মোঃ আলাউদ্দিন মন্ডল রাজশাহী:
ছোট আর পরিষ্কার, সবুজঘেরা, অনেকটা পেন্সিলে আঁকা ছবির মতো এক শহর। যে শহরের বাড়িগুলো আকাশ ছোঁয়া অট্টালিকা নয়, প্রতিটা রাস্তাই যেন আলাদা সাজানো। বহির্বিশ্বের কোন শহর নয়, বলছি আমাদের বরেন্দ্র ভ‚মি সিল্কসিটি রাজশাহীর কথা।এ শহরে গরমকালে এক আবার শীতে আরেক রূপ।
গরমকালে খুব সকালে বেরিয়ে পড়লে রাস্তার আশে পাশে চোখে পড়বে পরিষ্কার পরিছন্নতা, আর অনুভ‚ত হবে ফ্রেশ হিমেল হাওয়া, যা দোলা দিবে আপনার মন ও শরীরকে। রাজশাহীর পদ্মা নদীর কথাটা না বললেই নয়, সকালে এক কাপ চা খেয়ে সোজা চলে যেতে পারেন পদ্মা পাড়ে। হাঁটার মাঝে দেখবেন সকালের স্নিগ্ধতা, ঠান্ডা বাতাস আর চারপাশের পরিবেশ, ভালোলাগার মাত্রাটা অন্যরকম বাড়িয়ে দিবে। হালকা ঠান্ডা শীতল বাতাস আপনার মনকে করে তুলবে আরও আনন্দময়।
সূর্যের আলোটা তীব্র না হওয়ার আগপর্যন্ত আরও কিছুটা সময় বসুন। নদীর পানিতে একটু দ‚রে তাকালেই দেখবেন হাল্কা কুয়াশার আবির্ভাব ঘটেছে পানির উপর। খরার সময় পদ্মার বিশাল বালিচর দেখে মনে হতে পারে মরু সাহারার কথা। আবার চরের বুকে হাঁটতে গিয়ে নজর এড়ায়না বালিচরের মাঝে কত পরিশ্রম করে তৈরি করেছে সবুজ ফসলের ক্ষেত।
আবার বর্ষার সময় পদ্মার তীরে দাঁড়িয়ে মনের অজান্তে গুনগুনিয়ে উঠতে পারেন মরহুম আব্দুল আলীমের ভরাট কন্ঠের নদীর কুলনাই কিনার নাইরে…….। নদীর দক্ষিণ পারের চরের বাসিন্দাদের জীবন যাপন অন্যরকম অভিজ্ঞতা দেবে। কি মরা কি ভরা পদ্মার রুপ দেখতে বছরজুড়েই মানুষ ভীড় জমায় পদ্মার তীরে। সুবিধার জন্য সিটি কর্পোরেশন পদ্মার তীরের বিভিন্নস্থানে দৃষ্টিনন্দন স্থাপনা করেছে।
শহররক্ষা টি-বাঁধে হাজারো মানুষ ভীড় জমায়। প্রেসিডেন্ট আব্দুল হামিদ রাজশাহী এলে ক্ষনিকের জন্য হলেও টি-বাঁধের উপর বসেন। নৌকায় চড়েন।শুধু কি পদ্মা। রয়েছে বিরাট বিরাট বিল। চলনবিল, হালতির বিল, মহানগরসহ অনেক বিল। এসব বিলে নৌকায় বেড়াতে পারেন। হালতির বিল পরিচিতি পেয়েছে ‘‘মিনি কক্সবাজার’’ হিসেবে। কুড়ি হাজার একর বিলের বিভিন্নস্থানে উচু ঢিবির উপর ছোট ছোট গ্রাম।
চারিদিকে থৈ থৈ পানির মধ্যে ঘর বসতি। আবার পানি শুকিয়ে গেলে বিল জুড়ে সবুজ ধানের ক্ষেত। এ এক অসাধারন দৃশ্য। চোখে না দেখলে বিশ্বাস করা যায়না। ভরা বিলে ভ্রমনের সময় দেখতে পাবেন মাছ ধরার দৃশ্য। বিলের বিভিন্ন ধরনের টাটকা মাছের স্বাদই যে আলাদা।