বাংলাদেশের প্রতিটি বিভাগের প্রতিটি জেলা আইনজীবী সমিতি থেকে একযোগে জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে এম.সি.কিউ উত্তীর্ণ ২০১৭-২০২০ শিক্ষানবিশ আইনজীবীরা সনদের দাবীতে প্রধানমন্ত্রী,দেশরত্ন, জননেত্রী,মা জননী শেখ হাসিনা বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করে।
ইতিমধ্যেই শিক্ষানবিশ আইনজীবীরা আইনমন্ত্রী ও কাউন্সিলের সচিব এবং বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের সকল নেতৃবৃন্দ বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করেছে। চলতি মাসের ১৫ তারিখ বা এ মাসের শেষের দিকে বার কাউন্সিল সভা রয়েছে বলে জানা যায়।
এ প্রসঙ্গে শিক্ষানবিশ আইনজীবীদের প্রধান সমন্বয়ক একে মাহমুদ জানান,মহামান্য হাইকোর্টের নির্দেশনানু্যায়ী প্রতি বছর আইনজীবী তালিকাভুক্তি পরীক্ষা নেওয়ার বিধান থাকলেও এ কাজটি সুচারুরুপে সম্পন্ন করতে পারেনি বিধায় সৃষ্টি হয়েছে আইন বিষয় অধ্যয়তরন ছাত্রছাত্রীদের অনিশ্চিত ভবিষ্যত। শিক্ষানবিশ আইনজীবীদের কেউ বিগত ১০ বছর, কেউ ৭ বছর আবার কেউ ৫ বছর যাবৎ শিক্ষানবীশ হিসেবে মহান আইন পেশায় বাংলাদেশের বিভিন্ন বার এসোসিয়েশনে আইনজীবীদের সহচর্যে থেকে অত্যন্ত স্বল্প পারিশ্রমিকের বিনিময়ে সেবা প্রদান করে আসছে। অত্যন্ত মর্মাহত ও ব্যথিত চিত্তে বাংলাদেশের শিক্ষানবীশ আইনজীবীগণ এক চরম সংকটময় সময় অতিবাহিত করছে। সারা পৃথিবীতে এই করোনা ভাইরাস নামক মহামারীর কারনে অত্যন্ত মানবেতর জীবন-যাপন অতিবাহিত করছে। পেশাগত দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে আইনজীবী হিসেবে নিবন্ধন না থাকায় বার কাউন্সিল কিংবা বার এসোসিয়েশন থেকে আর্থিক,মানসিক ও আইনগত অধিকার থেকে সম্পূর্ণরুপে বঞ্চিত দেশের প্রায় লক্ষাধিক শিক্ষানবিশ আইনজীবী।এমন পরিস্থিতিতে অদৃষ্টের নির্মম পরিহাসে বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের পরীক্ষা পদ্ধতির পরিবর্তনের কারনে বা অতিরিক্ত কঠোর পরীক্ষা পদ্ধতি চলমান থাকায় বা ৩/৪ বছর পর পর পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হওয়ায় জীবনের অনেক মূল্যবান সময় আইন পেশায় তালিকা ভূক্তির পূর্বেই হরিয়ে যাচ্ছে।
মহামারির কারনে বর্তমানে এক সংকটময় সময় আমরা অতিবাহিত করিতেছি এবং এর সময়কাল আমাদের সকলেরই অজানা। সকল পরীক্ষার্থীরা লিখিত পরীক্ষা দেয়ার উদ্দেশ্য ঢাকায় জড়ো হলে তাদের থাকার জন্য কোন প্রকার বাসা ভাড়া পাওয়া যাবে না এবং এই পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হলে সংশ্লিষ্ট সকলে ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা থেকেই যায়। কঠোর অধ্যাবসয়ের মাধ্যমে কেউ ২০১৭ সালে আবার কেউ বা ২০২০ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারীতে অনুষ্ঠিত এম. সি.কিউ পরীক্ষায় তীব্র প্রতিযোগিতার মাধ্যমে পাশ করেছে। তাদের পরবর্তী লিখিত পরীক্ষা মহামারির কারনে মওকুফ করে ভাইভা নিয়ে অথবা গেজেট করে আইনজীবী হিসেবে তালিকাভূক্তির অবশ্যই যুক্তিসংগত।
জাতির জনকের কন্যা,মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বিগত ২০১৩ সালে ২৬ হাজার বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কে জাতীয়করণের মাধ্যমে বাংলাদেশের ইতিহাসে এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্হাপন করেছিলেন এবং বর্তমানে ও করোনা মহামারীর কারণে ডাক্তার ও নার্স স্পেশাল ভাবে নিয়োগ দিয়ে অন্যন্য নজীর স্থাপন করছেন যা বাংলাদেশে ইতিহাসের পাতায় আপনার নাম স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে। এমনকি স্বাধীনতা পরিবর্তী সময়ে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও বার কাউন্সিলের আইনজীবী তালিকাভুক্তির ব্যাপারে শিথিলতা নির্দেশ প্রদান করেছিলেন।
২০১৭ ও ২০২০ সালে তুমুল প্রতিযোগীতা করে এমসিকিউ পরীক্ষায় পাশ করা শিক্ষানবীশ আইনজীবীদের কে বর্তমানে মহামারী করোনা ভাইরাসের কারনে লিখিত পরীক্ষা ছাড়া সনদ দেওয়ার জন্য আপনার প্রতি সদয় দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। এতে যেমন বার কাউন্সিলে নিয়মিত তালিকাভুক্তির পরীক্ষার সৃষ্ট জটিলতা নিরসন হবে। বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনায় চলমান বিভিন্ন পরীক্ষার ক্ষেত্রে শিথিলতা অমানবিক দিক বিবেচনাপূর্বক অতি দ্রুত প্রতিটি বিভাগের মৌখিক পরীক্ষা নেয়ার সনদ প্রদান করে এ অভিশাপ থেকে মুক্তি দিন। আপনারাই পারেন আমাদের বেকারত্বেরে অভিশাপ ও মা বাবার শেষ স্বপ্ন বাস্তবে রুপান্তরিত করতে।
এ প্রসঙ্গে খুলনা জেলা আইনজীবী সমিতির শিক্ষানবিশ আইনজীবী,মোঃ রায়হান আলী জানান,আপনাদেরেই সন্তান আমরা। আমাদের ন্যায্য দাবী আপনাদেরকেই বলতে হবে। আপনারাই আমাদের অবিভাবক। বাংলাদেশ বার কাউন্সিল ২০২০ সালের এম.সি.কিউ পরীক্ষা খুব কঠিনভাবে নেন। যার কারনে প্রকৃত মেধাবীরাই কৃতকার্য হয়েছে। ফলে পাশের হার অনেক কম। পরীক্ষাজট,করোনাকালীন সময়,
বেকারত্বের অভিশাপ থেকে মুক্তি দিতে বার কাউন্সিল অধ্যাদেশ ৪০(১),(২) অনুসারে বাংলাদেশ বার কাউন্সিল সদয় হয়ে গেজেটের মাধ্যমে এম.সি.কিউ উত্তীর্ণ ২০১৭ এবং ২০২০ সালের প্রায় ১৩০০০ জন শিক্ষানবিশ আইনজীবীর সুন্দর ও উজ্জ্বল ভবিষ্যত গঠনে সহায়তা আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন।