সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, বৃহত্তর ফরিদপুরের শ্রেষ্ঠ সন্তান জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এর সাংবিধানিক মর্যাদা সমুজ্জ্বল রাখার লক্ষ্যে ফরিদপুরে কর্মরত প্রজাতন্ত্রের সকল কর্মকর্তা কর্মচারীরা একত্রিত হয়ে আজ শনিবার সকাল ১০.৩০ ঘটিকার সময় স্থানীয় জসীমউদ্দীন অডিটোরিয়ামে এক সমাবেশে মিলিত হন। জনপ্রশাসন, বিচার বিভাগ, পুলিশ, স্বাস্থ্য, শিক্ষা, প্রকৌশল, কৃষিসহ এ জেলার সকল কর্মকর্তা কর্মচারীরা অতিসম্প্রতি দেশব্যাপী জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নিয়ে যে অবমাননাকর বিচ্ছিন্ন কিছু ঘটনা সংঘটিত হয়েছে তার তীব্র নিন্দা জ্ঞাপন করেন।
সমাবেশে বক্তারা বলেন,”বঙ্গবন্ধু মানেই বাংলাদেশ; বঙ্গবন্ধুর যেকোনো ধরনের অবমাননা বা সম্মানহানি সেটি বাংলাদেশের সম্মান হানিরই নামান্তর যা কোন দেশ প্রেমিক নাগরিকের পক্ষে তা মেনে নেওয়া সম্ভব নয়।” সাংবিধানিকভাবে প্রজাতন্ত্রের কর্মচারী হিসেবে প্রজাতন্ত্রের প্রত্যেক কর্মচারীর দায়িত্ব হচ্ছে, সংবিধানের সুরক্ষা নিশ্চিত করা; আর সেই সংবিধানে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে জাতির পিতা হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে এবং তার মর্যাদা সমুন্নত রাখার বিধান করা হয়েছে। কেউ যদি সংবিধানের সেই বিধানাবলীর লংঘন করেন তা বাংলাদেশের মূল আইন (চৎরহপরঢ়ধষ খধ)ি লংঘন তথা রাষ্ট্রদ্রোহিতার সামিল।
সমাবেশে উপস্থিত জেলা প্রশাসক অতুল সরকার, বিজ্ঞ সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ মোঃ সেলিম মিয়া, বিজ্ঞ চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ আব্দুল হামিদ, পুলিশ সুপার মোঃ আলিমুজ্জামান স্বাচিব সভাপতি ডাঃ এম এ জলিল, বিএমএ সভাপতি প্রফেসর ড. আ.স.ম জাহাঙ্গীর চৌধুরী টিটো, কেআইবি সভাপতি ও উপপরিচালক কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তর ড. হযরত আলী, সাংবাদিক ও শিক্ষাবিদ প্রফেসর মোঃ শাহজাহান, বিসিএস শিক্ষা সমিতি ও সরকারি রাজেন্দ্র কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর মোশার্রফ আলী, , বিসিএস শিক্ষা সমিতির প্রফেসর মোঃ সিরাজুল ইসলাম, ফরিদপুর প্রেসক্লাব সভাপতি কবিরুল ইসলাম সিদ্দিকী, সাধারণ সম্পাদক মশিউর রহমান খোকন, প্রথম আলোর প্রতিনিধি পান্না বালা, আইবিইবি সভাপতি একেএম শামসুল আলম, সাধারন সম্পাদক ড. মিজানুর রহমান, বঙ্গবন্ধু ডিপ্লোমা পরিষদের সিনিয়র সহসভাপতি মুজাহিদুর রহমান, নার্সিং এসোসিয়েশন সভাপতি আফসানা শান্তা, বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতির জেলা শাখা সাধারন সম্পাক মনিরুল ইসলাম, মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি নুরুল ইসলাম কাজল, প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদ নজরুল ইসলাম, কালেক্টরেট ক্লাবের সভাপতি মোঃ জাহাঙ্গীর আলম বিশ্বাস প্রমুখসহ বিভিন্ন পেশাজীবী অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সেক্রেটারি বক্তব্য প্রদান করেন। জাতির পিতার যে কোন রুপ অসম্মানের বিরুদ্ধে প্রয়োজনে তারা সর্বোচ্চ প্রতিরোধ গড়ে তুলতে কার্পণ্য বোধ করবেন না বলে দৃঢ় কন্ঠে ঘোষণা করেন।
দেশের বিরাজমান সংবিধান ও আইন-শৃঙ্খলার প্রতি শ্রদ্ধা দেখিয়ে সকল নাগরিককে তার নিজ নিজ কর্তব্য পালন করার জন্য বক্তারা অনুরোধ জানান। উন্নয়নের অদম্য গতিতে ছুটে চলা বাংলাদেশের উন্নয়ন যাতে কোনোভাবেই বাধাগ্রস্ত না হয় সেজন্য সকলকে সতর্ক থাকারও আহ্বান জানানো হয়।
এর আগে আজকের এই সমাবেশের প্রতি সংহতি জানিয়ে জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, জেলা আনসার কমান্ডার ও ফায়ার ব্রিগেডের কর্মকর্তাদের নেতৃত্বে পুলিশ আনসার ও ফায়ার ব্রিগেডের সুসজ্জিত সদস্যদের এক প্রতিরোধ পদযাত্রা শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে। স্বাস্থ্য, শিক্ষা, প্রকৌশল সহ অন্যান্য বিভাগের কর্মচারীরাও অনুরূপ পদযাত্রা করে সমাবেশ স্থলে উপস্থিত হন।
প্রজাতন্ত্রের কর্মচারীদের এ ধরনের ব্যতিক্রমী প্রতিরোধ কর্মসূচি মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী স্থানীয় সকল জনগণের মাঝে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। তারা একে স্বাগত জানিয়ে প্রজাতন্ত্রের কর্মচারীদের সাথে একতাবদ্ধ হয়ে সকল ধরনের অপশক্তির বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন।
জাতীয় সংগীতের মধ্য দিয়ে সমাবেশের সূচনা ও সমাপ্তি ঘটে। “জাতির পিতার সম্মান রাখবো মোরা অম্লান” এই ঘোষণা কে সামনে রেখে সভায় সকল সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা একটি শপথ বাক্য পাঠ করেন।
পবিত্র ধর্মগ্রন্থ থেকে পাঠের মধ্য দিয়ে জেলা প্রশাসক অতুল সরকারের সভাপতিত্বে সভার কার্যক্রম পরিচালিত হয়। সভায় মুক্তিযুদ্ধ ও বঙ্গবন্ধ : বাংলাদেশ বিষয়ক একটি সেমিনার পেপারও উপস্থাপন করা হয়; যেখানে বঙ্গবন্ধুর জীবন ও আদর্শ নিয়ে বিস্তারিত আলোকপাত করা হয় হয়।
সমাবেশে প্রবন্ধ পাঠ করেন সরকারি রাজেন্দ্র কলেজের ইংরেজি বিভাগের সহযোগি অধ্যাপক রেজভী জামান, উপস্থাপনা করেন ফরিদপুর সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ মাসুম রেজা।