আলফাডাঙ্গা(ফরিদপুর) প্রতিনিধি
সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা ঘিরে প্রতিমা তৈরির ধুম পড়েছে। কারিগরদের দম ফেলার সুযোগ নেই। কয়েক দিন প্রতিমার গায়ে পড়বে রঙের আঁচড়।
ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গা উপজেলার বিভিন্ন অঞ্চলে মন্দিরের ভেতরে এখন শোভা পাচ্ছে ছোট-বড় প্রতিমা। বাঁশ-কাঠ, খড় আর কাদা মাটি দিয়ে তৈরি প্রতিমাগুলো দেখতে ভিড় জমাচ্ছেন সনাতন ধর্মের লোকজন।
১৮ সেপ্টেম্বর রবিবার দুপুরে ওই মন্দিরে গিয়ে দেখা যায়, প্রতিমা তৈরির কাজে ব্যস্ত মৃৎশিল্পীরা। দীর্ঘ ৩৫ বছর ধরে প্রতিমা তৈরি করে আসছেন সুশীল পাল । তিনি বলেন, আগামী ১ অক্টোবর ভোর পাঁচটায় মহাপঞ্চমী দেবীর বোধনের মধ্য দিয়ে দুর্গোৎসব শুরু। ৫ অক্টোবর পৌর এলাকার বারিশিয়া নদীতে প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে শেষ হবে এই উৎসব।
২ অক্টোবর মহাষষ্ঠী পূজা থেকে মন্ডপে মন্ডপে বেজে উঠবে ঢাকঢোল আর কাঁসার শব্দ।
সুশীল পাল বলেন, প্রায় মাস খানেক আগে থেকে তিনি প্রতিমা তৈরির কাজ শুরু করেছেন। এ পর্যন্ত কয়েকটি প্রতিমা সেট তৈরি করেছেন। প্রতি সেটে দুর্গার সঙ্গে থাকে অসুর, সিংহ, মহিষ, গণেশ, সরস্বতী, কার্তিক ও লক্ষ্মী প্রতিমা।
তিনি বলেন, আগে একটা প্রতিমা সেট তৈরি করতে খরচ হতো ২০ থেকে ৩০ হাজার টাকা। কিন্তু এখন বাঁশ, কাঠ, কাদা মাটিসহ প্রতিমা তৈরির উপকরণের দাম অনেক বেশি। তাই প্রতি সেট প্রতিমা তৈরিতে খরচ হচ্ছে ৪০ থেকে ৫০ হাজার টাকা।
উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি সহঅধ্যাপক প্রবীর কুমার বিশ্বাস বলেন, উপজেলায় বিভিন্ন স্থানে ৪৯ টি মন্ডপে দুর্গাপূজা হয়েছে। ৫ অক্টোবর ভক্তদের উপস্থিতিতে বারাশিয়া নদীতে প্রতিমা বিসর্জন উৎসব হবে। এটিই দেশের সর্ববৃহৎ প্রতিমা বিসর্জন উৎসব। তাই নিরাপত্তার ব্যাপারে পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সহযোগিতা আমরা প্রতিবছরই পেয়ে থাকি।তিনি বলেন,এবার উপজেলার মধ্যে পৌর এলাকায় হরিমন্দিরে আকর্ষণের জন্য ১৫১টি প্রতিমা নির্মাণ করা হয়েছে।
থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ওয়াহিদুজ্জামান বলেন, সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে হিন্দু ধর্মালম্বীদের সর্ববৃহৎ উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা উদযাপনের লক্ষ্যে আমরা ইতিমধ্যে কয়েকটি উদ্যোগ হাতে নিয়েছি। তিনি বলেন,ইতিমধ্্েয পূজা উদযাপন পরিষদের নেতৃবৃন্ধদের সাথে আমাদের সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রয়েছে। কোন অপ্রিতিকর ঘটনা যেন ঘটতে না পারে সেজন্য পুলিশী নিরাপত্তা বৃদ্ধি করা হবে এবং মন্ডপগুলো মনিটরিং করা হবে। আমাদের প্রত্যেক ইউনিয়নের বিট অফিসাররা সার্বক্ষণিক টহলে থাকবেন এবং মন্দির কমিটির লোকজনদেরও যে কোন সমস্যায় যোগাযোগ রাখতে বলা হয়েছে। প্রত্যোকটা মন্ডপে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর যোগাযোগ নাম্বার ঝুলিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
কবীর হোসেন
তাং ১৮.৯.২২