নিরঞ্জন মিত্র ( নিরু) ( ফরিদপুর জেলা প্রতিনিধিঃফরিদপুরে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ও মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে জেলা প্রশাসন, জেলা পুলিশ, আওয়ামী লীগসহ বিভিন্ন সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠন নানা কর্মসূচির মাধ্যমে গভীর শ্রদ্ধা, ভালোবাসা ও উৎসবমূখর পরিবেশে মহান বিজয় দিবস উদযাপিত হয়েছে।
সূর্যদয়ের সাথে সাথে ৬. ৩৫ মিনিটে ফরিদপুর পুলিশ লাইনে ৫০ বার তোপধ্বনির মাধ্যমে দিবসের সূচনা হয়। সূর্যদয়ের সাথে সাথে সকল সরকারি, আধাসরকারি, স্বায়ত্তশাসিত, ব্যাক্তি মালিকানাধীন সহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান সমূহে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়।
সকাল ৮ টায় গোয়ালচামট মহান মুক্তিযুদ্ধে শহীদগণের স্মৃতিফলকে শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণ করেন।
প্রথমে আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা মন্ডলীর সদস্য ও স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার খন্দকার মোশাররফ হোসেন এমপির পক্ষে শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পন করেন জেলা প্রশাাসন ও আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ।
এরপরে জেলা প্রশাসন, জেলা পুলিশ প্রশাসন, জেলা আওয়ামী লীগ, জেলা পরিষদ, পৌরসভা, মুক্তিযুদ্ধা সংসদ, প্রেসক্লাব সহ বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পন করেন।
শহীদ স্মৃতিফলকে শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পন শেষে ৮. ১৫ মিনিটে বিজয় র্যালী বের করা হয়। র্যালীটি গোয়ালচামট শহীদ স্মৃতিফলক হতে শুরু করে র্যালীটি শহরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে শহরের কোট কম্পাউন্ড চত্বরে এসে শেষ হয়।
সকাল ৯ টায় মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে নিহত শহীদদের স্মরণে শহরের কোট কম্পাউন্ড স্বাধীনতা চত্বরে পুষ্পস্তবক অর্পণ ও এক মিনিট নিরবতা পালন শেষে সকল শহীদের আত্মার মাগফিরাত কামনায় দোয়া ও মোনাজাত করা হয়।
সকাল ৯,৩০ মিনিটে শেখ জামাল স্টেডিয়ামে জেলা প্রশাসক কর্তৃক আনুষ্ঠানিকভাবে জাতীয় পতাকা উত্তোলন, জাতীয় সংগীত পরিবেশন, সালাম গ্রহণ এবং পুলিশ, আনসার, ভিডিপি সহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের কুচকাওয়াজ ও ডিসপ্লে প্রদর্শন।
এসময় বেলুন ও পায়রা উড়িয়ে মহান বিজয় দিবসের উদ্ধোধন করেন জেলা প্রশাসক অতুল সরকার। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পুলিশ সুপার মোঃ আলিমুজ্জামান (বিপিএম সেবা) , জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি শামীম হক, পৌর মেয়র অমিতাভ বোস, স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক মোহাম্মদ আসলাম মোল্লা, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) দীপক কুমার রায় সহ জেলা আওয়ামী লীগ, মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
সকাল ১১ টায় জেলা প্রশাসনের আয়োজনে, জসিম উদদীন হলে ১৬ ডিসেম্বর মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলা বিনির্মাণে বীর মুক্তিযুদ্ধা ও শহীদ মুক্তিযুদ্ধা পরিবারের সদস্যদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বাদ যোহর সকল মসজিদে মাদক, সন্ত্রাস, জঙ্গীবাদ ও গুজব বিরোধী কার্যক্রমের বিষয়ে জনমত সৃষ্টির জন্য আলোচনা ও জাতির শান্তি, সমৃদ্ধি ও অগ্রগতি কামনা করে আলোচনা এবং মুক্তিযুদ্ধে শহীদ আত্মদানকারী যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য বিভিন্ন মসজিদে মিলাদ মাহফিল ও মোনাজাত। এবং মন্দির, গীর্জা, প্যাগোডা সহ অন্যান্য উপাসনালয়ে প্রার্থনা করা হয়।
এছাড়া হাসপাতাল, জেলখানা, শান্তিনিবাস, এতিমখানা ও শিশু পরিবারে উন্নতমানের খাবার পরিবেশন করা হয়।
সন্ধা ৭ টায় মুক্তিযুদ্ধ ভিত্তিক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
সুবিধাজনক সময়ে শহরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে পুলিশ বাদক দল কর্তৃক বাদ্য পরিবেশন করা হয়।
এছাড়া সকাল ৯ টা থেকে বিকাল ৫ টা শেখ রাসেল শিশুপার্ক বিনা টিকিটে শিশুদের জন্য শিশুপার্ক উন্মুক্ত রাখা এবং প্রদর্শনীয় ব্যবস্থা রাখা হয়।
এদিকে মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে জেলা আওয়ামী লীগ দিনব্যাপী নানা কর্মসূচী পালন করা হয়। সকাল ৭ টা ১৫ মিনিটে জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে জাতীয় সংগীতের সাথে জাতীয় পতাকা এবং দলীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়। এরপর শহীদের স্মরণে ১. ০০ মিনিট নিরবতা পালন করা হয়। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে আওয়ামী লীগসহ সকল সহযোগী অঙ্গ সংগঠনের নেতৃবৃন্দ শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন করেন।
জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এ্যাডভোকেট সুবল চন্দ্র সাহার সভাপতিত্বে এসময় উপস্থিত ছিলেন জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এ্যাডভোকেট শামসুল হক ভোলা মাষ্টার, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ মাসুদ হোসেন, সহ- সভাপতি শামীম হক, জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ঝর্ণা হাসান, মহিলা বিষয়ক সম্পাদিকা আইভি মাসুদ, স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি শওকত আলী জাহিদ, শ্রমিক লীগের সভাপতি মোঃ আক্কাছ হোসেন, জেলা আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক ও পৌর মেয়র অমিতাভ বোস, থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুর রাজ্জাক মোল্লা সহ আওয়ামী লীগের অঙ্গ সংগঠনের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
পরে একটি বিজয় র্যালী বের করে গোয়ালচামট শহীদ স্মৃতিফলকে আওয়ামী লীগসহ সকল সহযোগী সংগঠন শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পন করে। এরপরে জেলা প্রশাসন কতৃক অংশগ্রহণ করেন নেতৃবৃন্দ।
এছাড়া দিবসটি পালন উপলক্ষে বিভিন্ন সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠন নানা কর্মসূচির মাধ্যমে পালন করেছে।