• ঢাকা
  • শুক্রবার, ১৫ই চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ, ২৯শে মার্চ, ২০২৪ ইং
চরভদ্রাসনে কাঁশবন ভেঙে কৃষি বিপ্লব ঘটিয়েছে শীপু খালাসী

চরভদ্রাসন (ফরিদপুর) প্রতিনিধি :- 

ফরিদপুরের চরভদ্রাসন উপজেলা সদর ইউনিয়নের মাথাভাঙ্গা গ্রামের পদ্মা নদী পারের বিশাল বিশাল কাশবন ভেঙে চরাঞ্চলে কৃষি বিপ্লব ঘটিয়েছেন বিএস ডাঙ্গী গ্রামের প্রয়াত মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার শফিউদ্দিন খালাসীর পুত্র মো: রেজাউল হায়াত ওরফে শীপু খালাসী (৪২)। তিনি ফরিদপুর পরিবার পরিকল্পনা বিভাগে অফিস তত্ত্বাবধায়ক হিসেবে চাকুরীরত থাকার পরও অবসর সময়টুকু মজুরদের সাথে কাজে লাগিয়ে পদ্মা চরের প্রায় সাড়ে চারশত বিঘা (দেড়শত একর) কাঁশবন উপড়ে ফেলে নিষ্ফলা জমিতে উৎপাদন করে চলেছেন শত শত মন ধান, সরিষা, মশুর ও কালাই ফসল। ফরিদপুর বিএডিসি’র ডাল ও তৈলবীজ খামারের উপ-পরিচালকের পরামর্শে এবং “একখন্ড জমিও অনাবাদী থাকবে না” প্রধানমন্ত্রীর এ ঘোষনায় উদ্ধুদ্ধ হয়ে তিনি পদ্মা চরের কাঁশবন ভেঙে কৃষি বিপ্লব ঘটিয়েছেন বলে জানিয়েছেন।

শীপু খালাসী জানান, বর্তমানে আমার বাড়ী উপজেলা সদরে হলেও পুরাতন বসতভিটে ঘিরে মাথাভাঙ্গা গ্রামে পদ্মা পারে জেগে ওঠে বিশাল চর। কাশবন বেষ্টিত প্রায় উক্ত চর প্রায় ৩০ বছর ধরে জঙ্গলা জমি হিসেবে পড়ে ছিল। প্রধানমন্ত্রীর ঘোষনা ও ফরিদপুর বিএসডিসি’র উপ-পরিচালকের পরামর্শে ২০২০ সাল থেকে কাঁশবন উপড়ে ফেলে নিষ্ফলা জমিগুলো আবাদযোগ্য করে গড়ে তোলেছি। তিনি জানান, প্রথমে গ্রাস কাটার মেশিন দিয়ে বিশাল কাশঁবন জঙ্গল মুক্ত করা হয়েছে। পড়ে বড় ট্রাক্টর লাগিয়ে পর পর চার দফায় চাষ দিয়ে জমিগুলো আবাদ যোগ্য করা হয়েছে। বনের জঙ্গল পরিস্কার ও দেড়শত একর জমি আবাদযোগ্য করে গড়ে তোলতে প্রায় ৯ মাস সময় লেগেছে। এতে প্রায় ১২ লাখ টাকা খরচ হয়েছে। এছাড়া মাসে ৩৫ হাজার টাকা ব্যায়ে নিয়মিত তিনজন মজুর জমিগুলো পরিচর্চা কাজে লাগানো হয়েছে।

রোববার সরেজিন ঘুরে জানা যায়, উক্ত কাশঁবন ভেঙে এ পর্যন্ত ২৫০ বিঘাত জমিতে কালাই ফসল, ১১০ বিঘাত মশুর, ৫০ বিঘাত সরিষা ও ২৫ বিঘাত জমিতে ধান ফসল আবাদ করা হয়েছে। উক্ত কৃষক ইতিমধ্যে একটি মৌসুমের ফসল ঘরে তোলেছেন এবং সম্প্রতী আরেকটি ফসল তোলা শুরম্ন হয়েছে। এ দু’টো ফসল মিলে তার খরচের টাকা প্রায় উঠে এসছে বলে তিনি জানিয়েছেন। তিনি এ পর্যন্ত বিক্রিত ফসলের মধ্যে সাড়ে ৩ লাখ টাকার তীল বীজ ফসল, ৪ লাখ টাকার কালাই, সোয়া ২ লাখ টাকার মশুর ও ২ লাখ টাকার ধান সহ সর্বমোট প্রায় পৌনে ১২ লাখ টাকার ফসল বিক্রি করেছেন। আর এ বছরের ফসলগুলো ঘরে তোলতে পারলে তিনি লাভের মুখ দেখবেন বলে জানিয়েছেন। এছাড়া উক্ত কৃষকের ফসলী মাঠ ঘেষে তিনি একটি গরম্ন ও ছাগলের ফার্ম গড়েছেন। ‘তাজ এগ্রো ফার্ম’ নামকরন দেওয়া হয়েছে। উক্ত ফার্মে ৩৫টি ছাগল ও ৮টি গরু রয়েছে।

রোববার মো: রেজাউল হায়াত ওরফে শীপু খালাসী আরও বলেন, ” পদ্মার চরে কাঁশবন ভেঙে যেটুকু উৎপাদনশীল জমি গড়েছি তা সম্পূর্ন আমার নিজ উদ্যোগে নিজের পুঁজি খাটিয়ে করেছি। সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা পেলে পদ্মার চরাঞ্চলে পড়ে থাকা আরও অনেক কাঁশবন আবাদযোগ্য করে গড়ে তোলা সম্ভব”। এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি অফিসার প্রতাপ মন্ডল জানান, ” ইতিমধ্যে উপজেলার অনেকেই পদ্মার চরে নিষ্ফলা কাশবন ভেঙে আবাদযোগ্য করে তোলছেন। আমরা তাদের ব্যাংকের লোন সহায়তা, সঠিক পরামর্শ ও অফিসিয়াল যাবতীয় সহায়তা প্রদান করে চলেছি এবং আধুনিক কৃষক শীপু খালাসী আমাদের কাছে আসলে আমরা তাকে যাবতীয় সহায়তা দিব”।

ফেসবুকে লাইক দিন

তারিখ অনুযায়ী খবর

মার্চ ২০২৪
শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
« ফেব্রুয়ারি    
 
১০১১১২১৩১৪১৫
১৬১৭১৮১৯২০২১২২
২৩২৪২৫২৬২৭২৮২৯
৩০৩১  
দুঃখিত! কপি/পেস্ট করা থেকে বিরত থাকুন।