বোয়ালমারী (ফরিদপুর) প্রতিনিধি : ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলার সাতৈর ইউনিয়নের ডোবরা গ্রামে অবস্হিত জনতা জুটমিলের আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে ফায়ার সার্ভিসের নয়টি ইউনিট প্রায় ১৮ ঘন্টা কাজ করেছে। ফায়ার সার্ভিসের ফরিদপুর, মাদারীপুর, রাজবাড়ী, মাগুরা, মহম্মদপুর, বোয়ালমারী, মধুখালী, সালথা ও নগরকান্দাসহ ৯টি ইউনিট কাজ করে। দূরের স্টেশনের দমকল বাহিনী আগুন নিয়ন্ত্রণে এনে ভোরে চলে গেলেও গতকাল সোমবার বিকেল পর্যন্তু চারটি ইউনিটকে আগুনে পুড়া পাটে পানি দেওয়ার কাজ করতে দেখা যায়। জুটমিল কর্তৃপক্ষের ভাষ্য মতে, আগুনে ক্ষয়ক্ষতি প্রায় শত কোটি টাকা হতে পারে।

জনতা জুটমিল সূত্রে জানা যায়, পাটকলের তিন নম্বর ফ্লোরের উৎপাদন শাখায় গত রোববার দুপুরে হার্ডওয়েস্ট (গর্দ্দা) মেশিনের যান্ত্রিক ক্রটি থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়। পাশের গুদামে সুতালি ও পাট থাকায় সেখানে আগুন মূহুত্বের মধ্যেই ছড়িয়ে পড়ে।

জুটমিলের সিনিয়র প্রশাসনিক কর্মকর্তা সৈয়দ নজরম্নল ইসলাম জানান, সোমবার বিকেল পর্যন্তু আগুনে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ সম্পূর্ণ নির্ধারণ করা যায়নি। তবে দুটি গুদামে থাকা পাট ও সুতালি সম্পূর্ণ পুড়ে গেছে। এছাড়া পাট পরিবহনের একটি ট্রলি গাড়ি, দুটি নছিমন, শ্রমিকদের ১০টি বাইসাইকেল ও মিলের ছোটবড় মোট ৯১টি বিভিন্ন যন্ত্রাংশ পুড়ে ধ্বংস হয়ে গেছে। তিনি বলেন, মিলের পাঁচটি ফ্লোরের মধ্যে একটি বাদে বাকিগুলোতে উৎপাদন কাজ চালু আছে। প্রতিদিন তিন শিপ্টে প্রায় তিন হাজার শ্রমিক এখানে কাজ করে। আগুনের ক্ষয়ক্ষতি নির্ধারণে আমাদের মিলের ব্যবস্হসপনা পরিচালকের নির্দেশে আমরা ইতিমধ্যে কাজ শুরম্ন করেছি। ক্ষতিগ্রস্ত ওই ফ্লোরে প্রায় ৬০০ শ্রমিক তিনশিপ্টে কাজ করে।

জুটমিলের ডিজিএম মো. সাইফুল আলম বলেন, আকিজ গ্রম্নপের মালিকানাধীন এ পাটকলের ব্যবস্হাপনা পরিচালক (এমডি) গত রোববার বেলা সাড়ে ১১টায় হেলিকপ্টার যোগে পাটকল থেকে ঢাকার উদ্দেশ্যে বেরিয়ে যান। এর ঘন্টা খানেক পরেই আগুনের এ দূর্ঘটনা ঘটনা ঘটে। তিনি আরো বলেন, পারটেক্স গ্রুপের কাছ থেকে আকিজ গ্রুপ মাত্র নয় মাস আগে মিলটি কিনেছেন। এটি আধুনিকায়নের জন্য প্রস্তুতি কাজ চলছে। এর মধ্যেই আগুন লেগে দুর্ঘটনা ঘটলো। আগুনে আমাদের মেশিনারিজ ও মালামালের ক্ষয়ক্ষতি ৫০-৬০ কোটি টাকা ছাড়িয়ে যাবে। হিসাব নিকাশ করে মোট ক্ষতির পরিমাণ জানানো হবে।

সোমবার বিকেলে ফরিদপুর ফায়ার সার্ভিসের সহকারী পরিচালক মো. নজরম্নল ইসলাম বলেন, আমাদের নয়টি ইউনিট প্রায় ১৮ ঘন্টা চেষ্টা করে জুটমিলের আগুন নিয়ন্ত্রণে এনেছে। পাটের আগুন ঝুঁকিপূর্ণ এবং সহজে নিভেনা, তাই আমাদের চারটি ইউনিট এখনও সেখানে কাজ করছে। পাটকল কতৃপক্ষ বিমা দাবি নিষ্পত্তির আবেদন করলে আমাদের মহাপরিচালকের দপ্তর থেকে একটি তদন্ত কমিটির মাধ্যমে আমরা আগুনে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নির্ধারণ করবো।