রাজশাহীর বাগমারা উপজেলার ঝিকড়া ইউনিয়নের জঙ্গী বাবুল ফের তৎপর হয়ে উঠেছে। এ নিয়ে এলাকাবাসীর মাঝে নতুন করে দেখা দিয়েছে আতংক।
জানা যায়, বাগমারা উপজেলার ঝিকড়া ইউনিয়নের আব্দুর রাজ্জাক ওরফে বাবুল ওরফে এজাজুল নামে পরিচিত। বিভিন্ন সময় জঙ্গীবাদে জড়িয়ে পড়লেও নানা প্রকার নামের কারনে ধরা ছোঁয়ার বাইরে থেকে কার্যক্রম পরিচালিত করে চলেছেন। সে বিভিন্ন সময় মিথ্যা মামলা ও মিথ্যা জিডি করে এলাকাবাসীর মাঝে ভয়ভীতির সৃষ্টি করে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।
এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, জঙ্গী বাবুল ২০০৪ সালে বাগমারায় সর্বহারা দমনের নামে বাংলা ভাইয়ের আগমন ঘটলে জঙ্গী বাবুল বাংলা ভাইয়ের দলে যোগ দিয়ে এলাকায় ভয়ভীতি দেখিয়ে ব্যাপক চাঁদাবাজী করে। ওই সময় ভয়ে এলাকাবাসী তার বিরুদ্ধে কোন প্রতিবাদ না করলেও বাংলা ভাই আত্মগোপনে যাওয়ার পর জঙ্গী বাবুলের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজী হত্যাসহ একাধিক মামলা দায়ের করে এলাকাবাসী। বর্তমানে সে এলাকায় সরকারি বিভিন্ন দপ্তরের বড় বড় কর্তা ব্যক্তিদের সাথে সম্পর্ক রয়েছে বলে চাঁদাবাজী শুরু করেছে।
এছাড়াও নিষ্ক্রিয় জঙ্গী ক্যাডারদের আবারও সংগঠিত করে ঝিকরাসহ আশে পাশের এলাকায় রাতের আঁধারে গোপন বৈঠক করে বিভিন্ন লোকজনের কাছে নামে বেনামে চাঁদা দাবী করে আসছে। তার এসব অপকর্মের প্রতিবাদ করলেই তার বিরুদ্ধে থানায় জিডিসহ মামলা করে হয়রানি করছে এলাকাবাসীকে। এরকম ঘটনায় ঝিকরা ইউনিয়নের ইউপি সদস্য মানিক ও তার ভাই হানিফ জঙ্গী বাবুলের চাঁদাবাজীর বিরুদ্ধে কথা বলায় গত ১০ জুলাই তাদের দুই ভাইয়ের বিরুদ্ধে বাগমারা থানায় একটি সাধারণ ডায়েরী করে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, মানিক প্রামানিক ঝিকরা ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচিত সদস্য, পুলিশিং কমিটির সভাপতি, ইউনিয়ন আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তৎকালীন বাংলা ভাই, আর জেএমবির নির্মম নির্যাতনে আহত হয়েছিল মানিক মেম্বার। শারীরিক চিকিৎসার জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিল থেকে এক লাখ পাকা অনুদান প্রদান করা হয় তাকে। এদিকে যাদেরকে ওই অভিযোগে স্বাক্ষী হিসেবে উল্লেখ করেছেন তারা বলেন ঝিকরায় এ ধরণের কোন ঘটনা ঘটেনি। জঙ্গী বাবুলের জিডির আরেক স্বাক্ষী চা দোকানদার লবার আলী জানান, আমার দোকানের সামনে জঙ্গী বাবুলকে কেহ ভয়ভীতি দেখায় নি, এ সম্পর্কে আমি কিছুই জানি না। জঙ্গী বাবুল একটা ধুরন্দর ও চাঁদাবাজ প্রকৃতির লোক।
এ ব্যাপারে ঝিকড়া ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল হামিদ ফৌজদারের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ঝিকরা বাজারে জঙ্গী বাবুলকে ভয়ভীতি দেখানোর কোন ঘটনা ঘটেনি। সে ব্ল্যাক মেইল করে চাঁদাবাজীর উদ্দেশ্যে মিথ্যা জিডি করে লোকজনকে হয়রানি করছে। বাবুল রাজশাহীতে লেখাপড়া অবস্থায় একবার অস্ত্রসহ আটকও হয়েছিল। এছাড়াও তার বিরুদ্ধে নাশকতার মামলা রয়েছে। বিগত সময়ে জঙ্গী বাবুল বাংলা ভাইয়ের দলে যোগ দিয়ে এলাকায় ব্যাপক চাঁদাবাজী করার অভিযোগ রয়েছে। সে বিভিন্ন সময় এলাকাবাসীকে ভয়ভীতি দেখিয়ে চাঁদাবাজী করে থাকে।
এ ঘটনায় বাগমারা থানার অফিসার ইনচার্জ আতাউর রহমান জানায়, এ ব্যাপারে থানায় একটি লিখিত অভিযোগ হয়েছে। অভিযোগের সত্যতা যাচাইয়ের জন্য এসআই রইচ উদ্দীনকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।
তদন্ত কর্মকর্তা এসআই রইচ উদ্দীনের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, প্রাথমিক তদন্তে উক্ত ঘটনার কোন সত্যতা পাওয়া যায়নি। অভিযোগে উল্লেখিত ৫জন স্বাক্ষীর মধ্যে কেউ ঘটনা সম্পর্কে কিছু জানেন না।