• ঢাকা
  • শনিবার, ৭ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২০শে এপ্রিল, ২০২৪ ইং
ফরিদপুরে আ’লীগের বর্ধিত সভা আগামীকাল শনিবার

নিজস্ব প্রতিনিধি:-ফরিদপুর জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন হচ্ছে ১২ মে। এর আগে দলটির বর্ধিত সভা হবে রবিবার ১৬ এপ্রিল। একাধিক প্রেসিডিয়াম মেম্বারসহ কেন্দ্রীয় নেতারা এতে উপস্থিত থাকবেন। শহরের গোয়ালচামটে হোটেল র‌্যাফেলসইন দুপুর ২টায় শুরু হবে সভার কার্যক্রম। সদর আসনের এমপি ও সাবেক মন্ত্রী খন্দকার মোশাররফ সভায় থাকছেন না।

সম্মেলনকে সামনে রেখে এ বর্ধিত সভাকে ঘিরে ব্যাপক তোড়জোড় শুরু হয়েছে। শহরের সড়কপথে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থান ছাড়াও ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের প্রবেশমুখ শিবরামপুর সাইনবোর্ড, দক্ষিণাঞ্চলমুখে মধুখালী, বরিশাল প্রান্তে ভাঙ্গা জুড়ে প্রায় শতাধিক তোরণ নির্মাণ করা হয়েছে। শহরের সড়ক পথের দুই ধারে, ডিভাইডারের মাঝে শোভা পাচ্ছে ব্যানার ফেস্টুন। বিভিন্ন নেতাদের গুরুত্বপূর্ণ পদে দেখতে চাই সম্বলিত বিশালাকৃতির ব্যানার দৃষ্টি কেড়েছে।

দলীয় সূত্র জানায়, বর্ধিত সভায় প্রধান অতিথি আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য কাজী জাফরউল্লাহ। বিশেষ অতিথি আরেক প্রেসিডিয়াম কর্নেল ফারুক খান, আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য আব্দুর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক মীর্জা আজম, বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন, ইকবাল হোসেন অপু প্রমুখ।

জানা গেছে, বর্ধিত সভাকে ঘিরে নেতাকর্মীদের মাঝে সম্মেলনের আমেজ বিরাজ করছে। সভায় সম্মেলন প্রস্তুতির বিভিন্ন কমিটি ও উপকমিটি গঠন করা হবে। সম্মেলনের ভেনু নির্ধারণ ও অতিথি নির্ধারণ করা হবে। পাশাপাশি জেলা নেতারা দলের বর্তমান পরিস্থিতিতে তাদের অবস্থান তুলে ধরে বক্তব্য রাখবেন।

এদিকে, সম্মেলনের প্রাক প্রস্তুতি হিসেবে জেলা আওয়ামী লীগের এ প্রস্তুতি সভাকে ঘিরে পদ প্রত্যাশীরা ব্যাপক প্রচার-প্রচারণা চালাচ্ছেন। কর্মী সমর্থক ও জেলাবাসীর নামে তাদের ব্যানার, ফেস্টুনের পাশাপাশি ঢাউস আকৃতির ডিজিটাল ব্যানার চোখে পড়ছে প্রায় সব জায়গাতেই। কেন্দ্রীয় নেতাদের ছবি দিয়ে অনেকে নিজেদের ব্যানার ও বিলবোর্ড তৈরী করে শহরের আনাছে কানাছে স্থাপন করেছেন। অনেকে সভাপতি কিংবা সাধারণ সম্পাদক পদ প্রত্যাশীর দেখা মিলছে এসবে।

জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা সৈয়দ মাসুদ হোসেন জানিয়েছেন, এরই মধ্যে বর্ধিত সভা অনুষ্ঠানে সকল আয়োজন সম্পন্ন করা হয়েছে। নেতাকর্মীদের মাঝে সভাকে ঘিরে ব্যাপক উৎসাহ সৃষ্টি হয়েছে।

২০১৬ সালের ২২ মার্চ জেলার আওয়ামী লীগের সর্বশেষ ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। ওই সম্মেলনে আওয়ামী লীগের তৎকালীন কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম ফরিদপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি পদে অ্যাডভোকেট সুবল চন্দ্র সাহা এবং সাধারণ সম্পাদক পদে বীর মুক্তিযোদ্ধা সৈয়দ মাসুদ হোসেনের নাম ঘোষণা করেন। এরপর ২০১৭ সালের ২৯ ডিসেম্বর পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করা হয়।

