পদ্মা নদীর তীর ঘেঁষে গড়ে উঠেছে রাজশাহী মহানগর।এখানে প্রায় ৭ লক্ষাধিক মানুষ বসবাস করেন।শিক্ষা নগরী হিসেবে অভিহিত করা হয়ে থাকে এই শহরকে।সম্প্রতি সপ্তাহ খানিক যাবত এই নগরীতে করোনা সংক্রমণ আশঙ্কাজনক হারে বেড়ে চলেছে।
রাজশাহী শহরে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বাড়তে শুরু করলেও মানুষের মধ্যে নেই কোন পরিবর্তন।যা শহরের বাজারগুলোতে গেলেই বোঝা যায়। প্রথম দিকে শুধু বাইরে থেকে আসা মানুষের দেহে করোনাভাইরাসের উপস্থিতি পাওয়া গেলেও এখন শহর ছেড়ে কোথাও যাননি এমন মানুষেরও করোনা শনাক্ত হচ্ছে। কিন্তু মানুষের মাঝে কমছে সচেতনতা। মানা হচ্ছে না সামাজিক দূরত্ব।বরং মনে হতে পারে করোনা মহামারীর কথা মানুষ ভুলে গেছে।
রাজশাহীর সিভিল সার্জন ডা. এনামুল হক শুক্রবার (১৭ জুন) সকালে জানিয়েছেন, নগরীতে এ পর্যন্ত শনাক্ত কোভিড-১৯ রোগীর সংখ্যা ৫৮ জন।
সিভিল সার্জন জানান, গেল ১২ এপ্রিল জেলার পুঠিয়া উপজেলায় প্রথম করোনা রোগী শনাক্ত হন। প্রথম দিকে শুধু রাজশাহীর বাইরে থাকা আসা লোকজনের মধ্যেই করোনার সংক্রমণ ধরা পড়ে। কিন্তু এখন অনেকেই শনাক্ত হচ্ছেন যার কোনো ট্রাভেল হিস্টরি নেই। তারা স্থানীয়ভাবেই আক্রান্ত হচ্ছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
স্থানীয়ভাবেই করোনার সংক্রমণ শুরু হলেও রাজশাহীতে মানুষের মাঝে কমছে সচেতনতা। রাজশাহী মহানগরীতে লোকজন মাস্ক পরলেও অনেকেই নাক-মুখের নিচে নামিয়ে রাখছেন। সামাজিক দূরত্ব দূরে ঠেলে গাদাগাদি করে উঠছেন অটোরিকশায়। গোটা শহরই এখন থাকছে লোকে-লোকারণ্য। আর গ্রামের মোড়ে মোড়ে মানুষের সচেতনতা আরও কম। মাস্ক ছাড়াই ঘুরে বেড়াচ্ছেন অনেকে।
এদিকে করোনার সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়া রোধে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা থেকে ভোর ৬টা পর্যন্ত নগরীতে সব ধরনের যানবাহন চলাচল বন্ধ ঘোষণা করেছে জেলা প্রশাসন। আগে থাকা এ সিদ্ধান্ত বৃহস্পতিবার নতুন করে ঘোষণা করা হয়েছে। মানুষের মাঝে সচেতনতা বৃদ্ধি করতে শুরু হয়েছে জরিমানা করাও।
রাজশাহীর জেলা প্রশাসক মো. হামিদুল হক জানিয়েছেন, মাস্ক না পরাসহ অন্যান্য অপরাধে বৃহস্পতিবার জেলাজুড়ে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালিত হয়েছে। এ সময় ১৬৫টি মামলায় ১ লাখ ২৫ হাজার ৪৫০ টাকা জরিমানা আদায় করা হয়েছে। মানুষের মাঝে সচেতনতা বৃদ্ধিতে বিতরণ করা হয়েছে ৭ হাজার ৫৬০ পিস মাস্ক। সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করতে প্রশাসন চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে বলেও জানান তিনি।