• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ১২ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২৫শে এপ্রিল, ২০২৪ ইং
চরভদ্রাসনে লকডাউনে দিশেহারা মধ্যবিত্ত পরিবারগুলো

মনির হোসেন পিন্টু, চরভদ্রাসন উপজেলা প্রতিনিধি :- করোনা ভাইরাস সংক্রমণ রোধে সারা দেশে নেয়া হয়েছে লকডাউনসহ নানান পদক্ষেপ। এই মোকাবেলায় চরম সংকটে পড়েছে মধ্যবিত্ত পরিবার ও ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা।

চলমান লকডাউনে দিশেহারা হয়ে পড়েছে চরভদ্রাসনের নিম্ন মধ্যবিত্ত আয়ের পরিবারগুলো।

নিম্নবিত্ত-দরিদ্ররা সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন সাহায্য-সহযোগিতা পেলেও মধ্যবিত্তদের বড় একটি অংশই অসহায়।

দৈনন্দিনের স্বাভাবিক কাজকর্ম বন্ধ থাকায় তাদের আয়-রোজগার নেই। ফলে একদিকে খাবার কিনতেও হিমশিম খাচ্ছেন, অপরদিকে সামাজিক মর্যাদার কারণে কারও কাছে চাইতেও পারছেন না। নিরবেই কষ্ট সহ্য করতে হচ্ছে তাদের।

এদিকে সরকার ঘোষিত সাত দিনের লকডাউনকে ঘিরে কয়েকদিনের ব্যবধানে স্থানীয় বাজারে দ্রব্যমূল্যেরও উর্দ্ধগতি লক্ষ্য করা গেছে।

উপজেলায় বড় একটি অংশ মধ্যবিত্ত। তারা ক্ষুদ্র বা মাঝারি ধরনের ব্যবসা করে সংসার চালান। কসমেটিকস্, কাপড়ের দোকান ও ইলেকট্রনিক্সসহ হরেক রকম পণ্যের দোকান রয়েছে মধ্যবিত্তদের। এসব দোকান থেকে করা আয়ে তাদের সংসার চলে।

এর বাইরে তাদের আয়ের কোন পথ নেই। লকডাউনে নির্দিষ্ট কিছু ব্যবসা ছাড়া বাকি ব্যবসা বাণিজ্য বন্ধ রয়েছে। দোকান পাট খোলার উপরও নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। মোট কথা তাদের আয় রোজগার বন্ধ হয়ে গেছে গত কয়েকদিন ধরে।

উপজেলা সদর বাজারের জুতা সেন্ডেল ব্যবসায়ী সামসু, কসমেটিকস ব্যবাসায়ী সিরাজ ও কাপড় ব্যবসায়ী তাজুল বলেন, বিভিন্ন এনজিও এবং ব্যাংক থেকে লোন নিয়ে ব্যবসা করে পরিবার নিয়ে খাচ্ছি। চলমান লকডাউনে গত কয়েকদিন ধরে দোকান পাট বন্ধ রয়ে আয় রোজগার বন্ধ হয়ে গেছে। এঅবস্থায় দোকান ভাড়া ও সংসার চালাতে কোনো উপায়ন্তর না দেখে দিশেহারা হয়ে পড়েছি।

তারা আরো বলেন, করোনা পরিস্থিতির কারণে কঠিন অনিশ্চয়তায় পড়ে এখন আমরা চোঁখেমুখে অন্ধকার দেখছি। কীভাবে দোকান ভাড়া দেব, কীভাবে সংসার চালাব, সেই চিন্তায় ঘুম আসে না আমাদের। অপরদিকে এমন কষ্টের কথা কাউকে বলতেও পারছিনা আমরা।

তারা জানান, গত বছরও প্রায় একইদিনে লকডাউনে দোকানপাট বন্ধ রয়ে ব্যবসার অনেক লোকশান হয়েছে। এবছর ভেবেছিলাম ব্যবসা করে কিছুটা হলেও লোকশান পুশিয়ে নিতে পারবো। কিন্তু এবছরও রমজানে লকডাউনে ব্যবসা বন্ধ হয়ে গেছে। পরিবার নিয়ে কিভাবে যে আমাদের সংসার চলবে তা একমাত্র আল্লাহই জানে।

এদিকে, শুক্রবার (১৬ এপ্রিল) সদর বাজার ঘুরে দেখা গেছে, কাঁচা মালের বাজারেও ওস্তা, ঢেড়ঁস শাক-সবজিসহ বিভিন্ন পন্যের দামও লকডাউনকে ঘিরে অনেকটা বেড়ে গেছে।

একইদিন বাজারের বিভিন্ন অলিগলি ঘুরে দেখা গেছে, কিছু ব্যবসায়ীরা পেটের দায়ে প্রশাসনের নজর এড়িয়ে দোকানের সামনে দাঁড়িয়ে বেচাবিক্রির চেষ্টা চালাচ্ছে।

উপজেলার সদর ইউনিয়নের এক ব্যক্তির সঙ্গে কথা হয় এ প্রতিবেদকের। তিনি মধ্যবিত্ত পরিবারের লোক। তিনি বলেন, ভাই বড় বিপদে আছি। সংসার চালাতে যুদ্ধ করতে হচ্ছে। চক্ষুলজ্জায় কষ্টগুলো প্রকাশ করতে পারছি না। ওই যে আমরা মধ্যবিত্ত।

তিনি খুব আক্ষেপ করে বলেন, আমাদের কোনো কষ্ট নেই। আছে শুধু সুখ। কিন্তু এর আড়ালে আমরা যে কত কষ্টে জীবনযাপন করি, তা বোঝানো যায় না। কেউ বোঝারও চেষ্টা করে না।

জানা যায়, নিম্ন আয়ের মানুষের হাতে খাবার এবং প্রয়োজনীয় দ্রব্য তুলে দিচ্ছেন অনেকেই। সরকারও গরিব ও নিম্ন আয়ের মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে। তবে মধ্যবিত্তের পাশে নেই কেউ। ঘরে খাবার না থাকলেও মধ্যবিত্তরা লজ্জায় কিছু বলতে পারছে না। বর্তমানে বাজারে নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের দামও বেড়েছে। বাজারে এসব পন্য কিনতে হিমশিম খেতে হচ্ছে আমাদের মধ্যবিত্ত পরিবারগুলোর। এমনভাবে চলতে থাকলে আগামী দিনগুলোতে ঘরে ছোট ছোট ছেলেমেয়ে, মা, বাবা, ভাই,বোন নিয়ে কিভাবে যে সংসার চলবে ভাবলেই দিশেহারা হয়ে পড়েছি।

ফেসবুকে লাইক দিন

তারিখ অনুযায়ী খবর

এপ্রিল ২০২৪
শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
« মার্চ    
 
১০১১১২
১৩১৪১৫১৬১৭১৮১৯
২০২১২২২৩২৪২৫২৬
২৭২৮২৯৩০  
দুঃখিত! কপি/পেস্ট করা থেকে বিরত থাকুন।