ঢাকা, ৫ বৈশাখ (১৮ এপ্রিল) :
বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলসমূহে অটোমোবাইল শিল্পখাতের যন্ত্রাংশ উৎপাদনে দেশি-বিদেশি বিনিয়োগকারীদের শিল্প-কারখানা স্থাপনে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন। তিনি বলেন, দেশকে উন্নয়নের সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছাতে সরকার শিল্পখাতের বিকাশের জন্য নিরলসভাবে কাজ করছে। দেশে শিল্পায়নের জন্য বিদেশি বিনিয়োগকারীদের সকল প্রকার সহায়তা প্রদান করা হচ্ছে। দেশে উৎপাদিত পণ্যের উৎপাদন এবং রপ্তানি বৃদ্ধির লক্ষ্যে সরকার শিল্পনীতি সহায়তাসহ সকল প্রকার সহযোগিতা অব্যাহত রয়েছে।
ঢাকা চেম্বার অভ্ কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই) আয়োজিত ‘অটোমোবাইল শিল্পের উন্নয়ন: বর্তমান বাস্তবতা ও ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা’ শীর্ষক ওয়েবিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে শিল্পমন্ত্রী আজ এসব কথা বলেন। ডিসিসিআই’র প্রেসিডেন্ট রেজওয়ান রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ইফাদ গ্রুপের উপব্যবস্থাপনা পরিচালক তাসকিন আহমেদ। বাংলাদেশে নিযুক্ত জাপানের রাষ্ট্রদূত ইতো নাওকি (ITO Naoki), যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাসের অর্থনৈতিক ও ইন্দো-প্যাসিফিক বিষয়ক ইউনিটের প্রধান জন ডি. ডানহাম (John D. Dunham), প্রগতি ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক তৌহিদুজ্জামান, উত্তরা গ্রুপের চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক মতিউর রহমান, বারভিডা’র (BARVIDA) প্রেসিডেন্ট আব্দুল হক ও জাইকা প্রতিনিধি হায়াকাওয়া ইউহো (Hayakawa Yuho) বক্তব্য রাখেন।
শিল্পমন্ত্রী বলেন, করোনা মহামামির ধাক্কা বাংলাদেশের অর্থনীতিতে লাগলেও গত বছরে জিডিপি ৫ দশমিক ২৪ শতাংশ ধরে রাখতে সক্ষম হয়েছে। এখন করোনা মহামারির দ্বিতীয় ঢেউ চলছে, দেশে লকডাউনের মধ্যেও প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা মোতাবেক স্বাস্থ্যবিধি মেনে বিশেষ ব্যবস্থায় শিল্প কলকারখানা চালু রাখা হয়েছে। ২০৩০ সালের মধ্যে এসডিজির লক্ষ্যমাত্রায় পৌঁছানো এবং ২০৪১ সালের মধ্যে একটি উন্নত দেশে পরিণত হতে সর্বাক্ষণিক শিল্প কারখানা চালু রাখার কোনো বিকল্প নেই। তিনি বলেন, বাংলাদেশের মানুষের মাথাপিছু আয় বাড়ার সাথে সাথে মানুষের ক্রয়ক্ষমতাও বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলে ব্যক্তিগত যানবাহনের চাহিদা বৃদ্ধির পাশাপাশি আধুনিক সুবিধা সংবলিত যানবাহন ব্যবহারের প্রবণতা বাড়ছে। অটোমোবাইল নির্মাতাদের স্থানীয় উৎপাদনের জন্য শিল্প প্রতিষ্ঠান স্থাপনের আগ্রহ বেড়েছে। এসব কিছু বিবেচনায় রেখে খুব শীঘ্রই অটোমোবাইল শিল্প উন্নয়ন নীতিমালা চূড়ান্ত করা হবে। মন্ত্রী বলেন, গবেষণা ও উদ্ভাবন অটোমোবাইল শিল্পের বিকাশের পাশাপাশি অন্যান্য সহায়তা শিল্পগুলোকে বিশ্বব্যাপী প্রতিযোগিতামূলক বাজারে টিকিয়ে রাখতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে। অটোমোবাইল খাতের সার্বিক উন্নয়নে শিল্প ও শিক্ষাখাতের সমন্বয় খুবই জরুরি বলে শিল্পমন্ত্রী উল্লেখ করেন।
জাপানের রাষ্ট্রদূত ইতো নাওকি বলেন, জাপানে দক্ষ মানবসম্পদ তৈরিতে অটোমোবাইল শিল্প উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করছে এবং বাংলাদেশের সেই উদাহরণ অনুসরণের যথেষ্ট সুযোগ রয়েছে। রাষ্ট্রদূত বলেন, বাংলাদেশের অটোমোবইল খাতের বিকাশকে ত্বরান্তিত করতে হালকা প্রকৌশল শিল্পকে এগিয়ে আসতে হবে।
ওয়েবিনারে ঢাকা চেম্বারের সভাপতি রিজওয়ান রাহমান বলেন, অটোমোবাইল খাতের সম্ভাবনাকে কাজে লাগানোর জন্য শিল্প মন্ত্রণালয় ১০ বছর মেয়াদি ‘বাংলাদেশ অটোমোবাইল সেক্টর রোডম্যাপ ২০২১-২২’ এবং ‘অটোমোবাইল-ম্যানুফেকচারিং ডেভেলপমেন্ট পলিসি’-এর খসড়া প্রস্তুত করেছে, যা দ্রুততম সময়ের মধ্যে চূড়ান্তকরণ করা একান্ত অপরিহার্য।