মাহবুব পিয়াল,ফরিদপুর :
বলেছিলে, তাই চিঠি লিখে যাই,কথা আর সুরে সুরে,মন বলে, “তুমি রয়েছ যে কাছে” আঁখি বলে, “কত দূরে”- তুমি আজ কত দূরে-জগন্ময় মিত্রের রোমান্টিক আচ্ছন্ন প্রেমপত্রের-চিঠি গানটি যখন ওস্তাদ খায়রুল ইসলাম নীলু তার আবেগময় কণ্ঠে গাওয়া শুরু করলেন পুরো কবি জসীমউদ্দিন হলে তখন পিন পতন নীরাবতা ।৮২ বছর বয়সে ওস্তাদ খায়রুল ইসলাম নীলু তার কন্ঠের যাদু দিয়ে যা শুনালেন তাতে দর্শক-শ্রোতারা বিমোহিত হয়ে শুনতে লাগলেন।গান শেষে তুমুল করতালি,আরো গান শোনাতে হবে তাকে। একগানে দর্শক- শ্রোতারা মন ভরলো না । দর্শক- শ্রোতাদের অনুরোধে তিনি গেয়ে উঠলে শ্যামল মিত্রের “ সেদিনের সোনাঝরা সন্ধ্যা,আর এমনি মায়াবী রাত মিলে,দু’জনে শুধায় যদি তোমারে কি দিয়েছি আমারেই তুমি কিবা দিল ”- তার গানে বিস্ময় প্রকাশ করতে লাগলো দর্শক- শ্রোতারা। প্রশংসা পেলেনে দেশের বরেন্য কবি,সাহিত্যিকসহ ভারত থেকে আগত অতিথি শিল্পীদের কাছ থেকেও ।তারা প্রত্যাশা ব্যক্ত্ করেন বলেন,ওস্তাদ খায়রুল ইসলাম নীলু আরো দীর্ঘজীবি হউন এবং সুরের মুর্ছনায় মাতিয়ে রাখুন সংগীতপিপাসুদের ।
ওস্তাদ খায়রুল ইসলাম নীলুর বর্তমান বয়স ৮২ বছর । তার বয়স যখন ১৮ বছর তখন বরগুনায় তার গানের হাতে খড়ি ওস্তাদ মাখন লাল কর্মকারের কাছে ।তার পর তিনি ফরিদপুর সহ দেশের বিভিন্ন জেলায় স্টেজ প্রগ্রাম করেছেন অগনিত।তিনি রেডিওতেও গান পরিবেশন করেছেন।একসময় তিনি ফরিদপুর চলে আসেন ।সেখানে অধ্যাপক আব্দুল গফুর,অধ্যাপক এমএ সামাদ ও ফিরোজার রহমান ফিরোজ মাস্টারের অনুরোধে মুসলিম কৃষ্টি সংঘ সংগীত বিদ্যালয়ে শিশুদেরকে গান শেখানো শুরু করেন।দীর্ঘদিন তিনি সেখানেই গান শেখান। পরে তিনি জেলা শিল্পকলা একডেমী ও শিশু একাডেমী ফরিদপুরের সংগীত শিক্ষক হিসেবে দীর্ঘদিন কর্মরত ছিলেন।ফরিদপুর সহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বহু ছাত্র-ছাত্রী রয়েছে তার,অনেকেই এখন প্রতিষ্টিত শিল্পী । ২০১৪ সালে সংগীতে বিশেষ অবদান রাখায় জেলা শিল্পকলা একাডেমীর সম্মানান লাভ করেছেন তিনি। এছাড়াও বিভিন্ন সময় তিনি গানের স্বীকৃতি স্বরুপ বিভিন্ন পদক ও উপহার সামগ্রী পেয়েছে।এইগুনী শিল্পী দীর্ঘদিন বেঁচে থেকে সংগীতকে অরো উচ্চতায় নিয়ে যাবেন সেই প্রত্যাশা ফরিদপুরবাসীর।
গত শুক্রবার রাতে কবি জসীমউদ্দিন হলে আর্ন্তজাতিক শিল্পীমৈত্রী সংগঠন বিশ্বভরা প্রাণ এর জেলা সম্মেলনে অনুষ্টানে ওস্তাদ খায়রুল ইসলাম নীলু সংগীত পরিবেশন করেন।ঐ অনুষ্টানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক অতুল সরকার।বিশ্বভরা প্রাণ এর কেন্দ্রীয় সভাপতি জাহান বশীর,বিএমএ ফরিদপুরের সভাপতি ডা:আসম জাহাঙ্গীর চৌধুরী টিটো,বিশিষ্ট হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা: ইউনুস আলী,সরকারী রাজেন্দ্র কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ প্রফেসর মোশারর্ফ আলী, কবি শওকত আলী জহিদ, বিশ^ভরা প্রাণ এর ভারত কেন্দ্রিয় কমিটি সভাপতি বিধুরা ধর,সাধারন সম্পাদক শাশ্বতী ব্যানার্জী, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব অধ্যাপক আলতাফ হোসেন,কবি আলীম আল রাজী আজাদসহ আরো অনেকে উপস্থিত ছিলেন।