সনতচক্রবর্ত্তী: ফরিদপুর জেলার বিভিন্ন উপজেলার গাছিরা তাল গাছ থেকে রস সংগ্রহে ব্যস্ত সময় পার করছেন। গ্রীষ্মেও গরমে মনকে সতেজ, ঠান্ডা আর ঘুম আনতে তালের রস বিশেষ গুরুত্ব বহন করে। জেলায় বোয়ালমারী, মধুখালি, সালথা,আলফাডাঙ্গাসহ বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে দেখা যায়, প্রত্যেক ইউনিয়নেই কমবেশী তাল গাছ রয়েছে। এসব উপজেলার গাছিরা রস সংগ্রহ করে গুড় তৈরী করে নিজেদের চাহিদা মিটিয়ে অনেক এ গুড় বিক্রি করে তাদের জীবিকা নির্বাহ করছে। গাছিরা তাল গাছে বাঁশ বাধে যাতে তাড়াতাড়ি তালগাছে ওঠানাম করতে পারে ও রস সংগ্রহ করতে পারে। প্রতিদিন সকাল, দুপুর ও বিকালে তিন ধাপে তাল গাছ থেকে রস সংগ্রহ করা হয়। এছাড়া তালগাছে গুলি (রসের পাত্র) পেতে রাখার সময় তাল গাছের মৌচা বা খাদি সামান্য অংশ কেটে ফেলতে হয়। যে তাল গাছে তাল ধরে না তাকে জটা তালগাছ বলে। সাধারণত জটা গাছ ও যে গাছে তাল ধরে উভয় প্রকার তাল গাছ থেকে রস সংগ্রহ করা হয়।
একাধিক গাছিদের সঙ্গে কথা হলে তারা বলেন, গরম যতো বেশি হবে তাল গাছের রস ততো বেশি হবে।
বোয়ালমারী উপজলোর গুনবহা ইউনিয়নের ফেলান নগর গ্রামের জামাল মোল্লা জানান, এ বছর তিনি যে সংখ্যক গাছ থেকে রস সংগ্রহ করেন তাতে নিজের খাবার হয়ে যায়। এর পাশাপাশি বাড়তি রস বিক্রি করি ১০০ টাকা দরে । এছাড়া রস থেকে উৎপাদিত গুড় ১২০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করেন বলে জানান।
ময়না সরকারি প্রথমিক বিদ্যালয়ের সাবেক প্রধান শিক্ষক কালিপদ চক্রবর্ত্তী বলেন, এখানকার তাল রস ভেজাল মুক্ত, মিষ্টি ও সুস্বাদু। আমাদের উচিৎ বেশি করে তাল গাছ লাগানো ও তার পরিচর্যা করা। তাল গাছ থেকে আমরা শুধু রসই পাই না, এতে আমাদরে পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা পায়। এছাড়া দেখা যায় গ্রামীর অবকাঠামো উন্নয়নের ফলে রাস্তার দুপাশের গাছগুলি অপসারণ করা হয় যাতে তাল গাছের সংখ্যা কমে যায়। আর মূলত রাস্তার পার্শ্বেই তাল গাছ বেশি থাকে।
বোয়ালমারী উপজলো কৃষি কর্মকর্তা প্রীতম হোড় জানান, তালের টাটকা রস একটি পুষ্টি কর পানিয়। গরমে এ রস পান করলে মানুষের মস্তিস্ক ঠান্ডা রাখে।এছাড়া বজ্রপাত প্রতিরোধক হিসেবে কাজ করে। প্রকৃতি-পরিবেশ ও পুষ্টির কথা ভেবে আমাদের বেশি করে তাল গাছ লাগানো উচিত।