে ওষুধ পানির সাথে মিশিয়ে খেতে হয়

কিছু ওষুধ পানির সাথে মিশিয়ে খেতে হয়। যেমন-

UTI- এর জন্য Urikal(Citric Acid monogydrate+potassium Citrate)

ক্যালসিয়াম + ভিটামিন সি জাতীয় ওষুধ

ওষুধ খাওয়ার  কিছু গুরত্বপূর্ণ নিয়ম

বাচ্চাদের সাসপেনশন জাতীয় ওষুধগুলো অনেকেই ফুটন্ত গরম পানি দিয়ে প্রস্তুত করে থাকেন, এটা ভুল! নিয়ম হলো বিশুদ্ধ পানি দিয়ে অথবা ফুটানো পানি ঠান্ডা করে প্রস্তুতকরণ!

উপরের সব কিছু ঠিক থাকলে এবার ওষুধ খাওয়া শুরু করতে পারেন, ওষুধটা ডানহাতে নিয়ে পানির সাথে খেতে পারেন।  ডানহাতের তুলনায় বামহাতে সাধারণত জীবানু বেশি থাকে।

ওষুধ অবশ্যই বসে সেবন করা উচিত।  অন্যাথায় শ্বাসনালিতে ওষুধ চলে যেতে পারে।  সেক্ষেত্রে মুহুতেই মৃত্যু ঘটে যেতে পারে।

যারা বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত তারা অনেকেই একসাথে প্রায় সব ওষুধ একসাথে খেয়ে ফেলে এটা ভুল। কমপক্ষে ১০/১৫ মিনিট অন্তর অন্তর ওষুধ সেবন করা উচিত।

যে ওষুধ সকালে খাওয়া উওম

কিছু ওষুধ সকালে খাওয়া উওম। যেমন-

ইডিমা বা শরীরে পানি কমার: Frusemide etc(কারণ বহু মুত্র তৈরি করে)

উচ্চ রক্ত চাপও হার্টের ওষুধ

যে ওষুধ দুপুরে খাওয়া উত্তম

কিছু ওষুধ দুপুরে খাওয়া উত্তম- এসপিরিন জাতীয় ওষুধ।

যে ওষুধ রাতে খাওয়া উত্তম

কিছু ওষুধ রাতে খাওয়ায় উত্তম- প্রায় সকল ধরনের স্লিপিং পিল।

আসুন দেখে নেওয়া যাক ডাক্তারদের কিছু লেখা, কি নির্দেশ করে-

bid- দিনে ২বার। অর্থাৎ ১২ ঘন্টা পর পর।
tid- দিনে ৩বার। অর্থাৎ ৮ ঘন্টা পর পর।
qid- দিনে ৪ বার। অর্থাৎ ৬ ঘন্টা পর পর।
hs- রাতে শুবার সময়।
ac- খাবার আগে
pc- খাবার পরে
NPO- মুখে কোন কিছু খাওয়া যাবে না। ইত্যাদি।

কিছু ওষুধ শুধু মাত্র সাব্লিংওয়ালে ব্যবহারের জন্য, জিহব্বার নিচে! যেমন- নাইট্রোগ্লিসারিন।

কিছু ওষুধ শুধু মাত্র পায়ুপথে ব্যবহারের জন্য। যেমন- সকল ধরনের সাপজেটিরি ওষুধ। সাপজেটিরি ভল্টানিন, ইন্ডোমেথাসিন, গ্লিসারিন ইত্যাদি।

কিছু ওষুধ মুখে শ্বাস টেনে ভিতরে নিতে হয়।  সকল ইনহোলারেশন যেমন- সলবিটামল, টিকামেট ইত্যাদি।

সকল ধরণের সিরাপ জাতীয় ওষুধ প্রতিবার খাবার আগে ঝাকিয়ে নিতে হয়। এতে ওষুধ এর সকল উপাদান মাত্রা ঠিক হয়।

যারা ঘুমের বা দুশ্চিন্তা সায়কাটিকস ওষুধ খেয়েও বলেন ঘুম ধরে না। তাদের জন্য এসব ওষুধ অবশ্যই আপনাকে বিছানায় যাওয়ার ২ ঘন্টা আগে খেতে হবে। কারণ ম্যাক্সিমাম ওষুধ এর কার্যক্রিয়া ১-২ ঘন্টা পরে শুরু হয়।

কিছু ওষুধ শ্বাসনালি দিয়ে টেনে শ্বাস নিতে হয়। যেমন- মেনথোল গরম পানিতে দিয়ে বাস্প টানতে হয়।

কিছু ওষুধ সর্বদা বহি:ত্বকে ব্যবহারের জন্য নির্দেশিত। যেমন- সকল ধরনের টপিক্যাল লোশন, ক্রিম, অয়েনম্যান্ট, পাউডার ইত্যাদি।

কিছু ওষুধ মহিলাদের মাসিকের রাস্তায় ব্যবহ্রত। যেমন- Cap,Vcap,Gynomix.

আকারে বড় জাতীয় ট্যাবলেটগুলো প্রয়োজনে ভেঙ্গে টুকরা টুকরা করে খেওয়া যেতে পারে।

বাচ্চাদের সর্বদা সিরাপ ওষুধ খাওয়া ভাল হবে।  ট্যাবলেট বা ক্যাপসুল জাতীয় ওষুধ বাচ্চাদের খ্যাদ্যনালী বা শ্বাসনালিতে আটকে যেতে পারে, সেক্ষেত্রে দ্রুতই মৃত্যু ঢেকে আনতে পারে।

পরিশেষে সকল ধরনের ওষুধ ডাক্তারদের পরামর্শে অনুযায়ী সঠিক সময় মত সেবন করুন। সুত্র ঃ দৈনিক যুগান্তর

ফেসবুকে লাইক দিন

তারিখ অনুযায়ী খবর

এপ্রিল ২০২৪
শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
« মার্চ    
 
১০১১১২
১৩১৪১৫১৬১৭১৮১৯
২০২১২২২৩২৪২৫২৬
২৭২৮২৯৩০  
দুঃখিত! কপি/পেস্ট করা থেকে বিরত থাকুন।