প্রসঙ্গত, ২০০৮ সালের ডিসেম্বরের নির্বাচনে ফরিদপুরের সদর আসনে নৌকার প্রার্থী হয়ে সংসদ সদস্য হন ইঞ্জিনিয়ার খন্দকার মোশাররফ হোসেন। এরপর তিনি জেলায় আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে একক কান্ডারী হিসেবে আবির্ভূত হন। নিজ দলের প্রতিপক্ষদের কোনঠাসা রেখে দীর্ঘ প্রায় ১১ বছরেরও বেশি সময় তিনি আওয়ামী লীগের রাজনীতি পরিচালনা করে আসছিলেন। তবে হাজার হাজার কোটি টাকার দুর্নীতির অভিযোগে ২০২২ সালের জুনে এক শুদ্ধি অভিযানে খন্দকার মোশাররফের প্রভাববলয় তছনছ হয়ে যায়। তার অনুসারীদের শীর্ষ সকলেই একের পর এক মানি লন্ডারিংসহ নানা মামলায় গ্রেফতার হন। সর্বশেষ তার পিএস এইচএম ফোয়াদ ও ছোট ভাই খন্দকার মোহতেশাম হোসেন বাবরকে গ্রেফতার করে পুলিশ। শুদ্ধি অভিযানেরও আগে দুর্নীতির মামলায় গ্রেফতার হন তার সাবেক এপিএস সত্যজিত মুখার্জি ও রাজনৈতিক প্রধান সেনাপতি মোকাররম বাবু। কার্যত ফরিদপুরে আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে এখন খন্দকার মোশাররফ আমলের অবসান ঘটেছে।

জেলায় আওয়ামী রাজনীতিতে পট পরিবর্তনের পরে নতুন করে সম্মেলন আয়োজনের কানাঘুষা চলছিলো গত দুই বছর ধরেই। এজন্য তখন থেকেই পদ পেতে গ্রুপিং, লবিং ও দৌড়-ঝাপ শুরু হয়। মোশাররফের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের পতনের পর ফরিদপুরে আওয়ামী লীগের রাজনীতির বিভক্তি প্রকাশ্যে আসতে শুরু করে। বর্তমানে জেলায় আওয়ামী লীগের রাজনীতির মূল নেতৃত্বে রয়েছেন প্রেসিডিয়াম মেম্বার কাজী জাফরউল্লাহ সমর্থিতরা। অপর অংশে রয়েছে আওয়ামী লীগের আরেক প্রেসিডিয়াম মেম্বার আব্দুর রহমান ও যুবলীগের প্রেসিডিয়াম মেম্বার এমপি নিক্সন চৌধুরী সমর্থিতরা।

কেন্দ্রীয় নেতাদের দৃষ্টিতে আসতে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদ প্রত্যাশা করে শহরের আনাছে-কানাছে পোস্টারিং ও বিলবোর্ডের পাশাপাশি সোশ্যাল মিডিয়াতেও ঝড় তুলেছে সমর্থকেরা।

ফরিদপুর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ মাসুদ হোসেন বলেন, একটি বড় দলের মধ্যে নেতৃত্বের প্রতিযোগিতা থাকবেই। বর্ধিত সভায় জেলা ও উপজেলার শীর্ষ নেতারা কেন্দ্রীয় নেতাদের কাছে দলের সাংগঠনিক অবস্থা তুলে ধরতে পারবেন। এমনকি দল চালাতে যে কোন গঠনমূলক পরামর্শ দিতে পারবেন।

তিনি বলেন, দলীয় সভানেত্রীর নির্দেশে কেন্দ্রীয় নেতারা আগামী সম্মেলনের তারিখ ঘোষভা করবেন এবং সম্মেলন সুষ্ঠভাবে সম্পন্ন করতে করণীয় বিষয়ে আমাদের নির্দেশনা দিবেন।

জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সবুল চন্দ্র সাহা বলেন, এই সভায় তৃণমূলের নেতাকর্মীদের সাথে কেন্দ্রীয় নেতৃদের একটি সংযোগস্থাপন হবে। এভাবেই দীর্ঘদিনের পরীক্ষিত নেতাদের মূল্যায়ন করা হবে। এতে দল উপকৃত হবে। জননেত্রী শেখ হাসিনার হাত শক্তিশালী হবে। সংবাদ সুত্র ঃ–BVnews24

ফেসবুকে লাইক দিন

তারিখ অনুযায়ী খবর

এপ্রিল ২০২৪
শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
« মার্চ    
 
১০১১১২
১৩১৪১৫১৬১৭১৮১৯
২০২১২২২৩২৪২৫২৬
২৭২৮২৯৩০  
দুঃখিত! কপি/পেস্ট করা থেকে বিরত থাকুন।