সমীক্ষা দেখা গিয়েছে, ২০০ জন করোনা আক্রান্তের মধ্যে শতকরা ৮০ ভাগ ক্ষেত্রেই সঙ্কটের কারণ হয়ে উঠেছে শরীরে ভিটামিন D-র ঘাটতি
আমরা নই, এ দাবি তুলেছে স্পেনের চিকিৎসকদের দ্বারা পরিচালিত এক সমীক্ষা, যার সিদ্ধান্তপত্রটি প্রকাশিত হয়েছে এন্ডোক্রাইন সোসাইটির জার্নাল অফ ক্লিনিক্যাল এন্ডোক্রাইনোলজি অ্যান্ড মেটাবলিজম-এ। সেই সমীক্ষা দেখা গিয়েছে, ২০০ জন করোনা আক্রান্তের মধ্যে শতকরা ৮০ ভাগ ক্ষেত্রেই সঙ্কটের কারণ হয়ে উঠেছে শরীরে ভিটামিন D-র ঘাটতি!
এই জায়গায় এসে বলে রাখা ভালো যে সমীক্ষাটি চলেছে স্পেনের এক হাসপাতালে ভর্তি কোভিড ১৯-এ আক্রান্ত রোগীদের উপরে। কেন না, সমীক্ষার সঙ্গে যুক্ত গবেষকরা সাফ জানাচ্ছেন যে হাসপাতালের অন্য রোগীরাও যে হেতু এই সংক্রামক রোগের শিকার হন, তাই এই পরীক্ষা হাসপাতালের চৌহদ্দির মধ্যে সীমিত রাখাটাই বিচক্ষণতা!
তো, গবেষকরা পরীক্ষা করে দেখেছেন যে যাঁদের বয়স হয়ে গিয়েছে, রয়েছে কোমর্বিডিটির প্রশ্নও, সেই সব রোগীদের ক্ষেত্রেই এই ভিটামিন D-র ঘাটতি বিপদ ডেকে আনছে। আমাদের শরীরের অভ্যন্তরে কিডনি থেকে এই হরমোন নিঃসৃত হয়। যা রক্তে ক্যালসিয়ামের ঘনত্ব সঠিক পরিমাণে নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে। ভিটামিন D-র অভাবে তাই হাড় দুর্বল হয়ে যায়, পাশাপাশি রক্তে ক্যালসিয়ামের ঘনত্ব কমে এলে শরীরের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতাও পড়ে বিপদের মুখে।
আর এরই জেরে স্পেনের এই হাসপাতালে ভর্তি যে সব কোভিড ১৯-এ আক্রান্ত রোগীদের ক্ষেত্রে ভিটামিন D-র ঘাটতি দেখা গিয়েছে শরীরে, তাঁদের ক্ষেত্রে সমস্যা গুরুতর আকার ধারণ করেছে। বাকি ২০ ভাগ রোগী, যাঁদের শরীরে ভিটামিন D ঠিকঠাক পরিমাণে আছে, তাঁরা কোভিড ১৯-এ আক্রান্ত হলেও তাঁদের নিয়ে দুশ্চিন্তার কারণ দেখা যায়নি।
এই প্রসঙ্গে গবেষকরা লকডাউন পর্বের দিকে ইঙ্গিত করেছেন। তাঁরা বলেছেন যে সূর্যালোক হল এই ভিটামিনের প্রাকৃতিক উৎস। লকডাউন পর্বে অনেককেই ঘরে কাটাতে হয়েছে, তাই এই ভিটামিনের ঘাটতি দেখা দিয়েছে অনেকের ক্ষেত্রেই। অন্য দিকে, যাঁরা এর মধ্যেই অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন, দিন কাটাচ্ছেন শয্যাশায়ী হয়ে, তাঁদের ক্ষেত্রেও সূর্যালোকের সংস্পর্শে আসার প্রশ্নটি অবান্তর!
সব মিলিয়ে সচেতন হওয়াই ভালো! যদি মনে করেন, কী ভাবে শরীরে ভিটামিন D-র ঘাটতি পূরণ করা যায়, সে বিষয়ে পরামর্শ নিতে পারেন চিকিৎসকের।