প্রসূতি ও গর্ভবতী মায়েদের ভোগান্তি
ফরিদপুরের চরভদ্রাসন উপজেলা স্বাস্থ্য কমেপ্লক্সে গত ক’মাস ধরে কোনো গাইনী চিকিৎসক নেই। উপজেলায় গাইনী চিকিৎসকের অভাবে প্রসূতি ও গর্ভবতী রুগীরা চরম ভোগান্তির পোহাচ্ছেন। অর্থ, সময় ও সুযোগের অভাবে চিকিৎসার জন্য জেলা শহরেও যেতে পারছেন না বেশীরভাগ গাইনী রুগীরা। ফলে তারা রোগ যন্ত্রনা সহ্য করে নিরবে ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন বলে জানিয়েছেন। এতে উপজেলার বেশীরভাগ গাইনী রুগী সুচিকিৎসা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন বলে জানা গেছে।
এ ব্যপারে শনিবার উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডাঃ হাফিজুর রহমান বলেন, “ হাসপতালের গাইনী চিকিৎসক ডাঃ রেদওয়ানা পারভীন বদলী হওয়ার পর গত এক মাসে গাইনী বিভাগে অন্য কোনো চিকিৎসক পোষ্টিং দেওয়া হয় নাই। তবে গাইনী চিকিৎসক চেয়ে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে পত্র পাঠানো হয়েছে। তিনি আরও জানান, অত্র স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে মোট ১৩ জন ডাক্তারের স্থলে বর্তমানে মাত্র ৪জন চিকিৎসক পোষ্টিং রয়েছে। আর হাসপাতালের মেরামত অযোগ্য এক্সরে মেশিনটি দীর্ঘকাল ধরে বিকল অবস্থায় পড়ে থাকার ফলে রুগীদের সঠিক সেবা দেওয়া সম্ভব হয় না। তাই তিনি নতুন মেশিন এক্সরে মেশিন চেয়ে উর্দ্ধতন দপ্তরে পত্র পাঠিয়েছেন বলেও জানান”।
জানা যায়, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে স্বাস্থ্য সেবা গ্রহনকারী প্রায় অর্ধেক অংশ রয়েছে গাইনী রোগী। এসব রুগীদের মধ্যে অনেকেই হাসপতাাল ঘুরে গাইনী চিকিৎসক সংকটে সেবা নিতে পারছেন না। প্রতিদিন হাসপাতালে এসে গ্রামগঞ্জের ধর্ম পরায়ন পরিবারের গর্ভবতী ও প্রসূতি মায়েরা চিকিৎসা না নিয়ে ফিরছেন বাড়ীতে। সময় সুযোগ ও অর্থ যোগার করতে না পেরে উপজেলার সিংহভাগ গাইনী রুগীরা জেলা শহরেও যেতে পারছেন না। ফলে রোগ যন্ত্রনা নিয়ে বাড়ীতে বসে ধঁুকে ধুঁকে ভুগছেন উপজেলার গাইনী রুগীরা।
হাসপতাল ঘুরে জানা যায়, স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পোষ্টিং রয়েছেন চারজন ডাক্তার। এদের মধ্যে ইউনিয়ন কমিউনিটি ক্লিনিক ও স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসক ভাগ করা হয়েছে। ফলে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরী বিভাগে দিবারাত্রি সহকারী চিকিৎসক জাহিদ হোসেন চিকিৎসা সেবা দিয়ে চলেছেন। কিন্ত গাইনী বিভাগে সেবা দেওয়ার মত কোনো চিকিৎসক নেই। শনিবার হাসপাতালে সেবা নিতে আসা এক গর্ভবতী মা সামসুন্নাহার (২৮) জানান, “ প্রায় ২০ দিন ধরে বিভিন্ন শারীরীক জটিলতায় ভুগছি। কিন্ত হাসপাতালে এসে দেখি গাইনী ডাক্তার নেই। ইসলামিক পরিবারের পুত্রবধু হয়ে পুরুষ ডাক্তার দেখানো সম্ভব না। তাই বাড়ী ফিরে যাচ্ছি”। আরেক রুগী মাকসুদা আক্তার বলেন, “ হাসপাতাল, ক্লিনিক বা চিকিৎসা কেন্দ্রে গিয়ে মেয়েদের আলট্রাসনোগ্রাম, ইসিজি বা এক্সরে পরীক্ষাগুলো কোনোভাবেই পুরুষ ডাক্তার দিয়ে করানো সম্ভব না। অত্র স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গাইনী চিকিৎসক না পেয়ে প্রায় একমাস ধরে বীনা চিকিৎসায় ভুগছি। তিনি সময় সুযোগ ও অর্থের অভাবে জেলা শহরে গিয়ে চিকিৎসা সেবা নিতে পারছেন বলেও জানান”।