• ঢাকা
  • শুক্রবার, ১৫ই চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ, ২৯শে মার্চ, ২০২৪ ইং
ফরিদপুরে ডাল ফসলের ও বিনা চাষে বারি মাস-৩ উৎপাদনে প্রশিক্ষণ ও মাঠ দিবস অনুষ্ঠিত

নিরঞ্জন মিত্র ( নিরু),ফরিদপুর :-

বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট (বারি) অধীনে ফরিদপুর সরেজমিন গবেষণা বিভাগ ( সগবি) এর সহযোগিতায় এবং মাদারীপুর আঞ্চলিক ডাল গবেষণা কেন্দ্র (বারি) এর আয়োজনে ‘‘বাংলাদেশে তৈলবীজ ও ডাল ফসলের গবেষণা ও উন্নয়ন’’ প্রকল্পের অর্থায়নে ডাল ফসলের আধুনিক উৎপাদন কলাকৌশল, বীজ সংরক্ষণ এবং প্রযুক্তি সম্প্রসারন শীর্ষক কৃষক প্রশিক্ষণ ও চর এলাকায় বিনা চাষে বারি মাস-৩ উৎপাদন কার্যক্রমের উপর মাঠ দিবস অনুষ্ঠিত হয়েছে। ১৩ জানুয়ারি বুধবার ফরিদপুর সরেজমিন গবেষণা বিভাগ অফিসের হল রুমে সকালে কৃষক প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠিত হয়। বিকালে সদরের ডিক্রিরচর ব্যাপারীডাঙ্গী এলাকায় মাঠ দিবস অনুষ্ঠানটি অনুষ্ঠিত হয়।

বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা এ. এফ. এম. রুহুল কুদ্দুস এর সঞ্চালনায় কৃষক প্রশিক্ষণ ও মাঠ দিবস অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ত্ব করেন ফরিদপুর সরেজমিন গবেষণা বিভাগ (বারি) এর অঞ্চল প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. সেলিম আহম্মেদ। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন মাদারীপুর আঞ্চলিক ডাল গবেষণা কেন্দ্রের মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মো. ছালেহ উদ্দিন। অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন মাদারীপুর আঞ্চলিক ডাল গবেষণা কেন্দ্রের বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা নন্দ দুলাল কুন্ডু ও বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মো. মামুনুর রশিদ প্রমূখ।

এসময় অনুষ্ঠানে অতিথিদের বক্তব্যে বলেন, বাংলাদেশের কৃষিতে ডাল ফসল খুবই গুরুত্বপূর্ণ কারণ মাটির স্বাস্থ্য সংরক্ষণ, দারিদ্র বিমোচন ও পুষ্টিহীনতায় ভোগা বিশাল জনগোষ্ঠীর পুষ্টির চাহিদা পূরণের পাশাপাশি আমিষের অন্যতম প্রধান উৎস। ডালফসলে আমিষের পরিমাণ ২০ থেকে ৩০%। এজন্য ডালকে গরিবের মাংস বলা হয়ে থাকে। বাংলাদেশে ডাল ফসলের আবাদী জমির পরিমাণ প্রায় ১০ লক্ষ হেক্টর যা মোট আবাদি জমির শতকরা ১২ ভাগ এবং উৎপাদিত ডালের পরিমান ১০ লক্ষ মেট্রিক টন। বিশ্ব খাদ্য সংস্থার রিপোর্ট অনুযায়ী প্রতিদিন একজন মানুষের ৪০ থেকে ৪৫ গ্রাম ডাল খাওয়া উচিত, সে তুলনায় আমরা ভক্ষণকরি মাত্র ১৭ গ্রাম। অপর্যাপ্ত উৎপাদনের জন্য এদেশের জনগণের মাথাপিছু দৈনিক ডালের প্রাপ্যতা খুবই কম। কৃষকের ডাল ফসলের উৎপাদন বাড়াতে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট ডালের অনেক জাত ও প্রযুক্তি উদ্ভাবন করেছে। এধরনের জাত ও প্রযুক্তি সম্বন্ধে কৃষককে জানানোর জন্যই এধরনের কৃষক প্রশিক্ষণ আয়োজন করা হয়েছে। ফলে কৃষক ডাল ফসলের কৃষিতাত্ত্বিক ব্যবস্থাপনা, ক্ষতিকারক পোকামাকড় ও রোগ-বালাই সনাক্তকরন ও তাদের বালাই ব্যবস্থাপনা এ প্রশিক্ষণ এর মাধ্যমে কৃষক জানতে পারবে। কৃষকদের বিএআরআই উদ্ভাবিত নতুন জাত ও প্রযুক্তি দ্বারা ডাল ফসল আবাদের জন্য অনুরোধ করা হয়।

এসময় অনুষ্ঠানে সংশ্লিষ্ট বৈজ্ঞানিক সহকারী, প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার কর্মী উপস্থিত ছিলেন। প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠানে মোট ২৫ জন কৃষক ও কিষাণী অংশগ্রহন করেন। কৃষক প্রশিক্ষণের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শেষে কারিগরী পর্বে পাওয়ার পয়েন্ট এর মাধ্যমে তাত্ত্বিক উপস্থাপনা দেখানো হয়। ডাল ফসলের আধুনিক প্রযুক্তি যেমন নতুন নতুন ফসলের সংযোজন, কৃষিতাত্ত্বিক ব্যবস্থাপনা যেমন সার, সেচ ও আন্তঃপরিচর্যা, বালাই ব্যবস্থাপনা এবং ফসল সংগ্রহ প্রযুক্তি সম্পর্কে বিভিন্ন বক্তা আলোচনা করেন। বক্তব্য প্রদান শেষে প্রশ্ন উত্তর পর্ব অনুষ্ঠিত হয়।

ফরিদপুর সদরের ডিক্রিরচর ব্যাপারী ডাঙ্গী এলাকায় বারি মাস-৩ এর উৎপাদন কার্যক্রমের উপর অনুষ্ঠিত মাঠ দিবসে ৬০ জন কৃষক কৃষানী অংশগ্রহন করেন। এরপরে বারি উদ্ভাবিত বারি মাস-৩ এর মাঠ পরিদর্শণ করেন। কৃষকেরা সাধারণত স্থানীয় জাতের মাসকলাই’র আবাদ করে থাকে যার ফলন কম এবং রোগ ও পোকামাকড়ের পরিমাণ বেশী। বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট কর্তৃক উদ্ভাবিত বারি মাস-৩ (হেমন্ত) জাতটির ফলন শতকে প্রায় ৬ কেজি। যার দ্বারা বারি উদ্ভাবিত এ জাতসমূহ কৃষক পর্যায়ে আবাদ করে দেশে ডালের ঘাটতি অনেকাংশে পূরণ করা সম্ভব। তাই, কৃষকেরা প্রচলিত জাতের পরিবর্তে বারি উদ্ভাবিত বারি মাস-৩ কে গ্রহন করার আশাবাদ ব্যক্ত করেন। সবাইকে নতুন প্রযুক্তি গ্রহন করে মাসকলাইর উৎপাদনকে আরো একধাপ এগিয়ে নিয়ে যাবার জন্য অনুরোধ করেন।

ফেসবুকে লাইক দিন

তারিখ অনুযায়ী খবর

মার্চ ২০২৪
শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
« ফেব্রুয়ারি    
 
১০১১১২১৩১৪১৫
১৬১৭১৮১৯২০২১২২
২৩২৪২৫২৬২৭২৮২৯
৩০৩১  
দুঃখিত! কপি/পেস্ট করা থেকে বিরত থাকুন।