• ঢাকা
  • রবিবার, ৬ই মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৯শে জানুয়ারি, ২০২৫ ইং
সালথায় পাটে নয়, এবার কৃষকদের হাঁসি ফুটেছে পাটখড়িতে

মনির মোল্যা, সালথা (ফরিদপুর) প্রতিনিধি:

এবার অস্বাভাবিক পানির অভাব মোকাবেলা করে ফরিদপুরের সালথা ও নগরকান্দা উপজেলার কৃষকদের স্বপ্নের সোনালী আঁশ পাট ঘরে তুললেও ন্যায্য দাম পাচ্ছেন না তারা। তবে এবার পাটের লোকসান অনেকটা পুষিয়ে নিতে কৃষকদের ব্যাপকভাবে সহযোগিতা করছে পাটখড়ি। যেকারণে পাটের চেয়ে পাটখড়ির (পাটকাঠি) কদর কয়েকগুন বেশি বেড়েছে। বাণিজ্যিকভাবে ব্যবহার বাড়ায় এবং ভাল দাম হওয়ায় পাটখড়ির সঠিক যতœ নিতে ভুলছে না কৃষকরা। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত পাটখড়ির যত্ন নিতে কঠোর শ্রম দিচ্ছে তারা। তাদের পরিশ্রমের দৃশ্য চোখে পড়ছে উভয় উপজেলার সর্বত্রই।

সড়কের দুই পাশে এবং নদ-নদী আর খাল-বিলের পাড়ে সুন্দর করে আঁটি বেধে সাজিয়ে পাটখড়ি শুকিয়ে বিক্রয়ের উপযোগী করতে প্রস্তুত করার দৃশ্য দেখা গেছে। বৃষ্টি ও বর্ষার পানির অভাবে মাটি খুড়ে নোংরা পানিতে পাট জাগ দেওয়ার কারণে পাটের রং হারিয়ে কৃষকদের যে ক্ষতি হয়েছে তা পাটখড়ি দিয়ে পুষাতে মরিয়া হয়ে উঠেছে তারা। তবে শুকনা পাটখড়ির দামও পাচ্ছে ভাল। পাটখড়ির শুকানোর আগেই বিভিন্ন কার্বন ফ্যাক্টরির লোকজন এসে কৃষকদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে শুকনা পাটখড়ি নগদ টাকা দিয়ে কিনে নিয়ে যাচ্ছে। এতে পাটে লোকসান গুনা কৃষকদের মলিন মুখে ফুটেছে হাঁসির ঝিলিক।

সালথা উপজেলার গট্টি ইউনিয়নের পাটচাষি হাফেজ মোল্যা, সহিদ মিয়া ও জাহিদ মোল্যা বলেন, পাট নিয়ে এবারের মতো এমন দুর্ভোগে আগে কখনো পড়েনি আমরা। পানির অভাবে মাটি খুঁড়ে পাট জাগ দিতে হয়েছে। এতে সোনালী আঁশের রং কালো হয়ে গেছে। যে কারণে মণপ্রতি পাটের দাম কমেছে ৬০০ থেকে ৭০০ টাকা করে। তবে পাটের পাশাপাশি পাটখড়ির কালার কিছুটা নষ্ট হলেও এর বেশ ভাল পাচ্ছি।

তারা আরও বলেন, প্রতিবিঘা জমিতে ১৫ থেকে ২০ মণ পাট উৎপাদন হয়েছে। আর এই সোনালী আঁশের ভেতর থেকে অন্তত ১৮০০ থেকে ২ হাজার আঁটি পাটখড়ি বের হয়। সেগুলো শুকানোর পর প্রতিআঁটি পাটখড়ি পাঁচ থেকে ছয় টাকা দরে বিক্রি করছি। বিভিন্ন কার্বন ফ্যাক্টরির লোকজন বাড়িতে এসে পাটখড়ি কিনে যায়। এতে প্রতিবিঘা জমিতে ১০ থেকে ১২ হাজার টাকার পাটখড়ি বিক্রি করছি। ফলে পাটের ক্ষতি অনেকটাই পাটখড়ি দিয়ে পুষিয়ে নিচ্ছি আমরা।

সালথা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ সুদর্শন সিকদার বলেন, বর্তমানে পার্টিকেল বোর্ড তৈরিতে ব্যাপক হারে ব্যবহার হচ্ছে পাটখড়ি। পাটখড়ি থেকে কার্বন (চারকোল) তৈরী করা হচ্ছে। পরে সেগুলো বিদেশে রপ্তানি করা হচ্ছে। চীনসহ বিভিন্ন দেশে পাটখড়ি পুড়িয়ে পাওয়া কার্বন থেকে আতশবাজি, কার্বন পেপার, প্রিন্টার ও ফটোকপিয়ারের কালি, মোবাইলের ব্যাটারি, দাঁত পরিস্কারের ওষুধ ও সারসহ নানা পণ্য তৈরি করা হচ্ছে। গত পাঁচ বছরে বিপুল পরিমান বৈদেশিক মুদ্রা আয় হয়েছে চারকোল থেকে। এটা চলমান থাকলে পাটখড়ির চাহিদা বাড়বে। কৃষকেরাও অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হবেন।

১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৩

ফেসবুকে লাইক দিন

তারিখ অনুযায়ী খবর

জানুয়ারি ২০২৫
শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
« ডিসেম্বর    
 
১০
১১১২১৩১৪১৫১৬১৭
১৮১৯২০২১২২২৩২৪
২৫২৬২৭২৮২৯৩০৩১
দুঃখিত! কপি/পেস্ট করা থেকে বিরত থাকুন।