• ঢাকা
  • শুক্রবার, ৬ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৯শে এপ্রিল, ২০২৪ ইং
সৈয়দা সাজেদা চৌধুরীর জানাজায় হাজারো মানুষের ঢল

মনির মোল্যা, সালথা (ফরিদপুর) প্রতিনিধি:

জাতীয় সংসদের উপনেতা ও ফরিদপুর-২ ( নগরকান্দা, সালথা ও কৃষ্ণপুর ইউনিয়ন) আসনের সংসদ সদস্য, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সিনিয়র প্রেসিডিয়াম সদস্য সৈয়দা সাজেদা চৌধুরীর প্রথম জানাজা সম্পন্ন হয়েছে।

সোমবার (১২ সেপ্টেম্বর) সকাল ১১.১৫ মিনিটে তার নিজ নির্বাচনী এলাকা ফরিদপুরের নগরকান্দা উপজেলার মহেন্দ্র নারায়ণ একাডেমি (এম.এন. একাডেমি) মাঠে এ জানাজা সম্পন্ন হয়। জানাজা পড়ান নগরকান্দা মদিনাতুল উলুম মাদ্রাসার শিক্ষক ইসমাতুল্লাহ কাসেমী।

জানাজায়, আওমীলীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম, এস এম কামাল, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শামীম হক, সাধারণ সম্পাদক শাহ মো. ইশতিয়াক আরিফ, ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক অতুল সরকার, পুলিশ সুপার মো. শাহজাহান, সাবেক সংসদ সদস্য সাইফুজ্জামান চৌধুরী জুয়েলসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার হাজার হাজার মানুষ অংশগ্রহণ করেন।

এদিকে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর লাশবাহী একটি ভ্যানে করে তার কনিষ্ঠ পুত্র ও রাজনৈতিক প্রতিনিধি শাহদাব আকবর লাবু চৌধুরী বেলা এগারোটার দিকে তাঁর মরদেহ নগরকান্দায় নিয়ে আসেন। এলাকার লোকজন তাদের প্রিয় নেত্রীকে এক নজর দেখার জন্য ভীর জমান।

গতকাল রোববার (১১ সেপ্টেম্বর) রাত ১১.৪০ মিনিটে ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) মারা যান তিনি।

মরহুমের মরাদেহ বিকাল ৩টায় শহিদ মিনারে সর্বস্তরের মানুষের শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য রাখা হবে। বাদ আছর বায়তুল মোকাররম জামে মসজিদে দ্বিতীয় জানাজা শেষে বনানী কবর স্থানে তাকে দাফন করা হবে।

ফরিদপুরের নগরকান্দা ও সালথার মানুষের কাছে তিনি ছিলেন এক জনপ্রিয় নেত্রী। তাঁর জনপ্রিয়তা ছিল কিংবদন্তি তুল্য। সাজেদা চৌধুরীর মৃত্যুতে ফরিদপুরে রাজনৈতিক মহলে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। বঙ্গবন্ধুর মৃত্যুর পর আওয়ামী লীগের চরম দুর্দিনে আপসহীন কান্ডারী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী।

সাজেদা চৌধুরীর মৃত্যুতে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গভীর শোক ও সমবেদনা জানিয়েছেন।

উল্লেখ্য, সাজেদা চৌধুরী ১৯৩৫ সালের ৮ মে মাগুরা মামার বাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতার নাম সৈয়দ শাহ হামিদ উল্লাহ এবং মাতা সৈয়দা আছিয়া খাতুন।

শিক্ষাজীবনে তিনি স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন। তার স্বামী রাজনীতিবিদ এবং সমাজকর্মী গোলাম আকবর চৌধুরী। ২০১৫ সালের ২৩ নভেম্বর তার স্বামী মৃত্যুবরণ করেন।

সাজেদা চৌধুরী ১৯৭৪ সালে গ্রামীণ উন্নয়ন ও শিক্ষায় বিশেষ অবদানের জন্য ইউনেস্কো ফেলোশিপপ্রাপ্ত হন এবং একই সময়ে বাংলাদেশ গার্ল-গাইড এসোসিয়েশনের জাতীয় কমিশনার হিসেবে সর্বোচ্চ সম্মানসূচক সনদ সিলভার এলিফ্যান্ট পদক লাভ করেন। তিনি ২০০০ সালে আমেরিকান বায়োগ্রাফিক্যাল ইনস্টিটিউট কর্তৃক ওমেন অব দি ইয়ার নির্বাচিত হন। ২০১০ সালে বাংলাদেশ সরকার তাকে স্বাধীনতা পুরস্কারে ভূষিত করে।

রাজনৈতিক জীবন

১৯৫৬ সাল থেকে সাজেদা চৌধুরী আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত৷ ১৯৬৯–১৯৭৫ সময়কালে তিনি বাংলাদেশ মহিলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। মুক্তিযুদ্ধকালীন সময়ে কলকাতা গোবরা নার্সিং ক্যাম্পের প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক ছিলেন তিনি। ১৯৭১ সালে তিনি মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেন। ১৯৭২-১৯৭৫ সময়কালে বাংলাদেশ নারী পুনর্বাসন বোর্ডের পরিচালক, ১৯৭২-১৯৭৬ সময়কালে বাংলাদেশ গার্ল গাইডের ন্যাশনাল কমিশনার এবং বঙ্গবন্ধুর হত্যাকাণ্ডের পর ১৯৭৬ সালে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

১৯৮৬ থেকে ১৯৯২ সাল পর্যন্ত তিনি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, ১৯৯২ সাল থেকে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কর্তৃক প্রদত্ত পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তিচুক্তি বাস্তবায়ন কমিটির আহবায়কের দায়িত্বও তিনি পালন করছেন।

তিনি ফরিদপুরের (ফরিদপুর-২ নগরকান্দা, সালথা ও কৃষ্ণপুর ) থেকে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেন। দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও তিনি এ অঞ্চল থেকে নির্বাচিত হন। ২০০৯ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে তিনি জাতীয় সংসদের উপনেতা হন।

১২ সেপ্টেম্বর ২০২২

ফেসবুকে লাইক দিন

তারিখ অনুযায়ী খবর

এপ্রিল ২০২৪
শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
« মার্চ    
 
১০১১১২
১৩১৪১৫১৬১৭১৮১৯
২০২১২২২৩২৪২৫২৬
২৭২৮২৯৩০  
দুঃখিত! কপি/পেস্ট করা থেকে বিরত থাকুন।