কবির হোসেন, আলফাডাঙ্গা (ফরিদপুর) প্রতিনিধি
শিক্ষার্থী আন্দোলনের তোপের মুখে ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গায় দুর্নীতির সেই স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডাক্তার নাজমুল হাসানকে বদলি করা হয়েছে।
বুধবার (১৬ অক্টোবর) দুপুরে তিনি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে ছাড়পত্র নেন। এর পরে আবাসিক মেডিকেল কর্মকর্তা ডা. তানজিন জাহানকে ক্ষমতা হস্তান্তর করেন।
জানা গেছে, স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা.মোহাম্মদ নাজমুল হাসান স্থানীয় প্রশাসন ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করে নিজ জেলাতেই বিগত ৮ বছর ধরে একই কর্মস্থলে চাকরি করছেন। গত ২০১৫ সালে তার স্ত্রী ডা. শাহতাজ আলমকে এই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়োগ দেন। কিন্তু তার স্ত্রী নিয়োগের পর দুই বছরে একদিনও অফিসে না এসেই নিয়মিত বেতন ভাতা গ্রহণ করেন। প্রতিদিন ১০-১২ জন রোগীকে অতিরিক্ত ভর্তি দেখিয়ে তাদের অনুকূলে সরকারি বরাদ্দের সব টাকা হাতিয়ে নেয়। তিনি ভুয়া বিল ভাউচারের মাধ্যমে সরকারি অর্থ আত্মসাৎ করেন। এছাড়াও তিনি যোগদানের পর থেকে সাধারণ রোগীকে হয়রানি, ক্ষমতার অপব্যবহার, কর্মচারীদের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণ, বিভিন্ন প্রশিক্ষণের ভাতার টাকা আত্মসাৎ ও আনুতোষিক ভাতা নয় ছয় করে আসছেন তিনি। এমনকি ভিটামিন-এ প্লাস ক্যাম্পেইন, খুদে চিকিৎসক ক্যাম্পেইন ভাতা ও মাঠকর্মীদের সম্মানী ভাতা পর্যন্ত নিজের পকেটে ঢুকিয়ে নিয়েছেন তিনি।এছাড়াও নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।
এ সব দুর্নীতি ও অনিয়ম তুলে ধরে ডাক্তার নাজমুল হাসানের বিরুদ্ধে পদত্যাগের দাবিতে পর পর তিনবার আন্দোলন করেন শিক্ষার্থীরা। আন্দোলনের একপর্যায়ে ওই দুর্নীতি স্বাস্থ্য কর্মকর্তার কক্ষে তালা ঝুলিয়ে দেন শিক্ষার্থীরা।
আন্দোলনকে ঘিরে একাধিক পত্র পত্রিকায় প্রকাশিত হলে বিষয়টি উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের নজরে আসে।শেষ পর্যন্ত ৮ অক্টোবর স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের পক্ষে পরিচালক (প্রশাসন) ডা. এ বি এম আবু হানিফ স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে তাকে বদলির আদেশ দেওয়া হয়। প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, আলফাডাঙ্গা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মোহাম্মদ নাজমুল হাসানকে দিনাজপুরের বোঁচাগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে একই পদে বদলি করা হয়েছে।
অবশেষে এই স্বাস্থ্য কর্মকর্তাকে বদলি করায় সন্তোষ প্রকাশ করেছেন ওই হাসপাতালের কর্মকর্তা, কর্মচারী, সেবা থেকে বঞ্চিত রোগী ও সুধীজনেরা।
কবির হোসেন
০১৭১৬৪৫৫৮৩৬
তাং ১৭ অক্টোবর ২০২৪